• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাম্পই লাগাচ্ছেন বিশ্বযুদ্ধ! ধ্বংস হবে পৃথিবী?


আন্তর্জাতিক ডেস্ক এপ্রিল ১৫, ২০১৭, ১০:০৪ পিএম
ট্রাম্পই লাগাচ্ছেন বিশ্বযুদ্ধ! ধ্বংস হবে পৃথিবী?

ঢাকা: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর শুরু হয় ব্যাপক দাঙ্গা-হাঙ্গামা। টালমাটাল অবস্থায় দাঁড়ায় মার্কিন মুল্লক। ট্রাম্প কীভাবে মার্কিন মুল্লুক তথা বিশ্ব শাসন করবেন তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

আর ওই সময়েই হঠাৎ তুমুল আলোচনায় উঠে আসেন ষোড়শ শতকের ফরাসি পদার্থবিদ ও জ্যোতির্বিদ মাইকেল দে নোতর দাম ওরফে নস্ত্রাদামুসের নাম। যিনি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন তার ভবিষ্যৎবাণীর জন্য।

পাঁচশ বছর আগে আশ্চর্য সব ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন নস্ত্রাদামুস। যা পরবর্তীতের সত্যে পরিণত হয়েছে। ‘দি প্রফেসিস’ নামের বইটিতে রহস্যময় ভাষায় তিনি এসব কথা লিখে গেছেন। তার মধ্যে ১৯৩০-এর দশকে হিটলারের উত্থান, আমেরিকার কেনেডি-ভাইদের নিহত হওয়ার ঘটনা, নেপোলিয়নের পরাজয়, এমনকী ৯/১১-এ আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদী হামলা— এ সবই বলে গিয়েছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়া আর তার শাসনের ভয়াবহতা নিয়েও নাকি ভবিষ্যৎদ্বাণী করেছিলেন নস্ত্রাদামুস। এই জ্যেতিষীর দেয়া পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে তখন বলা হয়েছে, ট্রাম্প এসে মারাত্মক যুদ্ধ বাঁধাবেন। তিনি পৃথিবীকে ধ্বংস করবেন।

ট্রাম্পকে নস্ত্রাদামুস বর্ণনা করেছেন, দারুণ লজ্জাহীন, উদ্ধত ঝগড়াটে ব্যক্তি’ হিসেবে। আরো বলেছেন, সেই লজ্জাহীন ব্যক্তি সরকারপ্রধান নির্বাচিত হবেন। তিনি স্থূল তর্ক করবেন। এতে সেতুবন্ধন ভেঙে যাবে। শহরে ভীতি ছড়িয়ে পড়বে। নস্ত্রাদামুসের এই ভবিষ্যদ্বাণীতে মারাত্মক সংঘাতের কথা বলা হয়েছে। যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধেরই ইঙ্গিত বলে মনে করেন অনেকে।

গণমাধ্যমে এসব আলোচনার পর ট্রাম্প জমানা নিয়ে ভয়াবহ উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা চেপে ধরে মার্কিনীদের। গেল বছরের নভেম্বর মাসে মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের বিজয়ে এই ভীতি আরো বেশি করে ছড়ায়। এরপর কেটে গেছে সাড়ে চার মাস। এর মধ্যেই ট্রাম্পের ইঙ্গিতে সিরিয়ায় হামলা হয়েছে। এখন নতুন করে পারমাণবিক যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়।  

ট্রাম্প

গেল বছরের অক্টোবরে উরি হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চরম অশান্তিতে তৈরি হয় যুদ্ধের আবহ। ভারতকে সমর্থন করে আমেরিকা। পারমাণবিক শক্তিধর দেশ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যখন অশান্তি চরমে পৌঁছে, ঠিক সেই মুহূর্তে নস্ত্রাদামুসের দেয়া ২০১৬ সাল বা এর আশপাশ সময়ে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভবিষ্যৎবাণী সবাইকে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। 

২০১৬ সাল ও এর আশপাশের সময় সম্পর্কে কী বলে গিয়েছিলেন নস্ত্রাদামুস- তা নিচে ক্রমানুসারে উল্লেখ করা হলো-

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ: ২০১৬ সালেই পৃথিবীর বৃহৎ রাষ্ট্রশক্তিগুলির মধ্যে এক ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হবে। যা দীর্ঘ ২৭ বছর স্থায়ী হবে এবং বিপুল প্রাণহানির কারণ হবে। অনেকেই মনে করেন, নস্ত্রাদামুস ইঙ্গিতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কথাই বলে গিয়েছিলেন।

ভিস্যুভিয়াস থেকে অগ্নুৎপাত: আগ্নেয়গিরি ভিস্যুভিয়াস থেকে ব্যাপক অগ্নুৎপাত ঘটবে। তার ঠিক পরে-পরেই প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে উঠবে পৃথিবী, যে ভূমিকম্পে ৬ হাজার থেকে ১৬ হাজার মানুষের মৃত্যু‌ হবে।

ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম ভূমিকম্প: ইতিহাসের ভয়ঙ্করতম ভূমিকম্পটি দেখা দেবে ২০১৬ সালেই। এটির উৎপত্তিস্থল হবে আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চল। কিন্তু এর ব্যাপকতা গোটা পৃথিবীকেই কাঁপিয়ে দেবে।

সন্তান ধারণের অনুমতি: নস্ত্রাদামুসের গণনা অনুযায়ী, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এই বছরেই এমন আইন চালু হবে, যে আইন অনুসারে সন্তানের পিতা-মাতা হওয়ার আগে সরকারি অনুমতি নিতে হবে দম্পতিদের।

বিশ্ব-অর্থনীতির বিপর্যয়: বিশ্ব-অর্থনীতি এই বছর নাগাদই ভেঙে পড়বে। নস্ত্রাদামুস রহস্যময় ভাষায় এই ইঙ্গিত দিয়ে লিখেছেন, ‘ধনীরা তাদের জীবদ্দশায় বহুবার মৃত্যুর সম্মুখীন হবে।’

মানুষের দৈহিক বয়স কমে যাবে: নস্ত্রাদামুসের মতে, এই সময় চিকিৎসাবিদ্যার এমন উন্নতি হবে যে, ৮০ বছর বয়স্ক মানুষকে দেখতে লাগবে ৫০ বছর বয়সীর মতো। সেই সঙ্গে মানুষের আয়ু ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে।

প্রকৃতির সর্বনাশ: নস্ত্রাদামুস লিখে গিয়েছেন, ২০১৬ সাল নাগাদ ‘রাজারা অরণ্যকে হরণ করবে, আকাশ ফেটে যাবে, উত্তাপে দগ্ধ হবে মাটি।’ যার সহজ অর্থ— বসতির প্রয়োজনে প্রাকৃতিক অরণ্যকে ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেবেন রাষ্ট্রের মাথারা। বায়ুমণ্ডলের ওজন স্তরে ছিদ্র দেখা দেবে, যার ফলে সূর্যের অতিবেগুণী রশ্মি পৃথিবীতে প্রবেশ করে ক্ষয়-ক্ষতি ঘটাবে জীবকুলের।

করদান থেকে মুক্তি: নস্ত্রাদামুস লিখেছেন, ‘মানুষ রাজাকে কর দান করতে অস্বীকার করবে।’ অর্থাৎ কোনো এক ব্যাপক গণবিপ্লবের পরিণামে কর ব্যবস্থারই অবলোপন ঘটবে।

পশুপাখির সঙ্গে মানুষের সখ্য: নস্ত্রাদামুস লিখে গিয়েছেন, ‘শুয়োরেরা মানুষের ভাই হয়ে উঠবে।’ এর অর্থ কী, মানুষ পশুসুলভ বর্বর হয়ে উঠবে, নাকি পশুকুলের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যের সম্পর্ক স্থাপিত হবে মানুষের? বর্তমান পৃথিবীতে প্রথম ঘটনাটিই যেন বেশি সম্ভব বলে মনে হয়।

ভাষার ব্যবধান দূরীভূত হবে: নস্ত্রাদামুস বলে গিয়েছেন, কোনো এক বিশেষ যন্ত্রের কল্যাণে ভাষায়-ভাষায় দূরত্ব ঘুচে যাবে। অনেকেই মনে করেন, এই বিশেষ যন্ত্রটি আসলে কম্পিউটার।

ট্রাম্পই বাঁধাবেন বিশ্বযুদ্ধ, ধ্বংস হবে পৃথিবী!

সোনালীনিউজ/এন

Wordbridge School
Link copied!