• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার ২০ আসনে আ. লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী


সোনালী বিশেষ জুলাই ২২, ২০১৭, ০৪:৫৭ পিএম
ঢাকার ২০ আসনে আ. লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী

ঢাকা : রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ঢাকা। তাই ঢাকার ২০টি আসনে প্রার্থীদের নিয়ে একটু বেশিই সতর্ক থাকতে হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের প্রধান কৌশল হচ্ছে, বিএনপির প্রার্থী দেখে নিজেদের প্রার্থী নির্ধারণ। গতবারের মতো আসন্ন নির্বাচনেও ঢাকার ২০টি আসন ‘দখলে’ নিতে চায় ক্ষমতাসীনরা।

এ কারণে ঢাকার আসনগুলোতে মনোনয়নের ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলটি। এরই মধ্যে জোট শরিকদের বিষয়টি মাথায় রেখে নিজ দলের বর্তমান ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়েও খোঁজ-খবর রাখছে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এবার ঢাকা জেলার প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হবে বলে এ দলের দায়িত্বশীল কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বর্তমানে ঢাকা জেলায় ২০টি সংসদীয় আসন রয়েছে। এর মধ্যে বেশকিছু আসনে পরিবর্তনের কথা ভাবছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা। শরিকদের সঙ্গেও হতে পারে তাদের নতুন হিসাব-নিকাশ। ১৪টি আসনে একাধিক প্রার্থী কাজ করলেও ঢাকা-৩, ৯, ১০, ১১, ১২ ও ১৮ আসনে একক প্রার্থীর কথা জানা গেছে। ঢাকার আসনগুলোয় সব মিলিয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় অর্ধশতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে তৎপর রয়েছেন।

ঢাকার মনোনয়ন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম এবং সংসদীয় বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বলেন, ঢাকার মনোয়নের বিষয়টি অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় সংগঠনের সুপারিশ, মাঠের অবস্থা বিশ্লেষণ করে এবার মনোনয়ন দেয়া হবে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল মান্নান খান বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রতিটি সংসদীয় আসনের জেলা-উপজেলা থেকে শুরু করে গ্রামের খবর পর্যন্ত আছে। আওয়ামী লীগ সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী একটি দল, প্রতিটি আসনেই এ দলের একাধিক যোগ্য প্রার্থী আছেন। সবার বিষয়েই খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

এদের মধ্য থেকে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেবে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড। যে কোনো দেশেই রাজধানীর গুরুত্ব বা তাৎপর্য একটু ভিন্ন হয়ে থাকেই। সেই হিসেবে ঢাকার গুরুত্বও বেশি। এ বিষয়টি বিবেচনা করেই আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী অতীতের মতোই সামনে থেকে কাজ করবেন।

বিভিন্ন সুত্রে ও ঢাকার আসনগুলোর মাঠপর্যায়ের তথ্যানুয়ায়ী বেশকিছু আসনে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানা গেছে। পরিবর্তনের আশায় প্রায় প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থীও কাজ করছেন। ক্লিন ইমেজ ও নেতাকর্মী, এলাকায় গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং শক্তিশালী প্রতিদ্ধন্ধিতার বিপরীতে জয়ী হয়ে আসতে পারবেন এমন প্রার্থী দেয়া হবে বলেও জানা গেছে।

ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সালমা ইসলাম। গত নির্বাচনে আসনটি উš§ুক্ত ছিল। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল মান্নান খানকে পরাজিত করে সালমা ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। এবারও এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেয়ার কথা ভাবছে। এবার আর জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিতে চায় না তারা। এখানে প্রার্থী হিসেবে আবদুল মান্নান খানের পাশাপাশি ঢাকা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নাম আলোচনায় আসছে।

ঢাকা-২ (কেরানীগঞ্জ-কামরাঙ্গীরচর) আসনে পরিবর্তনের আশায় এরই মধ্যে এ মাঠে কাজ শুরু করে দিয়েছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি শাহিন আহমেদ।

ঢাকা-৪ (শ্যামপুর-কদমতলী) আসনে এবার জাতীয় পার্টিকে ছাড় না-ও দিতে পারে আওয়ামী লীগ। এ আসনের বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। গতবারের ছেড়ে দেয়া আসনে আবারও মনোনয়ন চাইবেন সাবেক এমপি ও বর্তমানে সংরক্ষিত আসনের এমপি সানজিদা খানম।

ঢাকা-৫ (ডেমরা-যাত্রাবাড়ী) আসনের বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। তিনিও মাঠে থাকতে পারেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিনি না থাকলে সেক্ষেত্রে তার ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজল কাজ করছেন। এর পাশাপাশি মাঠে হারুন উর রশীদ মুন্না ও কাজী মনিরুল ইসলাম মনুর নামও শোনা যাচ্ছে।

ঢাকা-৬ (সূত্রাপুর-কোতোয়ালি) আসনে দলীয় প্রার্থী দিতে পারে আওয়ামী লীগ। বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির নেতা ফিরোজ রশিদ। এ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও আহসান হাবিব মোল্লার নাম আলোচনায় রয়েছে।

ঢাকা-৭ (লালবাগ-চকবাজার) আসনের বর্তমান এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করেন তিনি। এরপর আবারও আওয়ামী লীগে ফিরে আসেন। দলের এমপি হিসেবে পরিচিত সেলিম। এখানে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলহাজ হাসিবুর রহমান মানিক চেষ্টা চালাচ্ছেন।

ঢাকা-৮ (রমনা-মতিঝিল) আসনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি আগামী নির্বাচনেও এ আসনের মনোনয়ন পেতে পারেন। তবে এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের যুগ্ন-সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ সভাপতি ইসমাঈল হোসেন সম্রাট।

ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর-আদাবর) আসনে আগামী নির্বাচনে বর্তমান এমপি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এ আসন থেকে এবার ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের নাম শোনা যাচ্ছে।

ঢাকা-১৪ (মিরপুর-শাহআলী) আসনে বর্তমান এমপি আসলামুল হকের বিষয়ে নতুন করে ভাবছে হাইকমান্ড। এ আসন থেকে মনোনয়ন পেতে কাজ করছেন যুব মহিলা লীগ উত্তরের সভাপতি ও সংরক্ষিত আসনের এমপি সাবিনা আক্তার তুহিন। তিনি বলেন, এলাকার মানুষের উন্নয়নের জন্য কাজে করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতেও করতে চাই। বাকিটা নেত্রী মূল্যায়ন করবেন।

ঢাকা-১৫ (কাফরুল) আসনে বর্তমান এমপি কামাল আহমেদ মজুমদারের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগ সভাপতি মাঈনুল হোসেন খান নিখিল, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা গাজী মেসবাউল রহমান সাচ্চু, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আলহাজ এম সাইফুল্লাহ সাইফুল, সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার ভাই এখলাছ উদ্দিন মোল্লা, কাফরুল থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার আলহাজ জামাল মোস্তফা মাঠে কাজ করছেন।

ঢাকা-১৬ (পল্লবী-রূপনগর) আসনে বর্তমান এমপি ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক এম এ মান্নান কচি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফকির মহিউদ্দিন।

ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) আসনে এমপি বিএনএফ সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদ। এ আসনে এবার সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এমপির নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও গুলশান থানার সাবেক সভাপতি ওয়াকিল উদ্দিন।

ঢাকা-১৯ (সাভার) আসনে ডা. মোহাম্মদ এনামুরের পাশাপাশি এলাকায় কাজ করছেন সাবেক এমপি তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ ও যুবলীগ নেতা তুহিন। ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনটির বর্তমান এমপি ধামরাই থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবদুল মালেকের পাশাপাশি সাবেক এমপি বেনজির আহমেদও এলাকায় কাজ করছেন মনোনয়নের জন্য।

যেসব আসনে একক প্রার্থী : ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জ) আসনে একক প্রার্থী বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। ঢাকা-৯ (মুগদা-সবুজবাগ) আসনে একক প্রার্থী সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি। ঢাকা-১০ (ধানমন্ডি) আসনের একক প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি। ঢাকা-১১ (বাড্ডা-ভাটারা) আসনেও একক প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি এ কে এম রহমতউল্লাহ।

ঢাকা-১২ (তেজগাঁও) আসনে আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে সেখানে আগামী সংসদ নির্বাচনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি রয়েছেন। ঢাকা-১৮ (উত্তরা) আসনে একক প্রার্থী দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!