• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
হাসিনা-মমতা রুদ্ধদ্বার বৈঠক

তিস্তা জট খোলার আশা


নিউজ ডেস্ক মে ২৭, ২০১৮, ০১:৩০ এএম
তিস্তা জট খোলার আশা

ঢাকা : চল্লিশ মিনিটের বৈঠকে খুলতে পারে তিস্তা জট। তিস্তা জট খোলার আগে কেন্দ্রের সঙ্গে মমতার সংঘাতের বিষয়টিও আরো স্পষ্ট হয়ে উঠল। হাসিনা-মমতা বৈঠকে অন্তত কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে একগাল নালিশ শুনতে হয়েছে হয়তো বঙ্গবন্ধুকন্যা হাসিনাকে। যদিও একদম ব্যক্তিগত সেই নালিশ।

বাংলাদেশ-ভারত তথা দুই বাংলার সম্পর্কের ওপর যারা নজর রাখেন তাদের অনেকেই বলছেন, হাসিনা-মমতার বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন, সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পাওয়ার সঙ্গে এই বৈঠকটি বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ ট্রেক টু ডিপ্লোমেসির সুফল বলেও মনে করছেন তারা। এ বৈঠকের ফলে তিস্তা ইস্যু সমাধানে অনেক এগিয়ে গেলেন হাসিনা।

অন্যদিকে ঢাকার সঙ্গে সুসম্পর্ক বাড়িয়ে মোদিকেও রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করার সুযোগ তৈরি হলো। বৈঠকে অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো অত্যন্ত গোপনীয় থাকায় সুনির্দিষ্টভাবে এই বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেনি কোনো সূত্র। তবে বৈঠকের বিষয়বস্তু নিয়ে মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যের মধ্যে কিছুটা আভাস পাওয়া গেছে।  

এতে ধারণা করা হচ্ছে, বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন ইস্যু, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সীমান্তের রাস্তা চওড়া, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ এবং সুন্দরবন রক্ষায় দুই বাংলার সমন্বিত উদ্যোগের পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় নানা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।

শনিবার (২৬) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৬টা ৪০ পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের একটি পাঁচতারকা হোটেলের ২২৯ নম্বর কক্ষে বহুল আলোচিত হাসিনা-মমতা রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়। প্রায় অনানুষ্ঠানিক বলা হলেও ভারতের নিযুক্ত বাংলাদেশের কূটনীতিকরা এ বৈঠকের রূপকার বলেই দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। আর এ বৈঠকের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের দুজন মন্ত্রীর ভূমিকাও নিয়ে প্রশংসা করছেন বাংলাদেশের কূটনীতিকরা। কারণ ওই মন্ত্রীরাই হাসিনার সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে কথা বলেছিলেন বলে জানা গেছে।

বৈঠকের বাইরে একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, অন্তত তিন বছরের জন্য একটি চুক্তিতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওই সময়ে তিস্তার পানিপ্রবাহের গতি-প্রকৃতির ওপরই পরবর্তী একটি দীর্ঘস্থায়ী চুক্তির প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গেছেন মমতা ব্যানার্জি।

বৈঠক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছু না বললেও বৈঠক সেরে কালীঘাটের নিজের বাড়ি ফেরার পথে হোটেলের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের মমতা ব্যানার্জি বলেন, আমাদের কিছু চাওয়ার নেই। আমরা বরাবরই দুই বাংলার সম্পর্কে বিশ্বাস করি- সেই সম্পর্ক আছে এবং থাকবে। মমতা বলেন, সীমান্ত সমস্যা, বাণিজ্যিক বিষয় ছাড়াও শিক্ষা, সংস্কৃতি নিয়েও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে মমতা বলেন, তিনি যখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন তখনো যেমন সম্পর্ক ছিল, এখনো একই সম্পর্ক আছে।
মমতা এ সময় বলেন, কলকাতা বঙ্গবন্ধু ভবন করার ইচ্ছা আছে। ঢাকায় একটা অরবিন্দ ভবন করার ব্যাপারেও কথা হচ্ছে।

বৈঠক শেষে হোটেলের লবি পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে এগিয়ে দেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এ সময় মমতা ব্যানার্জিও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গীদের উদ্দেশ করে বলেন, হাসিনাদি অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করেন। আবার এ ধরনের সফর করেন। আপনারা ওনাকে এত কাজ করতে দেবেন না। একটু শরীরের দিকে খেয়াল রাখবেন। মমতা ব্যানার্জির এ আবেগি কথা শুনে স্নেহের হাসি হাসেন বাংলাদেশের জননেত্রী শেখ হাসিনা।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!