ঢাকা: ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রায় প্রত্যেকেরই জানা আছে। কিন্তু ডিমের খোসার গুণ নিয়ে হয়তো আমরা ভাবিই না। ডিম সেদ্ধ কিংবা ভাজা যাই-ই খাওয়া হোক না কেন, খোসা ঠাঁই পায় ডাস্টবিনে। যদিও ডিমের খোসায় দারুণ কারুকার্যের নিদর্শন দেখা যায় প্রচুর। কিন্তু ডাস্টবিনে স্থান পাওয়া খোসা সম্পর্কে জানলে চমকে যেতে হবে।
গবেষকরা জানান, ডিমের খোসায় থাকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম। ফলে এই খোসা খেলে আখেরে উপকারই হয়। প্রতিটি ডিমের খোসায় থাকে দুই গ্রাম ক্যালসিয়াম। যার মধ্যে ৯৫ শতাংশই হল ক্যালসিয়াম কার্বনেট। আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক এক গ্রাম করে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন পড়ে। ফলত একটি ডিমের খোসার অর্ধেকাংশ একজন প্রাপ্তবয়স্কের জন্য যথেষ্ট।
তবে গবেষকরা সাবধান করে দিয়েছেন, খোসা ছাড়িয়েই মুখে পুরে দেবেন না। খোসায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়া। আর এমনি খেলে মুখ কেটে যাওয়ারও সম্ভাবনা থাকে। তাই বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই খোসা খাওয়া উচিৎ।
প্রথমে এই খোসাগুলিকে পানিতে সেদ্ধ করে নিতে হবে। এতে খোসায় থাকা সমস্ত ব্যাকটেরিয়া মরে যায়। এরপরে সেদ্ধ খোসাগুলিকে মাইক্রোওয়েভে ১০-১৫ মিনিট ধরে ২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটে বেক করতে হবে। এবার সেই খোসাগুলিকে মিক্সিতে গুঁড়ো করে ফেলতে হবে। ব্যাস, ডিমের খোসা রেডি।
এক চা চামচ ডিমের খোসা গুঁড়োর ওজন মোটামুটি ৫ গ্রাম এবং এতে ১৬০০-১৮০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। বয়সের ওপর ভিত্তি করে দৈনিক এক দশমিক ৫ থেকে ৩ গ্রাম পর্যন্ত ডিমের খোসার গুঁড়ো খাওয়াটা কার্যকরী।
অবশ্য, ডিমের খোসার পাউডার আপনি অল্প অল্প করে আটা বা ময়দায় মেখে খেতে পারেন। তবে আবারো সাবধান করে দিয়েছেন গবেষকরা। বলেছেন, অত্যাধিক ক্যালসিয়ামও কিন্তু বিপদ ডেকে আনতে পারে।
থাইরয়েড গ্ল্যান্ড সক্রিয় রাখা, রক্ত পরিষ্কার ও গ্যাস্ট্রিক বা আলসারজনিত ক্র্যাম্পের জন্য ডিমের খোসা দারুণ উপকারী। এছাড়া দ্রুত জয়েন্টের ব্যথা উপশম করতে ডিমের খোসার গুঁড়ো লাগানো খুবই কার্যকর।
শুধু রোগ নিরাময় কিংবা প্রতিরোধেই নয়, ডিমের খোসায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং মিনারেল রয়েছে যা বাগানের মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ডিমের খোসা গুঁড়া করে মাটিতে ব্যবহার করতে হয়। পাশাপাশি বাসনপত্র পরিষ্কার, কফি মিষ্টি করতে, পোকামাকড় দূর, ড্রেন পরিষ্কার ও ত্বক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও রয়েছে ডিমের খোসার ব্যবহার।
সোনালীনিউজডটকম
আপনার মতামত লিখুন :