• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তারকাদের মতো চাহিদা বাড়ছে সেক্স রোবটের!


আন্তর্জাতিক ডেস্ক আগস্ট ২০, ২০১৭, ০৯:২৬ পিএম
তারকাদের মতো চাহিদা বাড়ছে সেক্স রোবটের!

ঢাকা: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই যুগে অসম্ভব বলে পৃথিবীতে সম্ভবত কিছুই থাকছে না। মানব দেহের বিভিন্ন কৃত্রিম অঙ্গ অবিষ্কার করে তা মানবদেহে প্রতিস্থাপন করে দিব্যি বেঁচে আছে মানুষ। তেমনি মানুষের যৌন চাহিদা মেটাতে অবিষ্কার হয়েছে সেক্স রোবট। এই রোবট দেখতে হুবহু মানুষের মতো।

সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো- মানুষের মতো তৈরি এই রোবটের চাহিদাও নাকি দিন দিন বাড়ছে! নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আসছে একের পর এক অর্ডার।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ট্রু কম্পেনিয়ন জানিয়েছে, কাস্টমারদের কাছ থেকে বিশ্বের বিখ্যাত সব তারকাদের আকৃতিতে সেক্স রোবট তৈরির অর্ডারও পাচ্ছেন তারা। আর এই তালিকায় বেশি এগিয়ে আছেন প্রয়াত মার্কিন অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো। এছাড়া অনেকেই তাদের মৃত স্ত্রীদের মতো করে সেক্স রোবট তৈরির অর্ডার দিচ্ছেন।

ডগলাস নামে ট্রু কম্পেনিয়নের এক প্রকৌশলী  জানান, ক্রেতাদের একটি বড় অংশ চাইছে প্রয়াত মার্কিন অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো মতো করে তাকে যেন একটি সেক্স রোবট তৈরি করে দেয়া হয়। তিনি বলেন, যদিও ক্রেতারা চাইছে ওই অভিনেত্রীর মতো রোবট তৈরি করে দেয়া হোক। তবে এক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা আছে। এ ধরনের সেক্স রোবট নির্মাণের জন্য যথার্থ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে। তাই ক্রেতাদের অর্ডার প্রত্যাখ্যান করতে হচ্ছে তাদের।

ডগলাস আরো বলেন, ‘আমরা মেরিলিন মতো করে সেক্স রোবট তৈরির অর্ডার বেশি পাচ্ছি। কিন্তু বড় সমস্যা হচ্ছে তার রোবট তৈরি করতে হলে তার উত্তরসূরিদের অনুমতি লাগবে।’

বর্তমানে সেক্স রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ‘অ্যানড্রয়েড লাভ ডল’, ‘সেক্স বোট’ এবং ‘ট্রু কম্পেনিয়ন’ নামে বিভিন্ন ধরনের সেক্স রোবট নির্মাণ করছে। প্রথমেদিকে রোবটগুলোকে মানুষের মতো করে তৈরি করা হেয়ছে। তবে বর্তমানে এগুলোকে চলাচলযোগ্য ও কথা বলার মতো করে তৈরি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে অ্যাবাইস ক্রিয়েশন্স।

তারা ইতিমধ্যে ‘রিয়েল ডল’ নামের একটি সেক্স রোবট তৈরি করেছে এবং এই বছরের শেষের দিকে ‘হারমোনি’ নামে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন আরেকটি সেক্স ডল উন্মুক্ত করবে। যে রোবটটি মাথা নাড়াচাড়া করতে পারবে, চোখ নাড়াতে পারবে এবং অ্যাপস ব্যবহার করে কথাও বলতে পারবে।

যদিও সেক্স রোবট তৈরির প্রথম দিকে এর ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল। কারণ এসব রোবট তৈরি করতে একদিকে যেমন অনেক ব্যয় বহুল, তেমনি অন্যদিকে এটি বাজারে আনতে নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। তবে এসবের পরেও হাল ছাড়েনি অ্যাবাইস ক্রিয়েশনস।

অ্যাবাইস ক্রিয়েশনসনের তৈরি হারমনি নামক রোবটটি নাচতে পারে, আবেদময়ী ভঙ্গিতে তাকাতে পারে, এমনকী আপনাকে ভ্রুকুটিও করতে পারবে সে। শুধু তাই নয়, এই রোবটের গল্প, মিউজিক, মুভি এবং বই নিয়ে গল্প করার ক্ষমতা আছে। এমনকি কৌতুকও বলতে পারে এই যন্ত্রমানবী। তাছাড়া মনে রাখতে পারবে আপনার জন্মদিন, আপনি কী খেতে পছন্দ করেন, আপনার ভাইবোনের নাম। আর সঙ্গে যখন খুশি তখন যৌনতা তো থাকছেই। এরপরও এটিকে এখন পর্যন্ত ঠিক ‘সেক্স রোবটে’ রূপ দেয়া যায়নি।

অবশ্য অনেক দিন ধরেই সেক্স রোবট বা সেক্স ডল নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এ ধরনের জিনিস শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন বাড়াবে।

এ বিষয়ে গবেষক ও অধ্যাপক নোয়েল শার্কি বলেন, সব ধরনের সেক্স রোবটের প্রভাব সম্পর্কে পুরো সমাজকে ভালোভাবে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। এ বিষয়ে বেশকিছু পরামর্শও দিয়েছে তার ‘ফাউন্ডেশন রেসপন্সিবল ফর রোবটিকস’ নামের প্রতিষ্ঠান।

শার্কি বলেন, বর্তমানে গুটি কয়েক প্রতিষ্ঠান তৈরি করছে সেক্স রোবট। তবে আসন্ন রোবট বিপ্লব এই পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারে। ‘আওয়ার সেক্সুয়াল ফিউচার উইদ রোবট’ নামের ওই প্রতিবেদনে এই রোবটের ভবিষ্যৎ সমস্যা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। তবে বর্তমানে কত লোক সেক্স রোবট ব্যবহার করছে- সে সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি শার্কি। কারণ প্রতিষ্ঠানগুলো এই সংখ্যা প্রকাশ করে না।

শার্কির প্রতিবেদনের সঙ্গে সহমত পোষণ করে যুক্তরাজ্যের ডি মন্টফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবট এথিকস বিভাগের ড. ক্যাথলিন রিচার্ডসন মনে করেন, শিশু সেক্স রোবট নিষিদ্ধ করা উচিৎ। তবে সব ধরণের সেক্স রোবট নিষিদ্ধের দাবি তোলা ঠিক না।

তিনি বলেন, ‘এখানে প্রধান সমস্যা রোবটগুলো নয়; সমস্যা যৌন বাণিজ্য। সেক্স রোবট আসলে এক ধরনের পর্নগ্রাফি।’ শিশু সেক্স রোবট দিয়ে শিশু পর্নগ্রাফি তৈরি হবে বলেও আশঙ্কা আছে।

তিনি আরো মনে করেন, মানুষের মধ্যে সামাজিক বিচ্ছিন্নতা বাড়াবে এই সেক্স রোবট। সেক্স রোবট হচ্ছে এমন রোবট যার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন সম্ভব। এর মধ্যে এমন এক ধরণের ডিভাইস আছে যার মাধ্যমে সেক্স রোবটটি তার সঙ্গীকে সত্যিকার যৌন সুখ দিতে সক্ষম।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন সম্পর্ক বিষয়ক গবেষক শেলি রোনেন জানান, রোবটটি যাতে মানুষের মধ্যে যৌন অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে সেজন্য অনেক কিছুই ইতিমধ্যে আবিষ্কৃত হয়েছে। এর মাধ্যমে হয়তো তাদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কও স্থাপন করা যেতে পারে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School

আন্তর্জাতিক বিভাগের আরো খবর

Link copied!