• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
কমেছে গদ্য-কবিতা

জেএসসির নতুন সিলেবাস নিয়েও ধূম্রজাল


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৬, ২০১৮, ০৪:১১ পিএম
জেএসসির নতুন সিলেবাস নিয়েও ধূম্রজাল

ঢাকা : জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেটের (জেএসসি) বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের নতুন সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে বাংলায় গদ্য-কবিতা, ব্যাকরণ, সহপাঠ পাঠ কমানো হয়েছে। ইংরেজিতে তিনটি ইউনিটসহ ৩৩ শতাংশ কমানো হয়েছে। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র একসঙ্গে বজায় রাখা এবং নম্বর বণ্টন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধূম্রজালের।

ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নতুন সিলেবাস ও নম্বর বিভাজন করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে তা কার্যকর করা হবে।

ঐচ্ছিক ক্লাস মূল্যায়নের বিষয়ে বোর্ড চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্লাসের মাধ্যমে ঐচ্ছিক বিষয় মূল্যায়ন করলে শিক্ষার্থীদের চাপ অনেক কমে যাবে। ক্লাসে তারা ইচ্ছামতো শেখার সুযোগ পাবে। ঐচ্ছিক বিষয় ক্লাসে মূল্যায়নের পর তা নিজ নিজ শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হবে। সেসব নম্বর শিক্ষার্থীদের ট্রান্সক্রিপ্টে তুলে দেওয়া হবে।’

তবে হবিগঞ্জের বাহুবলের মিরপুর ফয়জুননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জেএসসি পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে শুরু হয়েছে ধূম্রজাল। বাংলা ও ইংরেজি- এই দুই বিষয় থেকে দ্বিতীয় পত্র উঠিয়ে দেওয়া হলো, সেটা ভালো কথা। কিন্তু সেই দ্বিতীয় পত্র আবার জুড়ে দেওয়া হয়েছে প্রথমপত্রের সঙ্গে। তাহলে এই ছেলেমেয়েদের ভাগ্যে কী জুটল?’

তিনি আরো বলেন, ‘আগে প্রথম পত্র ও দ্বিতীয় পত্র দুদিনে পরীক্ষা হতো। এখন এটি হবে এক দিনে, তাহলে এটি গোদের উপর বিষফোঁড়া নয় কি?
কৃষিশিক্ষা, শারীরিক শিক্ষা, কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা- এ বিষয়গুলোর কোনো পরীক্ষা নেবে না শিক্ষা বোর্ড। এ বিষয়গুলো অভ্যন্তরীণভাবে মূল্যায়ন করে নম্বর পাঠাতে হবে বোর্ডে। ফলাফল শিটে এ নম্বরগুলো থাকবে, কিন্তু ফলাফল নির্ধারণে এগুলোর কোনো প্রভাব থাকবে না। ফলাফল নির্ধারণে প্রয়োগ না হলে এ বিষয়গুলো রেখে দেওয়ার কী যুক্তি?’

এই শিক্ষক বলেন, ‘গত বছর যারা ফেল করেছে কিংবা পরীক্ষা দেয়নি, তাদের বাংলা ও ইংরেজিতে দুটি করে বিষয়ই থাকবে এবং তাদের কৃষিশিক্ষা বিষয়টির পরীক্ষা শিক্ষা বোর্ড নেবে। বাচ্চাদের সঙ্গে এই দ্বিমুখী আচরণ কেন? সিলেবাসের এত ঘনঘন পরিবর্তন করে পড়াশোনার আদৌ কোনো মানোন্নয়ন হবে কি?’ নতুন সিলেবাসে দেখা গেছে, মুস্তাফা মনোয়ারের লেখা শিল্পকলার নানা দিক গদ্য বাদ দেওয়া হয়েছে।

কবিতা থেকে সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘প্রার্থী’, বুদ্ধদেব বসুর ‘নদীর স্বপ্ন’ এবং সুফিয়া কামালের লেখা ‘জাগো তবে অরণ্য কন্যারা’ বাদ দেওয়া হয়েছে। ব্যাকরণ থেকে বহুবচন গঠনের নিয়ম ও উদাহরণ, শ্রেণি বিভাজন, নির্দেশক, সর্বনামের দিক, শব্দ গঠনের প্রাথমিক ধারণা, অভিধান, ভক্তি, সকর্মক ও অকর্মক ক্রিয়া, ক্রিয়ার কাল, নিসর্গকরণ, একই শব্দ বিভিন্ন অর্থে প্রয়োগ করে ব্যাখ্যা ও বচনা, বাক্য রচনা, নির্মিত অর্থ, অনুচ্ছেদ, অনুধাবনসহ সহপাঠ বিষয়গুলো বাদ পড়েছে।

অন্যদিকে, ইংরেজি বিষয়ে ‘ইংলিশ ফর টুডে’ বইয়ের ইউনিট ৩, ৪ ও ৮ বাদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে গ্রামার এবং কমপজিশন, ডিগ্রি অব কমপেনসেশন, গ্রাউন্ড এবং পার্টিসিপল, সামারি রাইটিং নতুন সিলেবাসে বাদ দেওয়া হয়েছে। জেএসসিতে সিলেবাস প্রণয়ন হলেও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেটের (জেডিসি) নতুন সিলেবাস ও মানবণ্টন তৈরির কাজ এখনো শেষ হয়নি।

এ বিষয়ে মাদসারা বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক সিব্বির আহমেদ বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নতুন সিলেবাস ও নম্বর বিভাজনের বিষয়ে চূড়ান্ত হবে। গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এনসিসিসির সভায় আগামী জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকে নম্বর ও বিষয় কমানোর সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত হয়। এরপর পরীক্ষার মানবণ্টনে এনসিটিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!