• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাকার পাঁচ আসনে দৃষ্টি এরশাদের!


সোনালী বিশেষ সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৭, ০৪:০০ পিএম
ঢাকার পাঁচ আসনে দৃষ্টি এরশাদের!

ঢাকা : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার ঘোষণা দিলেও খোদ রাজধানীতেই যোগ্য প্রার্থীসঙ্কটে রয়েছে জাতীয় পার্টি। তবুও ঢাকার অন্তত পাঁচটি আসনে দলের প্রার্থীদের বিজয়ী দেখতে চান দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।

ঢাকায় মোট সংসদীয় আসন রয়েছে ২০টি। এর মধ্যে ঢাকা-১ আসনে অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, ঢাকা-৪ আসনে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও ঢাকা-৬ আসনে কাজী ফিরোজ রশীদ জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। বাকি ১৭টি আসনই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দখলে।

দলীয় প্রধান এরশাদের টার্গেট, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে পাঁচটি আসনে দলের প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করা। এই পাঁচটি আসন হলো, ঢাকা-১৭, ঢাকা-১, ঢাকা-৪, ঢাকা-৬ ও ঢাকা-১৩। এর মধ্যে ঢাকা-১৭ আসনে এরশাদ নিজে এবং ঢাকা-১৩ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে।

এছাড়া ঢাকা-১ আসনে বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, ঢাকা-৪ আসনে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ঢাকা-৬ আসনে কাজী ফিরোজ রশীদকে আবারও বিজয়ী দেখতে চান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এমনকি শেষ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনী জোট হলেও এই পাঁচটি আসন নিজের দখলে রাখতে চান তিনি।

এদিকে ঢাকার অন্যান্য আসনে জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে এলাকায় ব্যানার পোষ্টার ফেস্টুন লাগিয়ে ও ফেইসবুকের মাধ্যমে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর মধ্যে ঢাকা-২ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি হাজী মো. শাহজাহান, ঢাকা- ৫ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ঢাকা-৭ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, ঢাকা-৮ আসনে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল দলীয় মনোনয়ন চাইবেন।

এছাড়া ঢাকা-৯ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, ঢাকা-১১ আসনে কেন্দ্রীয় নেতা জাকির হোসেন মৃধা, ঢাকা-১৪ আসনে যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাকুর রহমান, ঢাকা-১৫ আসনে সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শামসুল হক, ঢাকা-১৬ আসনে ভাইস চেয়ারম্যান আমানত হোসেন, ঢাকা-১৮ আসনে প্রেসিডিয়াম সদস্য সোহেল রানা ও ভাইস চেয়ারম্যান বাহাউদ্দিন আহমেদ বাবুল, ঢাকা-১৯ আসনে কেন্দ্রীয় নেতা বাহাদুর ইসলাম ইমতিয়াজ ও আবুল কালাম আজাদ ও ঢাকা-২০ আসনে ঢাকা জেলা জাপার সভাপতি ইসরাফিল খোকনের নাম শোনা যাচ্ছে।

তবে এদের বেশিরভাগ প্রার্থীই আওয়ামী লীগ বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকার মতো নন, তাছাড়া এই সব নেতার নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় পার্টির শক্তিশালী কর্মীবাহিনী ও জনসমর্থন না থাকায় এককভাবে জাতীয় পার্টি নির্বাচন করলেও এরা প্রতিদ্বন্ধিতায় আসার সম্ভাবনা কম। এসব বিষয় মাথায় রেখেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পাঁচটি আসনে জয়ের টার্গেট নিয়ে কাজ করছেন জাপার প্রার্থীরা।

জানা গেছে, ঢাকা-১ আসনে জাপার বর্তমান এমপি সালমা ইসলামের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। গত সাড়ে তিন বছরে এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন তিনি। দোহার-নবাবগঞ্জে জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থানও মজবুত। তাছাড়া এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মান্নান খানের বিরুদ্ধে দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন সালমা ইসলাম।

রাজধানীতে জাতীয় পার্টির সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন রয়েছে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকায়। দলের সকল কেন্দ্রীয় ও মহানগরের কর্মসূচীতে বাবলার নির্বাচনী এলাকার জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি থাকে চোখে পড়ার মতো।

ঢাকা মহানগরের অন্যান্য এমপির চেয়ে এলাকায় সবচেয়ে বেশি সময় দেন বাবলা। গত সাড়ে তিন বছরে এলাকার রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন সেক্টরে তিনি ব্যাপক উন্নয়ন করে নিজের একটা ক্লিন ইমেজ তৈরি করেছেন তিনি।

ঢাকা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হচ্ছেন এডভোকেট সানজিদা খানম, তোফাজ্জল হোসেন ও ড. আওলাদ হোসেন। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকার কারণে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন বাবলা।

ঢাকা-৬ আসনের জাপার বর্তমান এমপি কাজী ফিরোজ রশীদের নির্বাচনী এলাকায় এবার দলীয় মনোনয়ন চাইবেন আওয়ামী লীগের নগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এবং দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ স্বপন। বিগত নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের কোনো শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় ঢাকা-৬ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়।

ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গির কবীর নানক। আগামীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট হলে এই আসনও চাইবেন এরশাদ । দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম সেন্টু এই আসনে জাপার প্রার্থী । তার রয়েছে শক্তিশালী কর্মীবাহিনী। তবে এমপি পদে নির্বাচন করতে হলে তাকে কাউন্সিলর পদ ছেড়ে দিয়েই নির্বাচনে অংশ নিতে হবে।

আর ঢাকা- ১৭ আসনে সেনাবাহিনীর সদস্যদের একটা বিশাল ভোটব্যাংক থাকায় এককভাবে নির্বাচন করলেও এই আসনে এরশাদের বিজয় অনেকটা সুনিশ্চিত বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা।

তাছাড়া এরশাদ এই আসনে নির্বাচন করতে চাইলে আওয়ামী লীগ একবাক্যে এই আসন জাপাকে ছেড়ে দেবে বলে দলের নেতাকর্মীরা মনে করে। কারণ, গত নির্বাচনেও এ আসনে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে এরশাদ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করায় বিএনএ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ নির্বাচিত হন।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!