• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জ্বলছে দার্জিলিং: পাহাড়ের আন্দোলন নেমেছে সমতলে


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুন ১৬, ২০১৭, ০৭:৩৪ পিএম
জ্বলছে দার্জিলিং: পাহাড়ের আন্দোলন নেমেছে সমতলে

ঢাকা: পুরো দার্জিলিং এখন পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে। অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। জ্বলছে সরকারি অফিস। আন্দোলনকারীরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত হরতাল চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিলেও আদালত তা বেআইনি বলে রায় দিয়েছে। অপরদিকে জ্বালাও-পোড়াওর অভিযোগে পুলিশ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

শুক্রবার(১৬ জুন) নতুন করে লাগাতার ধর্মঘটের প্রথম দিন থেকে উত্তপ্ত সমতল অঞ্চল মিরিক। সেখানে পোড়ানো হয়েছে পঞ্চায়েত অফিস এবং একটি পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র। অশান্ত পাহারের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছে সমতলেও। পাহাড়ের কালিম্পং এবং দার্জিলিংয়ের বেশ কিছু জায়গাতেও আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র গোর্খল্যান্ড করার দাবি করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ের স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষা শিক্ষা ঔচ্ছিক বিষয় করায় এ দাবি নতুন রূপ নিলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তা কঠোর হস্তে দমন করার ঘোষণা দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকার আরো সেনা সদস্য পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছেও অনুরোধ করেছে ত্রি-পক্ষীয় অর্থ্যাৎ কেন্দ্র সরকার, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মধ্য আলোচনা করে পরিস্থিতির উন্নতি করতে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে বলেছে, গোর্খাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়।

অপরদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় নতুন করে আরো বেশি সংখ্যক আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে পার্বত্য অঞ্চলে টহল দিচ্ছে ১৪ কোম্পানি আধাসেনা। সেনাবাহিনীও রয়েছে সেখানে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সদস্যদের দখল ছিল বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এর মধ্যে পাতলেবাস ও শিংমারি এলাকায় সেনা টহলের মধ্যেই সেখানে গোর্খা নারী মোর্চার নেতৃত্বে দফায় দফায় মিছিল ও বিক্ষোভ চলে। মিছিলকারীরা দার্জিলিংকে নিয়ে তাদের জন্যে আলাদা রাজ্য গোর্খাল্যান্ড এবং নেপালি ভাষার দাবিতে স্লোগানও দেন।

গোর্খাল্যান্ডের এক দাবিতে চলমান আন্দোলনের বাধা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে মোর্চার সভাপতি বিমল গুড়ং তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বিমলের ভাষায়, ‘বিস্ফোরক উদ্ধারের মিথ্যা নাটক রচনাকারী সরকারের বিরুদ্ধে মোর্চা এবং বিরোধী দলগুলোকে উচিৎ জবাব দেয়া হবে।’

অপরদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাও কলকাতা পুলিশের এক অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) কড়া ভাষায় পার্বত্য অঞ্চলে অশান্তি সৃষ্টিকারী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের ঘোষণা দেন। তিনি পাহাড়বাসীদের এই অশান্তি থেকে মুক্তি পেতে আন্দোলনকারীদের প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানান।

পশ্চিমবঙ্গ ভেঙে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে গত ১২ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত সরকারি অফিসে হরতালের কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল আন্দোলনকারী গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। কিন্তু, প্রথমদিন থেকেই সেখান অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। পোড়ানো হয় পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের গাড়ি, সরকারি অফিস এবং দোকনপাটও।

পার্বত্য অঞ্চলে চলমান আন্দোলনের মুখে সেখানে পর্যটন ব্যবসা কার্যত ভেঙে পড়েছে। যারা সেখানে আটকে পড়েছেন তারা সরকারি বিশেষ ব্যবস্থায় পাহাড় থেকে সমতলে ফিরছেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/আতা

Wordbridge School
Link copied!