• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারশালা, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি


জাহাঙ্গীর আলম, নোয়াখালী আগস্ট ১৭, ২০১৮, ০৮:৫৯ পিএম
টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারশালা, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

নোয়াখালী : মুসলিম সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা। আর এই দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ব্যস্ততা বাড়ছে কামারশালার কারিগরদের। আগুনের ফুলকিতে গরম লোহায় দিন রাত হাতুড়ির পিটুনির টুংটাং শব্দে মুখরিত এখন কামার শালা।

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে নোয়াখালীর ৯টি উপজেলার হাট বাজারের কামারদের দম ফেলার সময় নেই। দা, বঁটি, চাকু, চাপাতি, কুড়ালসহ লোহার যন্ত্র তৈরির কারিগরদের। পশু কোরবানির মধ্যদিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

আর কোরবানির এসব পশু কাটাকাটিতে চাই ধারালো দা, বঁটি ও ছুরি। ঈদকে কেন্দ্র করে সেনবাগ উপজেলার কামার দোকান গুলো এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়লার চুলোয় দগদগে আগুনের ফুলকি আর গরম লোহায় ওস্তাত-সাগরেদের ছন্দময় পিটাপিটিতে মুখর হয়ে উঠেছে কামার শালা গুলো। দিন শেষে রাতেও বিরাম নেই এসব কারিগরদের।

দিন রাত বিরামহীন পরিশ্রম করে কারিগররা তৈরী করছে দা, বঁটি, চাকু, ছুরি, চাপাতি ও কুড়াল। অধিকাংশ দোকানীই তাদের নিজেদের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করছেন। আবার কোরবানীর পশুর চামড়া ছেঁড়ার কাজটি সহজ ও স্বাচ্ছন্দের সহিত সম্পন্ন করতে অনেকে পুরাতনগুলোকে সংস্কারের জন্য নিয়ে আসছেন কর্মকারদের কাছে।   

মৌসুমে কিছু মৌসুমী ব্যবসায়ী রয়েছে যারা শুধু ঈদের সময় এ ব্যবসা করে থাকেন। পশু জবাই থেকে শুরু করে রান্নার জন্য চুড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্তু দা, বঁটি, চাকু, ছুরি, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার প্রয়োজন হয়। আর তাই ঈদের বিপুল চাহিদার জোগান দিতে এক মাস আগে থেকেই এসব যন্ত্রপাতি তৈরির কাজ শুরু হলেও,শেষ মুহূর্তে এসে কাজের চাপ বেড়ে যাওয়ায় দিন-রাত সমান তালে কাজ করতে হচ্ছে।

দীর্ঘ দিন থেকে লোহার যন্ত্রপাতি তৈরি করছেন উপজেলা কাবিলপুর ইউনিয়নের ছমির মুন্সিরহাট বাজারের তোফায়েল ও লেবু । এই নিয়ে কথা হলে তিনি কে জানায়, পূর্ব পুরুষের পেশা হিসেবে তিনিও যুক্ত হন এ পেশায়। ঈদকে সামনে রেখে প্রতিদিন যন্ত্রপাতি বিক্রি হচ্ছে। তাইতো অন্যান্য সময়ের তুলনাই ঈদ-উল-আযহার এ সময়ে কর্মব্যস্ততাও অনেকাংশে বেড়ে যায়। কারণ এ সময় দা, বঁটি, চাকু, ছুরি, চাপাতিসহ লোহার যন্ত্রপাতির চাহিদা দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

এদিকে কাজের চাপ বৃদ্ধি সঠিক সময়ে কাজের ডেলিভারি দেয়া যাচ্ছেনা। এছাড়া এ শিল্পে ব্যবহৃত কয়লাসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে,কিন্ত সে অনুযায়ী বাড়েনি তাদের তৈরি জিনিসপত্রের দাম।

কারিগররা জানান এ পেশায় পরিশ্রমের চেয়ে পারিশ্রমিক কম। তাইতো সময়ের বির্বতনে কোন কোন কর্মকার জীবিকার তাগিদে পূর্ব-পুষের পেশা ছেড়ে অন্য কাজে ঝুকে পড়ছেন। সারাদিন আগুনের পাশে বসে কাজ করতে হয়,তবুও পূর্ব-পুরুষের রেখে যাওয়া এই পেশাই উৎসাহের কমতি নেই কামার পল্লীর এসব কর্মকারদের।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!