• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তফসিল ঘোষণা হলেই পাল্টে যাবে বিএনপি


নিজস্ব প্রতিবেদক এপ্রিল ১৯, ২০১৮, ০৯:৩৭ পিএম
তফসিল ঘোষণা হলেই পাল্টে যাবে বিএনপি

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার মুক্তি এবং সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন ধাপে ধাপে কঠোর করতে চায় বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, এখন বিভাগীয় সমাবেশ চলছে। এরপর জেলা পর্যায়ে হবে। তার পাশাপাশি চলবে লিফলেট বিতরণ। এসব কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে সম্পৃক্ত এবং নেতাকর্মীদের আরো ঐক্যবদ্ধ করে জোরদার আন্দোলনে যাবে দলটি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সময় এলেই কঠোর কর্মসূচি শুরু হয়ে যাবে। 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হওয়ার আগেই দলের নেতাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন খালেদা জিয়া। তার নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চলছে। তবে এতে কাজ না হলে বিএনপি কঠোর আন্দোলনে যাবে। তার আগে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে ধাপে ধাপে বিভাগীয় ও জেলা সমাবেশ এবং লিফলেট বিতরণের কর্মসূচি চলবে। 

তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়া- দুটোরই প্রস্তুতি আছে তাদের। আগেই বিএনপি দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের আভাস দিয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় দল একের পর এক অহিংস ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে যাচ্ছে। এসব কর্মসূচি দেশ-বিদেশ ও জনগণের সমর্থন পাচ্ছে। 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন ও পরবর্তী বছরে আন্দোলনের নামে দেশে যে জ্বালাও-পোড়াও হয়েছে তার দায় বিএনপির কাঁধে চাপানো হয়েছে। এবার যাতে তেমনটা না হয়, সেদিকে সতর্ক নজর রেখে এগুচ্ছে দল।

তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বলেন, খালেদা জিয়া বলেছিলেন ২০১৮ সাল হবে জনগণের বছর। তার এমন বক্তব্যে আশাবাদী হয়েছিলেন সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। তারা ধারণা করেছিলেন, ২০১৮ সালের শুরু থেকে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজা হওয়াতে বিএনপিই উল্টো চাপের মধ্যে পড়েছে। সরকার এখন রাজনীতিতে চালকের আসনে। এ নিয়ে হতাশা বাড়ছে বিএনপির তৃণমূলে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, দল এখন নিয়ন্ত্রকের ভূমিকাতেই আছে। বরং চাপে আছে সরকার। তারা মনে করেছিল, খালেদা জিয়াকে সাজা দিলে বিএনপি দুর্বল হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টোটা। এখন বরং দলের নেতাকর্মীরা বেশি ঐক্যবদ্ধ, যেটা অতীতে দেখা যায়নি। 

আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামের ধরন সম্পর্কে তিনি বলেন, বিভাগীয় ও জেলা সমাবেশের পর লিফলেট বিতরণ করা হবে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা তাতে তুলে ধরা হবে। একটা জনসভায় বড়জোর দুই-চার লাখ লোকের উদ্দেশে বক্তব্য রেখে তাদেরকে সচেতন করা হয়। অন্যদিকে লিফলেট ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে আরো বেশিসংখ্যক মানুষের সামনে সরকারের ব্যর্থতাগুলো তুলে ধরা যাবে। সামনে রোজা ও ঈদ আছে। তখন এই লিফলেট বিতরণ করা হবে। 

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের পথ শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক। সরকার এই পথ রুদ্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা অব্যাহত থাকলে জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী আন্দোলনের ধরন কী হবে। 

তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির পরিকল্পনা আছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় সমাবেশের পর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনসভা করার প্রস্তুতি চলছে। এসব কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেবেন। এর ফলে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত একটা সেতুবন্ধ রচিত হবে, যা দলকে আরো সুসংগঠিত করবে।

সোনালীনিউজ/জেএ

Wordbridge School
Link copied!