• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

দল ও সরকার আলাদাকরণের প্রক্রিয়া শুরু


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ৩১, ২০১৬, ১২:৩৮ পিএম
দল ও সরকার আলাদাকরণের প্রক্রিয়া শুরু

সরকার ও দলকে আলাদাকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দলের ২০তম কাউন্সিলের মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া নতুন করে শুরু হয়েছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সরকার পরিচালনা করবেন। আর সংগঠন শক্তিশালী করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার ও দলে গতিশীলতা আনতেই এটা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।

তারা বলছেন, এ সম্মেলনের মাধ্যমে সরকারের দায়িত্বে থাকা মন্ত্রীদের প্রভাব কমানো হয়েছে। এভাবে পর্যায়ক্রমে দল ও সরকার আলাদা করতে চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন। ১৯৭৪ সালের ১৮-২০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ১৪তম কাউন্সিলে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা বঙ্গবন্ধু দলের পদে আসেননি। এ কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন এএইচএম কামারুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক হন তাজউদ্দীন আহমদ।

আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে ৮১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির ৭৪ জন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতার নাম ইতিমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে।

নতুন কমিটিতে বাদ পড়েছেন তিন মন্ত্রী ও চারজন প্রতিমন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ছিলেন গত কমিটির অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ছিলেন গত কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক ও ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ছিলেন গত কমিটির সদস্য। এবার দলে তাদের জায়গা হয়নি। প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে বাদ পড়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং। তিনি আওয়ামী লীগের গত কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, জুনাইদ আহমেদ পলক, অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাভেদ গত কমিটিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য থাকলেও নতুন কমিটিতে নেই।

এ ব্যাপারে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নতুন কমিটিতে সাতজন মন্ত্রীকে দল থেকে বাদ দেয়ার মাধ্যমে দল ও সরকার আলাদা করার প্রক্রিয়া চলছে।’ তবে তিনি সুকৌশলে দল ও সরকার উভয় জায়গায়ই থাকার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এবারের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হচ্ছে। দলের নেতারা যেন সাংগঠনিক কাজে পুরোপুরি সময় দিতে পারেন, এ জন্য মন্ত্রীদের দলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে যারা দলে জায়গা পাননি, তাদের মন্ত্রিসভায় স্থান দেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে দলটির সূত্রগুলো।

শুক্রবার সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠক শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, শিগগিরই মন্ত্রিসভায় রদবদল আনা হবে।

এদিকে সুজন (সুশাসনের জন্য নাগরিক) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার আওয়ামী লীগের এই উদ্যোগকে ইতিবাচকভাবেই দেখছেন। গত রোববার তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এটি একটি ভালো দিক। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে নির্বাচনী ইশতেহার দিয়েছে। এতে জনগণের কাছে তারা বেশ কিছু অঙ্গীকারও করেছে। সে অনুযায়ী কাজও করছে। এখন সব নেতা যদি মন্ত্রিসভায় থাকেন, তাহলে দলের কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটে। এতে দল গতিশীল থাকে না। পাশাপাশি নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণে ব্যাঘাত ঘটলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশও।’

তিনি বলেন, ‘দল ও সরকার এক থাকলে জবাবদিহিতা কম থাকে। এই উদ্যোগে দল ও সরকারের জবাবদিহিতার পথ আরো সুগম হবে।’

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!