• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

‘জ্বালানি তেল নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কথা বিবেচ্য নয়’


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২১, ২০১৭, ০৭:০৩ পিএম
‘জ্বালানি তেল নিয়ে অর্থমন্ত্রীর কথা বিবেচ্য নয়’

ঢাকা : বিশ্ববাজরে জ্বালানী তেলের দাম কমলেও বাংলাদেশে কমছে না। কয়েকদিন আগে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ফের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী। একইদিনে বিকেলে দলে ও সরকারে প্রভাবশালী অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান বলেছিলেন, তেলের দাম কমানো নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।

কিন্তু সেই কথার প্রসঙ্গে শনিবার(২১ জানুয়ারি) জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়ে প্রস্তাব অর্থমন্ত্রীকে না দিয়ে দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। ফলে অর্থমন্ত্রী কী বলেছেন, সেটা বিবেচ্য নয়।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে(ডিআরইউ) ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন নসরুল হামিদ। মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে নিয়মিত মিট দ্য প্রেসের আয়োজন করে সাংবাদিকদের সংগঠন ডিআরইউ। এখানে আগত অতিথিদের সঙ্গে শুধু সাংবাদিকরাই কথা বলেন। দেশ, জাতি, সরকার ও সমসাময়ীক বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। আজকের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন জ্বালানী, বিদ্যুৎ ও খণিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। আরইউ’র সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটার প্রতি তিন টাকা এবং অকটেন ও পেট্রোলের দাম ১০ টাকা করে কমানো হয়। গত অক্টোবরে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী জানান, আরেক দফা কমবে দাম। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নভেম্বরে জানান, ডিসেম্বরেই কমছে দাম। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক হবে। তবে সেই বৈঠক হয়নি ওই মাসে। ডিসেম্বরের শেষদিকে অর্থমন্ত্রী আবার বলেন, এই বৈঠক হবে জানুয়ারিতে।

তবে গত ১৮ জানুয়ারি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সচিবালয়ে এক অনুষ্ঠানে জানিয়ে দেন, তেলের দাম কমানোর প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে এখন তেলের দাম বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দাম কমানো হচ্ছে না।

একই দিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আই অ্যাম নট শিওর অ্যাবাউট ইট।…হয়নি ফাইনাল কিছুই। কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।…আন্তর্জাতিক বাজারে যে দামটা আছে, সেটা তো কম। আমাদের দাম তার চেয়ে বেশি।’

একই দিন দুই মন্ত্রীর দুই ধরনের বক্তব্যের কোনো ব্যাখ্যা সরকারের কাছ থেকে আসেনি। তাহলে কার বক্তব্য সঠিক বলে ধরে নেবো- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তার কথাই ঠিক। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর বিষয়ে আমরা প্রস্তাব করেছিলাম প্রধানমন্ত্রীর কাছে। বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ার কারণে সেই প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। ফলে এখনই জ্বালানি তেলের দাম কমানো সম্ভব নয়।

তাহলে অর্থমন্ত্রী কেন এ কথা বলেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেন, কে-কী বলল, সেটি বড় কথা নয়। আমি প্রস্তাব পাঠিয়েছি আমার মন্ত্রীর কাছে। আমি তো আর অন্য কারো কাছে পাঠাইনি। সুতরাং কে কী বললে সেটি তার বিষয়। আমি আমার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের কথা বলছি। আমার মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত হচ্ছে- এই মুহূর্তে জ্বালানি তেলের দাম অ্যাডজাস্টমেন্ট করা সম্ভব না।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের কোনো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী না থাকলে, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে থাকে সেই মন্ত্রণালয়। বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে কোনো পূণার্ঙ্গ মন্ত্রী নেই। নসরুল হামিদ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সেজন্য মন্ত্রণালয়ের সকল সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেই নিতে হয়।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে তেলের দাম কমানো নিয়ে কোনো বৈঠক হয়নি। কারণ আমি প্রস্তাব করেছি আমার মন্ত্রীর কাছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি।

নসরুল হামিদ বলেন, অনেকেই ডিজেলের দাম কমিয়ে দেয়ার কথা বলছেন। আমরা কিন্তু এই ক্ষেত্রে কৃষককে ভর্তুকি দেই। অকটেন এবং পেট্রোল এর দাম কমিয়ে আনতে চেয়েছিলাম। কারণ আমরা প্রাইভেট কারে সিএনজিকে নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছি। আমরা চাচ্ছি পাবলিক বাসে(গণপরিবহনে) সিএনজির ব্যবহার থাকতে পারে। প্রাইভেট কার যেন নিরুৎসাহিত হয়। এসব কারণে পেট্রোল এবং অকটনের দাম কমিয়ে আনতে চেয়েছিলাম। এসব বিষয় মাথায় রেখেই প্রস্তাব তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের সেই প্রস্তাব ধোপে টেকেনি। আমাদের আগের জায়গায় ফিরে যেতে হয়েছে।

এলপিজির দাম ও রিটেস্টিং নিয়ে নীতিমালা হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এলপিজির দাম নির্ধারণ নিয়ে নীতিমালা হবে। আগামী মাসে এ নিয়ে পরিপত্র জারি হবে। আর রিটেস্টিং নিয়ে এক বছরের মধ্যে নীতিমালা হবে।

সোনালীনিউজ/আতা
 
 

Wordbridge School
Link copied!