• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

টেকসই উন্নয়নকে যুক্ত করে ঘোষণা হচ্ছে মুদ্রানীতি


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জুলাই ২৫, ২০১৭, ১১:৩৭ পিএম
টেকসই উন্নয়নকে যুক্ত করে ঘোষণা হচ্ছে মুদ্রানীতি

ঢাকা: মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ ও ঋণের প্রবাহ বৃদ্ধি করে আগামী ছয় মাসের মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচেছ বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার(২৬ জুলাই) এবারের মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বালে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সূত্র জানিয়েছে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র বা এসডিজি অর্জনের কথা মাথায় রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে এবারের মুদ্রানীতি।

বাংলাদেশ ব্যাংক ছয় মাস পরপর বছরে দু’বার মুদ্রানীতি ঘোষণা করে। বছরের একটি সময়ে বাজারে কী পরিমাণ অর্থের সরবরাহ ও ঋণ দেয়া হবে মুদ্রানীতে তার একটি প্রাক্কলন(পূর্বাভাস বা লক্ষ্যমাত্র) দেয়া হয়।

সূত্র জানিয়েছে, জুলাই-ডিসেম্বর’১৭ এই ছয় মাসের মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের কথা বলা হবে। গতবারের মতো এবারও মুদ্রানীতিতে সতর্ক অবস্থা থাকলেও ঋণপ্রবাহ বর্তমানের তুলনায় কিছুটা বাড়াতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগের মতোই বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর ওপর জোর দেয়া হবে।

আবার নির্বাচনের আগে সরকারি খাতে ঋণ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বাড়বে। তবে এ জন্য বেসরকারি খাত যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। বেসরকারি খাতে এবারে ঋণ প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়িয়ে ১৭ শতাংশ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আগের মুদ্রানীতিতে গত জুন নাগাদ মুদ্রা সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। অথচ মে পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৬৯ শতাংশ। বেসরকারি খাতে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ ঋণ বৃদ্ধির প্রাক্কলনের বিপরীতে মে পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ।

এ বিষয়ে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈঠকে মুদ্রানীতিতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন না আনার পক্ষে বেশিরভাগ কর্মকর্তা মত দেন। তবে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ঋণ জোগানের প্রাক্কলন আগের চেয়ে বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। আর এই ঋণের বড় অংশই যেন এসএমই ও কৃষির মতো বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় এমন খাতে যায় সে বিষয়ে মুদ্রানীতিতে ঘোষণা থাকবে।

গত কয়েকটি মুদ্রানীতিতে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে, প্রকৃত ঋণ ধারেকাছেও নেই। সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে সরকার ঋণ নেয়ার পরিবর্তে ১৮ হাজার ২৯ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করেছে। তবে নতুন অর্থবছরে ঋণের প্রয়োজন হবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও এ জন্য বেসরকারি খাত বাধাগ্রস্ত হবে না বলে তাদের ধারণা। কেননা বর্তমানে ব্যাংকগুলোর কাছে বিপুল পরিমাণের উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। এসব অর্থ বিনিয়োগে নিতে বেশিরভাগ ব্যাংক নানা কৌশল নিচ্ছে। বিশেষ করে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে সরকারকে ঋণ দিতে ব্যাপক আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে বিপুল পরিমাণে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ফলে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ চাহিদা অনেক কম।

মুদ্রা সরবরাহের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলোতে বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত অর্থের ফলে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে চাহিদা অনুযায়ী ঋণ জোগান দেওয়া সম্ভব হবে।

মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে গত জুনে ৫ দশমিক ৯২ শতাংশে উঠেছে। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেশি বেড়েছে। চালের দাম বৃদ্ধি খাদ্য মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ। তবে চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে ইতিমধ্যে দাম নিম্নমুখী ধারায় এসেছে। আবার আন্তর্জাতিক বাজারে চালসহ বেশিরভাগ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকায় মূল্যস্ফীতিতে স্বস্তি থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

এরপরও মুদ্রা সরবরাহের প্রভাবে মূল্যস্ফীতিতে ঊর্ধ্বগতি দেখা দিলে প্রয়োজনে বরাবরের মতো এবারও কিছু অর্থ তুলে নিয়ে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে জানা গিয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/তালেব

Wordbridge School
Link copied!