• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জুরাইন-শ্যামপুরের মূর্তিমান আতঙ্ক কচি বাহিনী!


সোনালী বিশেষ আগস্ট ১৫, ২০১৭, ০৫:১২ পিএম
জুরাইন-শ্যামপুরের মূর্তিমান আতঙ্ক কচি বাহিনী!

ঢাকা : ডাকাত শহীদের এলাকায় নিয়ন্ত্রন করছে শীর্ষ সন্ত্রাসী কচি। মাসুদ, মুহিত, চিশতী, পেটকাটা রনি, শান্ত ও জাহাঙ্গীরসহ শতাধিক সদস্য দিয়ে গড়ে উঠেছে কচি বাহিনী। এলাকায় কেউ চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস নেই। এক সময় এই কচি ছিল পুরান ঢাকার আরেক মূর্তিমান আতংক ডাকাত শহীদের প্রধান সহযোগী।

২০১২ সালের ৪ জুলাই লক্ষ্মীবাজার এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ডাকাত শহীদ নিহত হওয়ার পর পুরান ঢাকার একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রনে চলে আসে কবিচ বাহিনীর হাতে। শনিবার রাতে পোস্তগোলা নগর স্বাস্থ্য গলিতে ডিবির এসি রাহুল পাটোয়ারীর ওপর গুলি করে এই কচি বাহিনী।

যদিও পুলিশের খাতায় এই সাইফুল ইসলাম কচি পলাতক। এরপরও এলাকাবাসী বলছেন, শ্যামপুর, জুরাইন ও পোস্তগোলার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রন করে কচি। শনিবার রাতের ঘটনার পর কচি বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের সদস্যরা আত্মগোপনে করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কচি বাহিনীর প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ ও চিশতী। ফরিদাবাদ, গেন্ডারিয়া, বাহাদুরপুর লেন, পোস্তগোলা শম্মানঘাট আয়রণ মার্কেট, ঢালকানগর লেন, ফায়ার সার্ভিসের গলি, পোস্তগোলা নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র গলি, নওজোয়ান ক্লাব ও জুরাইন মার্কেট এলাকা এই গ্রুপের নিয়ন্ত্রনে। পোস্তগোলা শম্মান ঘাট পশুর হাটও তাদের নিয়ন্ত্রনে। প্রতি বছর কোরবানির পশুরহাটকে কেন্দ্র করে প্রায় ২ কোটি টাকা ভাগবাটোয়ারা হয় এই বাহিনীর মধ্যে।

জুরাইন মার্কেট কচি বাহিনীর মাসুদের নিয়ন্ত্রনে। আগে রহিম হাজীর নিয়ন্ত্রনে ছিল এই মার্কেট। এই মার্কেট থেকে মাসে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হয়। মার্কেটের চাঁদাবাজির প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করতে পারে না। এই মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমাদের করার কিছুই নেই। এই চাঁদা না দিলে ব্যবসাও করা যাবে না।’

কচি বাহিনী আন্ডারওয়ার্ল্ডে অস্ত্র ও গুলি বিক্রি করে। পুরান ঢাকার যে কোন সন্ত্রাসী গ্রুপ কচি বাহিনীর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ভাড়া নেয়। এই গ্রুপটি নাইন এমএম পিস্তল ও টুটু বোরের রিভলবারের গুলি বিক্রি করে। এদের কাছ অস্ত্র ও গুলি কেনার জন্য সোর্সের মাধ্যমে ছদ্মবেশে ঘটনার দিন শনিবার (১২ আগস্ট) রাতে ডিবির এসি রাহুল পাটোয়ারীর নেতৃত্বে যায়।

অস্ত্র কিনতে আসা ব্যক্তিরা যে পুলিশের সদস্য, তা সন্ত্রাসীরা টের পেয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগে অন্ধকারের মধ্যে সন্ত্রাসীরা ডিবি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ পুলিশের সোর্সের নাম মৃদুল বলা হলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম সোহেল। এক সময় সোহেল কচি বাহিনীর সদস্য ছিল। সোহেলের চাচা এলাকায় যুবলীগ নেতা।

শ্যামপুর-জুরাইন এলাকার মাদকের সবচেয়ে বড় স্পট হলো আর্সিন গেট। মাদক স্পটগুলোর মাসের চাঁদা চিশতী ও জাহাঙ্গীরের কাছে পৌঁছে যায়।  মাদকের স্পটগুলো থেকে প্রতি মাসে অর্ধ কোটি টাকা চাঁদাবাজি হয়। চাঁদার এই টাকা বিভিন্ন স্তরে ভাগ বাটোয়ারা করেন।

শনিবার (১২ আগস্ট) পোস্তগোলা নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গলিতে গুলির ঘটনায় ররিবার ডিবির এসআই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে শ্যামপুর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় পেটকাটা কচি ও শান্তসহ অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামী করা হয়েছে।

এদিকে, পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, এসি (সহকারী কমিশনার) রাহুল পাটোয়ারীর ওপর যারা গুলি করেছে, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুলিশের ওপর হামলাকারীকে গ্রেফতারে আমরা বদ্ধপরিকর। গুলিবিদ্ধ রাহুল পাটোয়ারীকে দেখতে সোমবার (১৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আসেন আইজিপি। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!