ঢাকা : আগামী নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম ব্যবহার হচ্ছে না। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের যে রোডম্যাপ (কর্মপরিকল্পনা) চূড়ান্ত হয়েছে তাতে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
রোববার (০৯ জুলাই) এই কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করে নির্বাচন কমিশন। এই কর্মপরিকল্পনায় ৭ ধরনের কাজকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ৩১ জুলাই থেকে সংলাপ শুরু হবে। রোববার বিকালে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে ইসি সচিব মো. আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশন (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে কমিশন বৈঠকে অন্যান্য কমিশনার ও ইসি সচিব উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর রোডম্যাপ চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘একদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে, কমিশন সেটা চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। কর্মপরিকল্পনায় ৭ ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে। এই কাজ করতে ৪ জন কমিশনারের নেতৃত্বে ৪টি কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৭টি কাজের মধ্যে রয়েছে- আইনি কাঠামোগুলো পর্যালোচনা ও সংস্কার, কর্ম-পরকিল্পনার ওপর পরার্মশ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকার নির্বাচনি সীমানা পুনঃনির্ধারণ, জাতীয় পরচিয়পত্র প্রস্তুতকরণ ও বিতরণ, ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনতৈকি দলের নিবন্ধন ও নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা এবং নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ।’
সংলাপ প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, ‘জুলাই মাস থেকেই সংলাপ শুরু হবে। আগে ৩০ জুলাই সংলাপের চিন্তা হলেও ওই দিন সিইসি লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন। পরদিন ৩১ জুলাই বিকাল ৩টায় সুশীল সমাজের সঙ্গে সংলাপ হবে। আমরা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আগস্ট থেকে অক্টোবরের মধ্যে সংলাপ করব।’
এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘কোনও বিষয়েই খুটিনাটি কর্মপরিকল্পনায় নেই। যে কমিটি যে কাজ করবে, ওই কমিটিই ওই বিষয়টি চূড়ান্ত করবে। আগামী সপ্তাহে সংলাপের সময়সীমা চূড়ান্ত করা হবে। ১৬ জুলাই এই কর্মপরিকল্পনাটি বই আকারে প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি জানান।
নির্বাচন কবে হবে জানতে চাইলে ইসি সচিব জানান, ‘নির্বাচন কবে হবে, তা কর্মপরিকল্পনায় নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। বর্তমান সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারি। তার আগের ৯০দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
এর আগে গত ২৩ মে সাতটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের খসড়া রোডম্যাপের ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানালেও রোডম্যাপে বহুল আলোচিত ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি বাদ দেয়া হয়। রোডম্যাপের খসড়া ঘোষণাকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) খান মো. নূরুল হুদা বলেছিলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা না পেলে আমরা আগামী নির্বাচনে কোনোভাবেই ইভিএম ব্যবহারে যাবে না কমিশন। তবে এর প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো সবার কাছে উপস্থাপন করা হবে। দলগুলো একমত না হলে ইভিএম চাপিয়ে দেয়া হবে না। ইভিএম বিষয়ে কমিশন কোনো ধরনের রিস্ক নেবেন না বলেও জানিয়েছিলেন সিইসি। চূড়ান্ত রোডম্যাপে সেই খসড়া প্রস্তাবের প্রতিফলন ঘটেছে।
সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে যেকোনো দিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এ হিসেবে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর থেকে ২০১৯ এর ২৮ জানুয়ারির মধ্যে দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা বেশি বলে সূত্রে জানা গেছে।
সোনালীনিউজ/এমটিআই
আপনার মতামত লিখুন :