• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝালকাঠি জেলা কমান্ডার বায়েজিদের বিরুদ্ধে অনাস্থা


নিজস্ব প্রতিবেদক জানুয়ারি ২০, ২০১৭, ০৬:৩৫ পিএম
ঝালকাঠি জেলা কমান্ডার বায়েজিদের বিরুদ্ধে অনাস্থা

ঝালকাঠি : বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ঝালকাঠি জেলা ইউনিটের কমান্ডার এম এ বায়েজিতের বিরুদ্ধে পাহাড়সম অভিযোগের ভিত্তিতে কমান্ডের ১৬ সদস্যের এক তলবী সভা ডেকে অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। গত ১৫ জানুয়ারি জেলা ইউনিট কমান্ড কার্যালয়ে এ তলবি সভার সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবরে প্রেরণ করেছেন। জেলা ইউনিটের কমান্ডাররা প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র লংঘন, স্বেচ্ছাচারীতা, প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে নিজের অনুগতদের সদস্যকরণ, আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড গঠন ও ১ লাখ টাকার দেয়ার চুক্তিতে ১০ হাজার টাকা নিয়ে একজনকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভূক্তকরণসহ জেলা ইউনিটের কমান্ডার এম এ বায়েজিতের বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

সহকারী কমান্ডার শাহ্জাহান হাওলাদার সভায় উল্লেখ করেন, আমাদের মতামত না নিয়ে লাভবান হয়ে জেলা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড গঠন করেন। আমাদের উপর তার আস্থা না থাকায় আমরা তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনতে বাধ্য হয়েছি। অপর ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা সভায় জানান, গাভারামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম আলী পূর্বের তালিকাভূক্ত হতে না পারায় জেলা কমান্ডার বায়েজিদ তার কাছ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির আশ্বাস দিয়েছেন বলে মোসলেম আলী অভিযোগ করেছেন। ডেপুটি কমান্ডার মোতালেব আলাউদ্দিন, মো. মহসিন, নারায়ন চন্দ্র কান্তিলাল ও সদস্য সামশুল হক আক্কাস বলেন, জেলা ইউনিট কমান্ড নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে কমান্ডার এম এ বায়েজিত জেলা ইউনিটকে নিজের ইচ্ছামাফিক ও খেয়ালখুশি মতো পরিচালনা করছে যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

এছাড়াও দুলাল সাহা আরও উল্লেখ করেন, জেলা কমান্ডার স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্যের শুরুতে এবং শেষে মুক্তিযুদ্ধের শ্লোগান জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু উচ্চারণ করেন না। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গঠনতন্ত্রের ১৬ ধারার ছ উপধারার ক থেকে চ অনুযায়ী এই অনাস্থা প্রস্তাব নেয়া হয়েছে। অনাস্থা প্রস্তাব নেয়ার বিষয়ে শিল্পমন্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী ও সচিব, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক, ঝালকাঠি জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ ব্যাপারে জেলা কমান্ডার বায়েজিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঝালকাঠি জেলা ইউনিটের কমান্ড প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে তাদের সদস্য তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত না করায় ডেপুটি কমান্ডাররা ক্ষিপ্ত হয়ে এ তলবি সভা ডেকেছে। কিন্তু যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রতি উপজেলায় ৭ জন সদস্য থাকবে তার মধ্যে সভাপতি একজন, কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের প্রতিনিধি একজন, জেলা কমান্ড বা তার প্রতিনিধি একজন, প্রতিটি উপজেলা কমান্ডার একজন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি একজন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের প্রতিনিধি একজন ও প্রতিটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার অন্তর্ভূক্ত। তাই শিল্পমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ও বিধিমোতাবেক প্রতি উপজেলায় ৭ সদস্যবিশিষ্ট যাচাই-বাছাই কমিটি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় যাতে এ কমিটি অনুমোদন না করে সেই উদ্দেশে ১৫ জানুয়ারি ক্ষুব্ধ হয়ে সহযোদ্ধারা সভা করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবরে অনাস্থা প্রস্তাব পাঠায় ও ঝালকাঠির অভিভাবক শিল্পমন্ত্রী আলহাজ আমির হোসেন আমুকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করেন। তবে আমি শিল্পমন্ত্রীর সাথে দেখা করে বিষয়টি বিস্তারিত জানালে তার কাছে বিষয়টি পরিস্কার হয়। গত ১৮ জানুয়ারি ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি অনুমোদন করেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!