• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি ছাত্রলীগের হল কমিটির নেতৃত্বে আসছেন যারা


ঢাবি প্রতিনিধি নভেম্বর ২৭, ২০১৬, ১২:২৭ এএম
ঢাবি ছাত্রলীগের হল কমিটির নেতৃত্বে আসছেন যারা

ঢাকা: প্রথমবারের মত সকল হলের কমিটি একসঙ্গে ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। রোববার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে শুরু হবে ছাত্রলীগের এ হল সম্মেলন। 

আর এ সম্মেলন কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সরগরম হয়ে ওঠেছে ক্যাম্পাস। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাঝেই নয়, ঢাবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে জল্পনা-কল্পনা, কারা আসছেন হল কমিটির নেতৃত্বে।

ঢাবি ছাত্রলীগের হল সম্মেলন সামনে রেখে গত কয়েকদিন ধরে মধুর ক্যান্টিনে নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি জানান দিচ্ছে, হল কমিটিতে জায়গা পেতে আগ্রহীদের সংখ্যা অনেক। ফেইসবুক থেকে শুরু হরে ক্যাম্পাসের চায়ের দোকান সব জায়গায় এখন একাটাই ইস্যু কোন হলে কে নেতা হচ্ছেন?

তিন বছর আগে ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল সর্বশেষ ঢাবি ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষিত হয়েছিল। তিনবছর পর নতুন এ কমিটিতে পদ পেতে বিভিন্ন হলের পদ প্রার্থীদের আনাগোনা তাই গত কয়েক দিন সরগরম মধুর ক্যান্টিন। কমিটিকে সামনে রেখে সারা বছর রাজনীতি থেকে নিষ্ক্রিয় থাকা নেতারাও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। 

প্রতিটি হলে প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করে শেষ বর্ষ এবং মাস্টার্স শিক্ষার্থীরা সবাই স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে রাখছেন মধুর ক্যান্টিন। বিভিন্ন হলের পদপ্রত্যাশীরা বেশ কয়েকদিন ধরেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের ব্যক্তিগত যোগাযোগ রাখছেন, নানাভাবে লবিংও করছেন।

নেতৃত্বে আসছেন যারা
প্রচারণা, ব্যক্তিগত যোগাযোগ, দলের জন্য ত্যাগ সব মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে যারা আলোচিত এবং সম্ভাব্য সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পেতে পারেন, তাদের একটা সম্ভাব্য পরিসংখ্যান নিচে দেয়া হলো।

স্যার এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রনি ও বিদায়ী কমিটির তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক উপ সম্পাদক শেখ নাজমুল আহমেদ।

শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের গোপালগঞ্জের বুলবুল আহমেদ, মাদারীপুরের শাকিল ভুইঞা, সিলেটের আনিসুল ইসলাম জুয়েল, সোহানুর রহমান, আসিফ তালুকদার ও নজরুল ইসলাম।

হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে মাকেটিং বিভাগের ছাত্র ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ বেল্টের মুজাহিদুল ইসলাম সোহাগ একই বেল্টের আল-আমিন, পূর্বের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাগেরহাটের ইব্রাহীম রাজু, গোপালগঞ্জের শেখ তামিম আহমেদ।

মাস্টারদা সূর্যসেন হলের পূর্বের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম সরওয়ার এই হলের সবচেয়ে আলোচিত নেতাদের একজন। এছাড়াও আগের কমিটির সহ-সভাপতি রুবেল আহমেদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক বেনজির আহমেদ,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সুমন মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন খান ও গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক তন্ময় চমক দেখাতে পারেন।

কবি জসিম উদ্দিন হলে এগিয়ে আছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী, বাগেরহাটের সন্তান ও বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আল মাসুদ সজিব। তিনি ইয়ং বাংলাসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক এবং কলেজ জীবন থেকে ছাত্রলীগের সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত। 

এছাড়া বরিশালের সন্তান, কবি জসিম উদ্দিন হল কমিটির বিদায়ী সাগঠনিক সম্পাদক এবং বিশ্ব র্ধম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ হোসেন অন্যান্যদের তুলনায় বেশ আলোচিত। আলোচনায় আরো আছেন দপ্তর সম্পাদক শামিম আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ আসিফ জোয়্দার এবং শাহেদ খান ইয়াকুব।

২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন রাজনীতি মুক্ত ছিল বিজয় একাত্তর হলটি। ৩১মে ২০১৫ হলটিতে ছাত্রলীগের মাত্র একটি কমিটি দেওয়া হয়েছে। গত ২৩ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন করে এ হলে এগিয়ে আছেন, টাঙ্গাইলের রাজিবুল হাসান তারিফ, জয়েন সেক্রেটারি ফকির রাসেল আহমেদ, ১ নং সাগঠনিক সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন বাপ্পি, যুগ্ম সম্পাদক তৌকির আহমেদ তপু, যুগ্ম সম্পাদক ফারহান ফারুক, সাগঠনিক সম্পাদক নয়ন হাওলাদার, সাইফুল ইসলাম জুয়েল এবং আরিফুল ইসলাম শেখ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে এ গিয়ে আছেন আওলাদ খান, মেহেদী হাসান, রাকিবুল হাসান, ফুয়াদ আল মুক্তাদী, এ এস এম ছানাউল্লাহ সূর্য, নাঈমুর রহমান, রুবেল আহমেদ নীরব, বাঁধন এবং পিপাস ।

ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্সসহ কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কয়েক ডজন নেতা মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল থেকে রাজনীতি করে নেতৃত্বে এসেছেন। নেতাদের হল নামে পরিচিত এ হলের আসন্ন কমিটিতে এগিয়ে আছেন আবদুল্লা আল মাসুদ লিমন, ইউসুফ উদ্দীন খান অপূর্ব, নাজমুল হোসাইন, শেখ সাগর আহমেদ এবং সাইফুল।

সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে এগিয়ে আছেন লক্ষ্মীপুর সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল,চুয়াডাঙ্গা সাগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান পিকুল, উত্তরবঙ্গের আসিফ ও ইমরান।

জগন্নাথ হলের উৎপল বিশ্বাস, কৃষ্ণ মজুমদার, শ্যামল সরকার, সঞ্জিত চন্দ্র দাস, শেখর পাল, শান্ত ধর, অভিজিৎ কুমার বিশ্বাস, সৌমিত্র সাহা ও সজীব সাহা। ফজলুল হক মুসলিম হলের নূরে আলম চৌধুরী শাওন, সিশিম, হাবিব, আরিফ ও আজিজুল।

শহীদুল্লাহ হলের নাজিউর রহমান রকি, তিনি এবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে জালিযাতির সাথে জড়িত এমন ২জন শিক্ষার্থীকে প্রক্টরের হাতে তুলে দিয়ে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন। এছাড়া কবির, তুহিন ও কাজল হতে পারেন হল কমিটির সভাপতি কিংবা সেক্রেটারি। অমর একুশে হলের আলোচিত নামগুলো হল তানজির, ওসমান গণি, লিমন (ভূগোল) ও এহসান।

মেয়েদের ৫ হলে আলোচিত যারা
মেয়েদের ৫টি হলে আলোচনার শীর্ষে আছেন ১৫ নেত্রী। এদের মধ্যে বেগম রোকেয়া হল থেকে এগিয়ে আছেন শরীয়তপুরের বি.এম. লিপি আক্তার ও মুন্সিগঞ্জের সাবরিনা ইতি। তারা দুজনেই ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে পা রেখেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতির আতুর ঘর মধুর ক্যান্টিনে। 

বি.এম লিপি আক্তার জানান, “ঈদের সময়ও গ্রামের বাড়ি যাইনি, ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছি। আশা করছি এই সম্মেলনে ত্যাগের মূল্যায়ন পাব।”

শামসুন্নাহার হলের এগিয়ে আছেন মাদারীপুরর সন্তান ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্রী জিয়াসমিন শান্তা , তুখোর বিতার্কিক ও চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী নিপু ইসলাম তন্বী, বরিশালের সন্তান ও সংস্কৃত বিভাগের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান মুন এবং মাগুরা জেলার লাবণ্য।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের বেনজির হোসেন নিশি ও শিরিন। কুয়েত মৈত্রী হলের ফরিদা পারভীন ও সুস্মিতা সেন।

বেগম সুফিয়া কামাল হল থেকে আলোচনায় আছেন রাজশাহীর মুনজেরিন রিমঝিম, ঝিনাইদহের ইফফত জাহান ইশা, নুরুন্নাহার সোমা, সম্পা ও নাজমুন সালেহিন তৃষ্ণা।

ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা চাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে যোগ্য ও মেধাবীদের দেখতে। দলে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমরা প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত ভাল ভাবে পরীক্ষা করেছি। পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সাহায্য নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের তথ্য নেয়া হবে। বিভিন্ন সময়ে যারা বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্কিত তাদেরকে কোন পদে রাখা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘যারা মনে প্রাণে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করেছে, যারা পরিশ্রশী, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়, নিয়মিত ছাত্র এবং মেধাবী ছাত্র তাদের মধ্য থেকেই হল কমিটি গঠন হবে। নিষ্ক্রিয় বা অপরিচিত কেউ চমক হিসেবে কমিটিতে স্থান পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

ঢাবি ছাত্রলীগের হল সম্মেলন ২৭ নভেম্বর

সোনালীনিউজ/ঢাকা/ জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!