• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

তৃণমূলকে পাত্তা না দেয়ায় ডুবেছে অনেক নৌকা


মেহেদী হাসান ডিসেম্বর ৩১, ২০১৬, ০৭:৫১ পিএম
তৃণমূলকে পাত্তা না দেয়ায় ডুবেছে অনেক নৌকা

ঢাকা: দেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতাকর্মীদের দলের প্রাণ হিসেবে মনে করলেও মাঠ পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন চোখে পড়ে না। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে আবারো তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তৃণমূলকে মূল্যায়ন না করায় পরাজয় বরণ করতে হয়েছে অনেক দলীয় মনোনীত প্রার্থীকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃণমূল নেতাকর্মীরাই দলকে এগিয়ে যায়। তাদের উপেক্ষা করে কখনও কোনো নেতা জনপ্রিয় হতে পারেনি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা তৃণমূলকে আমলে না নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তকে অনেক বড় মনে করেছেন তাদেরই ভরাডুবি হয়েছে।

সূত্রমতে, দেশের অন্তত ৩০ জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন অর্ধশত। এর মধ্যে ১২ জেলায় বিজয়ী হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। বাকি যে ২১ জেলায় সরকার দলীয় প্রার্থীদের প্রাণপণ লড়াই করেই জিততে হয়েছে। আর যেসব প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন তাদের সীমাহীন ক্যালরি খরচ করতে হয়েছে বিদ্রোহীদের ম্যানেজ করতেই। তাদের বাগে আনতে না পারলে পরিস্থিতি পাল্টে যেত বলেই মনে করেন তারা।

এমন নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার জন্য তৃণমূলে কোন্দল ও নেতায় নেতায় দ্বন্দ্বকে দায়ী করা হচ্ছে। দলীয় মনোনয়নধারীদের পরাজয়ের পেছনে পরোক্ষ হাত রয়েছে অনেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের। এমন অভিযোগ ‍তৃণমূল নেতাদের।

এ প্রসঙ্গে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মনোনয়নপ্রাপ্তদের পক্ষে কাজ না করে অনেক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে যারা দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন তাদের নিশ্চিয়ই শাস্তি পেতে হবে।

তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী কিছু নেতা তাদের পাত্তাই দেন না। বিশেষ করে জেলা, উপজেলা পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ অন্য নেতাদের সঙ্গে এমপিদের দূরত্ব অনেক বেশি। তাছাড়া ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সবাই নিজের অবস্থানে অনড়। কি এমপি, কি মন্ত্রী কিংবা জেলা সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক সবাই এক একটি গ্রুপের কর্ণধার। প্রত্যেক জেলা উপজেলায় তাই ব্যাঙের ছাতার মতো জন্ম নিয়েছে হাফ ডজন করে গ্রুপ।

শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, অনেকেই আছেন যারা ক্ষমতা পেলেই পছন্দের গুটিকয়েক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে গ্রুপ করে ফেলেন। যা এক সময় প্রতিপক্ষ কোনো রাজনৈতিক নেতার জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

জেলা নেতাদের অভিযোগ, নির্বাচনে জেলা দলের পক্ষ থেকে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল কেন্দ্র তাদের অনেককেই মনোনয়ন দেয়নি। অথচ প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের মতামত নেয়া ছিল গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, তারাই ভালো জানেন কার জনপ্রিয়তা কেমন। এ ক্ষেত্রে তাদের তোয়াক্কা না করেই কেন্দ্রীয় নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। এ কারণে তৃণমূলের অনেক নেতাই চলে গেছেন বিদ্রোহীদের পক্ষে।

আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগকে ধরে রেখেছে এর তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারাই দলের প্রাণ। এদেশে সব সংগ্রাম, উন্নয়ন এবং সমস্ত অর্জন জনগণ এবং তাদেরই পরিশ্রমের ফল।

একথা স্মরণ করে দিলে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা তৃণমূলকে শক্তিশালী করছি। তাদের আমরা উন্নয়নের সঙ্গী করতে চাই। 

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!