• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

তারেক-বাবরের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন


আদালত প্রতিবেদক জানুয়ারি ১, ২০১৮, ০১:৫৫ পিএম
তারেক-বাবরের মৃত্যুদণ্ডের আবেদন

ফাইল ছবি

ঢাকা: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। সোমবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী লুৎফর জামান বাবরসহ ৪৯ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।     

হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের চাঞ্চল্যকর মামলা দু’টির বিচারকাজ চলছে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে স্থাপিত ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের অস্থায়ী আদালতে।

হত্যা মামলায় ৫২ জন আসামির মধ্যে ৩ জনের অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামি সংখ্যা ৪৯ জন। অন্যদিকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলাটির আসামি ৪১ জন থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮ জনে। হত্যা মামলার ১১ জনকে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলার অভিযোগের দায় থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল অভিযোগ (চার্জ) গঠনের সময়।

আসামিদের মধ্যে ২০১৫ সালের ২১ নভেম্বর রাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক মন্ত্রী জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ এবং গতবছরের ১২ এপ্রিল রাতে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ৩ জনকে হত্যার দায়ে মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী শরীফ শাহেদুল বিপুলের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

হত্যা মামলার ৪৯ আসামির মধ্যে ২৩ জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে, ৮ জন জামিনে ও বাকি ১৮ জন পলাতক আছেন।
জামিনে থাকা আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক তিন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী, মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডি’র সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান ও এএসপি আব্দুর রশীদ এবং সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম।

গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন- বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন।

পলাতক আসামিরা হলেন- বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কাজী শাহ মোফাজ্জেল হোসেন কায়কোবাদ, হানিফ পরিবহনের মালিক মোহাম্মদ হানিফ, ডিজিএফআইয়ের সাবেক দুই পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এ টি এম আমিন আহমদ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দার, বিএনপির সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর দুই ভাই বাবু ওরফে রাতুল বাবু ও হরকাতুল জিহাদ বাংলাদেশের (হুজি-বি) শীর্ষ নেতা মাওলানা তাজউদ্দিন, জঙ্গিনেতা শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই, মাওলানা আবু বকর, ইকবাল, খলিলুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে বদর ও মাওলানা লিটন ওরফে জোবায়ের ওরফে দেলোয়ার, দুই জমজ জঙ্গি সহোদর আনিসুল মোর্সালিন ও মুহিবুল মুক্তাকীন এবং পুলিশের সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান, ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন উপ-কমিশনার (পূর্ব) ও উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) ওবায়দুর রহমান।

মামলার আটজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন- মুফতি হান্নান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে অভি, শরীফ শাহেদুল আলম বিপুল, মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডা. জাফর, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, জাহাঙ্গীর আলম, আরিফ হাসান সুমন ও রফিকুল ইসলাম সবুজ।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের জনসভায় সন্ত্রাসীরা ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। আহত হন শতাধিক নেতাকর্মী।

এ ঘটনায় মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় পৃথক তিনটি এজাহার দায়ের করেন।

মামলাটিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন ২২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রথম চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ওই বছরের ২৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন ট্রাইব্যুনাল। ২০০৯ সালের ৯ জুন পর্যন্ত ৬১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।

২০০৯ সালের ০৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ২০১১ সালের ০৩ জুলাই অধিকতর তদন্ত শেষে তারেক রহমাসসহ আরও ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ফলে মোট আসামি দাঁড়ায় ৫২ জনে।

২০১২ সালের ১৮ মার্চ সম্পূরক চার্জশিটের ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের করার পর ফের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সব মিলিয়ে মামলার রাষ্ট্রপক্ষের মোট ৪৯১ জনের মধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন ২২৫ জন সাক্ষী।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এআই

Wordbridge School
Link copied!