• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঢাবির সুফিয়া কামাল হলে ‘সালোয়ার-গেঞ্জি’ নিষিদ্ধ!


ঢাবি প্রতিনিধি আগস্ট ২৪, ২০১৭, ১১:৪২ এএম
ঢাবির সুফিয়া কামাল হলে ‘সালোয়ার-গেঞ্জি’ নিষিদ্ধ!

ঢাবি: সালোয়ারের উপর গেঞ্জি পরিধান করাকে অশালীন পোষাক আখ্যায়িত করে হলের অভ্যন্তরে তা পরিধানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কবি সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২৩ আগস্ট) এক নোটিশের মাধ্যমে ছাত্রীদের বিষয়টি অভিহিত করে।

নোটিশে বলা হয়, ‘হলের অভ্যন্তরে দিনের বেলা অথবা রাতের বেলা কখনোই অশালীন পোশাক (সালোয়ার এর উপর গেঞ্জি) পড়ে ঘোরা ফেরা অথবা হল অফিসে কোন কাজের জন্য প্রবেশ করা যাবেনা। অন্যথায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য হল কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ছাত্রীদের হল হলেও সুফিয়া কামাল হলের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীই পুরুষ। মেয়েদের খোলামেলা পোশাকের কারণে তাদের মাঝে-মধ্যে লজ্জায় পরতে হয়। আর এ বিষয়টি মাথায় রেখেই হল কর্তৃপক্ষ পোশাকের উপর এ বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে।

তবে হলের ছাত্রীরা বলছেন, পোশাকের উপর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা মেয়েদের ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ। হলের অভ্যন্তরে মেয়েরা একটু খোলামেলা থাকবেই। গুটিকয়েক মেয়ে গেঞ্জি পড়লেও শালীনভাবেই চলাফেরা করে। তাই বলে এধরনের নোটিশ দেয়া ঠিক হয়নি। বিষয়টি এখন বাহিরের মানুষের কাছে হাস্যরসে পরিণত হয়েছে।

ছাত্রীরা বলেন, যদি পুরুষ কর্মচারীদের বিষয়টি বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে থাকে, তবে পুরুষদের বাদ দিয়ে শতভাগ নারী কর্মচারী নিয়োগ দিলেই তো হয়।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে নানা তর্ক-বিতর্ক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপেও এ নিয়ে অনেকে পোস্ট দিচ্ছেন।

প্রান্ত পলাশ নামে একজন লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুফিয়া কামাল হল কর্তৃপক্ষ মেয়েদের জন্য ড্রেসকোড নির্ধারণ করে দিয়েছে, নোটিশে তারা অশালীন পোশাকের উদাহরণ দিয়েছে ‘সালোয়ার-গেঞ্জি’। হল কর্তৃপক্ষ কতখানি গন্ডমূর্খ হলে সালোয়ার গেঞ্জিকে অশালীন বলে, তা আমার বোধগম্য নয়।’

তানজিলা ইসলাম নামে ঢাবির এক ছাত্রী লিখেন, ‘পোশাক অবশ্যই সচেতনতার সাথে পরা উচিত কিন্তু শারীরিক গঠনের সাথে মানানসই পোশাক পরাও জরুরী। সকল মানুষেরই স্থান-কাল-পাত্র ভেদে পোশাক পরা দরকার। এটা খুবই সিম্পল একটা ইস্যু। এখানে নারী-পুরুষ কিংবা ধর্ম অধর্ম নিয়ে টানাটানি করার কিছুই নেই। ব্যক্তিগত জায়গা থেকে প্রত্যেকে সচেতন ভাবে চলাফেরা করলেই হল। সেটা পোশাক হোক কিংবা অন্য কোন বিষয় হোক।’

নাজমুন তৃষা নামে আরেক ছাত্রী লিখেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেটা কিনা মুক্তবুদ্ধি চর্চার সেরা জায়গা সেখানে ভালই তামশা হচ্ছে। আমি কি ড্রেস পড়ব তা তো আমার ব্যাপার। আপনি বলার কে? আর আপনি একজন শিক্ষিত মানুষ হয়ে অশিক্ষিতের মত নিজের চরকায় তেল না দিয়ে মেয়েদের গেঞ্জি পেন্ট নিয়ে টানাটানি করেন কি হিসেবে!’

এ সম্পর্কে জানতে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে ফোন দেয়া হলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে লাইন কেটে দেন।


সোনালীনিউজ/ঢাকা/আকন

Wordbridge School
Link copied!