• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের নীতি মানবে না কোনো মেয়র


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জানুয়ারি ২৮, ২০১৭, ১১:০৮ পিএম
ট্রাম্পের নীতি মানবে না কোনো মেয়র

ঢাকা: শরণার্থী ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।এবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরদ্ধে জোড়ালোভাবে কথা বলতে শুরু করেছেন নগর মেয়ররা। শরণার্থী নিয়ে নির্বাহী আদেশ না মানলে নগরের আর্থিক সুবিধা বাতিল করা হবে-ট্রাম্পের এমন বক্তব্যে মেয়রদের চটেছেন আরও। অনেক মেয়র অভিবাসীদের অভয় দিয়ে বলেছেন, তারা আমেরিকায় নিরাপদ। 

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, দেশটির শহরগুলোর মধ্যে নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগো, বোস্টন, টেক্সাস, নিউ হ্যাভেন, সাইরাক্রজ ও অস্টিনের মতো শহরগুলোর মেয়ররা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। আদেশের জবাবে উল্টো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এ ধরনের অবস্থানে চলে গেলে তারাও সমানভাবে লড়াই করবেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিউইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও বলেন, আমরা আমাদের জনগণকে সুরক্ষা দিতে সব রকমের পদক্ষেপ নেবো। তারা কোথা থেকে এলো বা তাদের ধর্ম কী সেটা দেখা আমাদের বিবেচ্য নয়।

শিকাগোর মেয়র রাম এমানুয়েল ঘোষণা দেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই; আমরা একটি নিরাপদ শহরে থাকছি। আমাদের মধ্যে কোনো অপরিচিত নেই। নগরবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেন, তুমি যদি আমেরিকা গড়ার স্বপ্ন দেখো তবে স্বাগত, তুমি কি পোল্যান্ড না পাকিস্তান থেকে এলে, নাকি আয়ারল্যান্ড, ইন্ডিয়া বা ইসরায়েল থেকে এলে, নাকি মেক্সিকো বা মলদোভা থেকে এলে, অথবা তোমার দাদা-নানারা কোথা থেকে এসেছেন তা আমেরিকানদের কাছে বিবেচ্য নয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রমে বাধ্য করতে ট্রাম্পের ওই আদেশ জারির পর সান ফ্রান্সিসকোর মেয়র এড লি এবং ওকল্যান্ডের মেয়র  লিবি স্কফে যৌথভাবে বিবৃতি দেন। তারা বলেন, আমরা কোনো হুমকি বা রাজনৈতিক প্রভাবে আত্মসমর্পণ করবো না। আজ এই উপসাগরীয় এলাকা সত্যিকারার্থে আমাদের অংশগ্রহণমূলক মূল্যবোধ, সমবেদনা ও সমতার প্রশ্নে এক সারিতে দাঁড়িয়েছি। আমরা আমাদের বাসিন্দা, শহর ও দেশকে বিভাবিজত করার যেকোনো অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।

বোস্টনের মেয়র মার্টিন জে ওয়ালশ প্রতিবাদ করেই ক্ষ্যান্ত হননি। তিনি একধাপ এগিয়ে আরও বলেছেন, আজ যারা হুমকিবোধ করছো, বিপদ শঙ্কায় ভুগছো তোমরা বোস্টনে নিরাপদ। তোমাদের সুরক্ষিত রাখতে আমরা সাধ্যের মধ্যে সবকিছু করবো। প্রয়োজনে আমরা নগর হলকে তোমাদের আশ্রয়কেন্দ্র বানাবো।
এমনকি নিজের অফিসকেও অভিবাসীদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র বানানোর কথা বলেন ওয়ালশ। 

বোস্টন মেয়র বলেন, তারা আমার অফিস ব্যবহার করতে পারে, এই ভবনের যেকোনো অফিস তারা ব্যবহার করতে পারে। তারা এই ভবনকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ভাবতে পারে।

এদিকে ট্রাম্পের ওই আদেশ জারির পর ক্যালিফোনিয়ার সিনেটরদের একটি দল জানিয়েছে, তারা সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক হোল্ডারের সঙ্গে আলাপ করে আদালতে আশ্রয় নেবেন। তারা মনে করেন, স্থানীয় সরকারকে প্রভাবিত করতে ট্রাম্পের এই আদেশ সংবিধানের দশম সংশোধনীর লঙ্ঘন। 

অনুমোদন ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের আটক করে কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিতে ট্রাম্প সম্প্রতি ওই আদেশ জারি করেন। তার জবাবে ক’দিন ধরে শহরগুলোর মেয়র ও কর্মকর্তারা এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে আসছেন। 

তাদের এই জবাবের মধ্যেই ২৮ জানুয়ারি অভিবাসন বিষয়ে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। সেই আদেশের আওতায় মার্কিন মুলুকে যেকোনো ধরনের শরণার্থী প্রবেশ বন্ধ থাকবে আগামী ৪ মাস। আর সিরিয়ার ক্ষেত্রে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।

ট্রাম্প তার আদেশে সিরিয়া ছাড়াও মুসলিমপ্রধান আরও ৬টি দেশের ভিজিটর বা দর্শনার্থী প্রবেশ পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন ৩ মাসের জন্য। সে ৬টি দেশ হলো ইরাক, ইরান, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া ও সুদান। 

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!