• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেনে নিন গরমে ওজন কমানোর উপায়


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৫, ২০১৬, ০৫:৫১ পিএম
জেনে নিন গরমে ওজন কমানোর উপায়

সোনালীনিউজ ডেস্ক

গরমকালটা ওজন কমানোর জন্য অত্যন্ত সহায়ক। কেন? কারণ শীতের সময়ে শরীরকে উষ্ণ রাখতে বাড়তি ক্যালোরিযুক্ত খাবারের দরকার পরে। কিন্তু গরমকালে সেই প্রয়োজনটা নেই।

তাই কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়া যায় অনায়াসে আর তাতে শরীরও সুস্থ থাকে। বাড়তি ক্যালোরি যুক্ত খাবার মানেই যে বাড়তি ফ্যাট আর বাড়তি ওজন, সেটা নিশ্চয়ই বলে দেয়ার অপেক্ষা রাখে না।

ওজন কমানো মানেই দিনরাত ডায়েট করা আর নিজেকে অভুক্ত রাখা, তাই না? আপনার এই ধারনা শতভাগ ভুল প্রমাণ করতেই রইলো আজকের এই পরামর্শ। মৌসুমের সাথে সাথে আমাদের খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আসবে সেটাই স্বাভাবিক।

বিশেষ করে গরমের সময়ে হতে হয় আরও অনেক বেশি সচেতন। কেননা একটু এলোমেলো খাদ্যাভ্যাসই ডেকে নিয়ে আসে অসুস্থতা। আবার দেখা যায় কেবল গরম বলেই খাদ্যতালিকায় যোগ হয়ে যায় অনেক বাড়তি খাবার।

আসুন, জেনে নেয়া যাক এমন কয়েকটি উপায় যাতে কিনা আহামরি ডায়েট না করেও কমবে ওজন। আবার সাথে গ্রীষ্মের সকল খাবার উপভোগের পাশাপাশি শরীরও থাকবে সুস্থ। আর মাস শেষে নয়, সপ্তাহ শেষেই দেখতে পাবেন যে কমেছে ওজন।

১) কোমল পানীয়কে না-
গরম কাল মানেই ঠাণ্ডা পানীয়ের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ। গরম থাকে মুক্তি পেতে এর বিকল্প কি আছে? একেবারেই নেই। ঠাণ্ডা পানীয় অবশ্যই খান, তবে কোমল পানীয় নয়। আপনার কোক, পেপসি, সেভেন আপ বা কেনা ফ্রুট জুসের বদলে খান ডাবের পানি, লেবুর রস বা ঘরে তৈরি ফলের রস।

এই প্রাকৃতিক পানীয়তে আছে প্রচুর পটাসিয়াম সহ আরও নানান রকম খনিজ উপাদান। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট কমে গিয়ে মাথা ঘোরা, বমি ভাব সহ আরও নানান সমস্যা থেকে রক্ষা করবে এই খনিজ উপাদান।

২) দিনে একবেলা চলুক ফল –
যে কোনও এক বেলার নিয়মিত খাবারকে প্রতিস্থাপন করুন ফল দিয়ে। তবে সকালের নয়। লাঞ্চ, ডিনার বা বিকালের নাস্তার বদলে খান ফল বা ফলের সালাদ। বিকালের নাস্তার বদলে গেলে সবচাইতে ভালো। কেননা তাতে ভাজাভুজি কম খাওয়া হবে। অর্থাৎ কম ক্যালোরির সাথে সাথে হজমের সমস্যাও থাকবে দূরে।

৩) মাছ খান সপ্তাহে অন্তত ৫দিন-
মাংস খেতে কে না ভালোবাসি? আর শীতের দিনে এই মাংসটাই বেশি খাওয়া হয়। গরমের সময়ে মাংসের বদলে মাছ দিয়ে ভাত খাওয়া অভ্যাস করুন। তাতে একদিকে কেমন কম ক্যালোরি গ্রহণ করা হবে, অন্যদিকে হজমের গোলমাল হবার সম্ভাবনাও কমে যাবে।

৪) ১ কাপ শসা দিনে দুই বেলা-
দুপুরে আর রাতে অবশ্যই এক কাপ করে শসার সালাদ খান আপনার নিয়মিত খাবারের সাথে। অন্যান্য খাবারের কোনও বাধ্যবাধকতা নেই, যা ইচ্ছা খেতে পারেন। তবে সাথে এক কাপ শসাকে ভুলবেন না। যাদের শসায় গ্যাসের সমস্যা হয়, তাঁরা টমেটো-গাজর-বিট-কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি যে কোনটি বেছে নিতে পারেন।

৫) খান পরোটা- রুটি- পাউরুটি-
অনেকেই আছেন যারা রাতে ভাত না খেয়ে রুটি বা পরোটা বা পাউরুটি খেয়ে থাকেন। আর সকালে তো এসব চলেই। এগুলো খেতে একদম মানা করছি না, তবে একটা ছোট্টও উপায় পালন করতে বলবো।

পরোটা তেল বা ঘিয়ে না ভেজে তাওয়ায় শুকনো করে সেকে নিন রুটির মতন, ক্যালোরি কমে অর্ধেক হয়ে যাবে। ময়দার রুটি না খেয়ে আটার রুটি খান, সম্ভব হলে লাল আটা। আর মাখন বা জেলি দিয়ে ব্রেড না খেয়ে, ভাজি বা দুধ দিয়ে খান।

এত সামান্য একটা ব্যাপার, কিন্তু কত ক্যালোরি যে বাঁচবে কল্পনাই করতে পারবেন না।

৬) যখন খাবেন আম দুধ-
দুধের সাথে আম খেতে মানা করবো? তাও এই মৌসুমে? কক্ষনো না ! তবে হ্যাঁ, যখন আম দিয়ে দুধ ভাত খাবেন, তখন চিনিকে পরিহার করুন। আম তো এমনিতেই মিষ্টি, চিনি দেবার দরকার কি? তাছাড়া দুধটাও প্রাকৃতিক ভাবে অনেকটাই মিষ্টি হয়ে থাকে।

আম এবং দুধের প্রাকৃতিক মিষ্টি স্বাদ আরও একটু বাড়াতে এক চিমটি লবণ দিয়ে দিন। স্বাদ এবং মিষ্টি ২টাই বহুগুণ বেড়ে যাবে।

৭) ডিম খান, অসুবিধা নেই-
ডায়েট করলে ডিম খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে, এটা কোনও কথা হলো? বরং সকালে ডিম খাওয়া ওজন কমাতে সহায়ক। তবে এই গরমে ডিম পোঁচ বা ভাজি না খেয়ে খান সিদ্ধ ডিম। কেন? কারণ তাতে তেল কম খাওয়া হবে, অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর হবে খাওয়া।

এছাড়াও একটি ডিম সিদ্ধতে আছে ৭৫-৮০ কিলো ক্যালোরি। কিন্তু একটি ডিম ভাজিতে থাকে ৯২-১৭৫ কিলো ক্যালোরি, এবং একটি ডিম পোঁচ বহন করে ২০২ কিলো ক্যালোরি। এখন নিজেই ভেবে দেখুন তো, কোনটা বেশি ভালো?

৮) রাতের বেলা সবজির তরকারি-
মাছ মাংস ডিম যেটাই খাওয়া হোক না কেন, সেটা রাতের বেলা খাওয়া বাদ দিন গরমের দিনে। ভাত রুটি যাই খাওয়া হোক না কেন, সাথে নিন সবজি ও ডাল। নানান রকম সবজি উঠেছে বাজারে। ভর্তা, ভাজি, ঘণ্ট, তরকারি কত রূপেই না খাওয়া যায়।

তবে আলুকে কম খান। খেতে হলে ভাজি না খেয়ে ভর্তা খান অবশ্যই।

৯) খান লেবু চা-
চা কফি ছাড়া এক দণ্ড চলে নাকি? তবে যাদের বারবার যা খাওয়ার অভ্যাস, এই গরমে তাঁরা দুধ চা বাদ দিয়ে লেবু চা খাওয়ার অভ্যাস করুন। গরমে লেবু চা আপনাকে সতেজ থাকতে সাহায্য করবে তো অবশ্যই, সাথে দুধ না খাবার ফলে ক্যালোরিরও কম গ্রহণ করা হবে।

লেবু চায়ে চিনিও লাগে কম। যারা দিনে ২/১ বার চা খান, তাদের দুধটা চলতে পারে। তবে কনডেনসড মিল্ক বাদ দিয়ে গরুর দুধ খান, নিদেন পক্ষে গুঁড়া দুধ। কফিতে ক্রিম খাওয়াটা ছেড়ে দিন।

১০) পানি পানি পানি-
গরমে পানি তো খেতেই হবে, সে আর নতুন কি? আপনি আপনি সারাদিন খেয়ে থাকেন সত্যি, তবে ওজন কমানোর জন্য খাবেন একটু বুদ্ধি করে। প্রতিবেলায় খাওয়ার ৫/৭ মিনিট আগে এক গ্লাস বরফ শীতল পানি পান করুন।

এতে একদিকে পেটটা বেশ ভরা ভরা লাগবে, অল্প খাবার খেয়েই তৃপ্তি চলে আসবে শরীর ও মনে। অন্যদিকে এক গ্লাস বরফ শীতল পানিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আনতে শরীরের খরচ হয় প্রায় ১৭,৫০৮ ক্যালোরি, অর্থাৎ ১৭.৫ কিলো ক্যালোরি।

অর্থাৎ পানিটা যদি বরফ শীতল খান, তাহলে কিছু বাড়তি ক্যালোরি অবশ্যই পুড়ছে। দিনে ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি খাবার কথা বলা হয়। এখন নিজেই হিসাব করে দেখুন যে কতটা ক্যালোরি পোড়ানো গেলো কেবল পানি পান করে!

উল্লেখ্য যে, ১ কিলো ক্যালোরি = ১০০০ ক্যালোরি আর আমাদের দৈনিক চাহিদা ২২০০ থেকে ২৫০০ ক্যালোরি। তবে কাজের ধরন, বয়স ও নারী পুরুষ ভেদে তা কমবেশি হয়ে থাকে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!