• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাম্পকে ‘একহাত’ নিল সিরিয়ান টুইট গার্ল


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ২৬, ২০১৭, ০১:৪৪ পিএম
ট্রাম্পকে ‘একহাত’ নিল সিরিয়ান টুইট গার্ল

ঢাকা: সিরিয়ার শিশুদের জন্য কিছু করতে ‘অশ্রুভেজা চিঠি’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে টুইট করেছিলো সিরিয়ান টুইট গার্ল খ্যাত বানা আলাবেদ। কিন্তু তাতে একটুও মন গলেনি মার্কিন নব এই প্রেসিডেন্টের। বরং বানা পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সফরে নিষেজ্ঞার খড়গ।

যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার সাত বছর বয়সী শিশু বানা আলাবেদ এখন টুইটার গার্ল হিসেবে সুপরিচিত। গত ডিসেম্বর মাসে আলেপ্পো থেকে যখন আটকে পড়া মানুষ জনকে উদ্ধার করা হচ্ছিল তখন পরিবারের সাথে উদ্ধার পায় বানা আলাবেদও। এখন সে তুরস্কে বসবাস করছে। অবরুদ্ধ আলেপ্পো থেকে বানা নিয়মিত টুইট করত। এসময় তার টুইটার অ্যাকাউন্ট বিশ্বজোড়া খ্যাতি পায়। মেয়েকে টুইট করার বিষয়ে সহায়তা করেন মা ফাতেমা। 

বুধবার (২৫ জানুয়ারী) যুক্তরাষ্ট্রের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে একটি খোলা চিঠি দেয় বানা। যা পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসিতে প্রচার করা হয়। যেখানে সিরিয়ার শিশুদের জন্য কিছু বিশেষভাবে অনুরোধ করে এই টুইট গার্ল।

এর পর সেই চিঠিকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে বরং সিরিয়াসহ সাত দেশের নাগরীকদের যুক্তরাষ্ট্র সফর ও নাগরীকত্বের ব্যাপারে বিধিনিষধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেন ট্রাম্প। 

 

বানার পরবর্তী টুইট

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের পর বসে থাকেনি বানা! ট্রম্পকে একহাত নিয়েছে সে। পরবর্তী টুইটে বানা বলেছে-

“প্রিয় ট্রম্প, উদ্বাস্তুদের প্রবেশে নিষেজ্ঞা ভালো কাজ নয়। ঠিক, আছে এটা ভালো। আপনার সম্পর্কে আমার ধারণা হয়ে গেছে। অন্য দেশগুলোতে শান্তি স্থাপনে কাজ করুন।”

ট্রাম্পকে দেয়া বানার চিঠি:

প্রিয় ডোনাল্ড ট্রাম্প,

আমার নাম বানা আলাবেদ। বয়স সাত বছর। আমি সিরিয়ার আলেপ্পোর মেয়ে। ডিসেম্বরে পূর্ব আলেপ্পো দখলে যাওয়ার আগ পর্যন্ত আমি সেখানেই থাকতাম। সিরিয়া যুদ্ধে ভুক্তভোগী শিশুদের একজন আমি। তবে এখন আমার নতুন ঠিকানা তুরস্ক। সেখানে শান্তিতেই আছি।

আলেপ্পোতে থাকার সময় আমি বিদ্যালয়ে যেতাম। কিন্তু বোমার আঘাতে সেটা ধ্বংস হয়ে যায়। আমার কয়েক বন্ধুও মারা যায়। তাদের জন্য আমার খুব কষ্ট হয়। খুব ইচ্ছে করে সবাই মিলে আগের মতো খেলাধূলা করতে। কিন্তু আলেপ্পোতে আমি খেলতে পারতাম না। কারণ, আলেপ্পো এখন মৃত্যুর নগরী।

এখন আমি তুরস্কে আছি। আমি বাইরে যেতে পারি, আনন্দ করতে পারি। আমি চাইলে বিদ্যালয়েও যেতে পারি, যদিও আপাতত যাচ্ছি না। এ কারণে আমিসহ সবার কাছে শান্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সিরিয়ার লাখো শিশুর অবস্থা এই মুহূর্তে আমার মতো না। তারা দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে কষ্ট ভোগ করছে। বড়দের কারণে শিশুদের এই ভোগান্তি।

আমি জানি, আপনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন। আপনি কি দয়া করে সিরিয়ার শিশু ও জনগণকে রক্ষা করতে পারেন? আপনার অবশ্যই সিরিয়ার শিশুদের জন্য কিছু করতে হবে, তারা আপনার শিশুর মতো আর তারাও আপনার মতো শান্তি চায়। আপনি যদি সিরিয়ার শিশুদের জন্য কিছু করার প্রতিশ্রুতি দেন, আমি আপনার নতুন বন্ধু হব। আপনি সিরিয়ার শিশুদের জন্য কী করবেন, সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।

ইতি
বানা আলাবেদ

 

ট্রাম্পকে বানার চিঠি

প্রসঙ্গত, তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যস্থতায় বিদ্রোহীরা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পর আলেপ্পো থেকে বের হওয়ার সুযোগ পায় বানার পরিবার। এরপর তারা তুরস্কে চলে যায়। সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তুরস্ক ২৭ লাখ সিরিয়ার নাগরিককে আশ্রয় দিয়েছে।

সোনালীনিউজ ডটকম/ঢাকা/এআই

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!