• ঢাকা
  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

দলীয় সরকারে শক্তিশালী ইসিও অসহায়


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ৯, ২০১৬, ০৯:৩৯ পিএম
দলীয় সরকারে শক্তিশালী ইসিও অসহায়

ঢাকা : নির্বাচন কমিশন যত শক্তিশালীই হোক না কেন, প্রশাসন ও দলীয় সরকারের অধীনে থাকলে তারা ‘অসহায়’ হয়ে যায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। আর এ কারণেই বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ‘নির্দলীয় একটি সহায়ক সরকার’-এর দাবি করে আসছে বলে জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন, প্রধানমন্ত্রীর তা মেনে নেয়ার ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার জন্য, নিরপেক্ষ করার জন্য এবং শক্তিশালী করার জন্য কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা খুশি যে সরকারপ্রধানও বলেছেন, রাষ্ট্রপতি যেটা বলবেন, তারা সেটা মেনে নেবেন।

মওদুদ আহমেদ বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু কোনো সরকারের অধীনে কীভাবে নির্বাচন হলে ইসি সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারবে, দ্বিতীয় পদক্ষেপে তা ঠিক করতে হবে। প্রশাসন যদি দলীয় সরকারের অধীনে থাকে এবং সমস্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি তাদের অধীনে থাকে, তাহলে আমাদের অভিজ্ঞতা হলো, সেখানে নির্বাচন কমিশন অসহায় হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন যতই শক্তিশালী করা হোক না কেন, তারা স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারবে না। সেজন্য আমাদের প্রস্তাবে ‘নির্দলীয় একটি সহায়ক সরকার’-এর কথা আমরা বলেছি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্য একটি সহায়ক সরকার থাকতে হবে।

২০১২ সালে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ‘সার্চ কমিটির’ মাধ্যমে গঠিত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আগামী ফেব্র“য়ারিতে শেষ হচ্ছে। নতুন ইসি গঠনে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নতুন যে কমিশন দায়িত্ব নেবে, তার অধীনেই ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আর বিএনপি দীর্ঘদিন ধরেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো একটি ব্যবস্থা সংবিধানে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছে।

এদিকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে গত ৮ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, রাষ্ট্রপতি উদ্যোগ নিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আলাপ-আলোচনা করবেন। সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে তিনি যেভাবে চাইবেন, সেভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। রাষ্ট্রপতি কী করেন, সেটা আমরা দেখব এবং সেইভাবে আমরা মেনে নেব।

অন্যদিকে শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) স্বাধীনতা ফোরামের আলোচনা সভায় ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় মওদুদ বলেন, এখন আমাদের রাষ্ট্রপতির ওপরে অনেক কিছু নির্ভর করছে। আমরা আশা করব, তিনি (রাষ্ট্রপতি) এমন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করবেন, যাতে আমরা যেসব  প্রস্তাব দিয়েছি, সেসব বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করার সুপারিশ তিনি করেন।

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইচএম

Wordbridge School

আরও পড়ুন