• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দামে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা, বিক্রিও হচ্ছে


নিজস্ব প্রতিবেদক আগস্ট ২০, ২০১৮, ০৯:৫৩ পিএম
দামে খুশি ক্রেতা-বিক্রেতা, বিক্রিও হচ্ছে

ঢাকা: ঈদের বাকি আর মাত্র একদিন। বুধবার (২২ আগস্ট) পবিত্র ঈদুল আযহা। ফলে পুরোদমে জমে উঠেছে রাজধানীর পশুর হাটগুলো। পশুর দাম গতবারের চেয়ে বেশি হলেও সহনীয় পর্যায়ে। ফলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় খুশি। গত কয়েকদিন হাটগুলো বেচা-কেনা কম হলে সোমবার (২০ আগস্ট) থেকে প্রচুর বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। হাটে এখন যারা যাচ্ছেন তারাই পছন্দের কোরবানির পশু কিনে ফেলছেন।  

সরেজমিনে রাজধানীর পশুর হাটহুলোতে দেখা গেছে, প্রচুর বিক্রি হচ্ছে কোরবানির পশু। তবে এরমধ্যে গরুই বেশি বিক্রি হচ্ছে। এরপাশাপাশি ছাগল ও মহিষও বিক্রি হচ্ছে। আর ঈদ হওয়ায় হাটগুলোতে বাড়ছে ক্রেতা সমাগম। ক্রেতা সমাগম বেশি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা। সোমবার (২০ আগস্ট) সকালের দিকে কিছুটা কম থাকলেও, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাটগুলোতে বাড়ে, বেচা-বিক্রি।

হাট ঘুরে আরো দেখা গেছে, এবারের কোরবানির হাটে দেশীয় গরুর সংখ্যাই বেশি। ক্রেতাদের কাছে দেশি গরুর চাহিদা বেড়েছে। তবে ভারতীয় গরুও রয়েছে। ব্যাপারিরা জানিয়েছে, মাঝারি আকারের গরুর চাহিদাই বেশি বলে। হাটে প্রচুর গরু রয়েছে। এখনও ট্রাক ভর্তি গরু আসছে হাটগুলোতো।

ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম একটু বেশি হলেও সহনীয় রয়েছে। তবে ব্যাপারীরা বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার পশু পালনে খরচ বেশি। খাদ্য, ওষুধ, পরিবহন ও রাস্তার খরচ মিলে পশুর দাম বেশি পড়েছে।

সোমবার (২০ আগস্ট) সকাল থেকেই রাজধানীর হাটগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। চলছে ক্রেতা-বিক্রেতার দর কষাকষি। অনেকেই শেষ মুহূর্তে কিছুটা কম দামের অপেক্ষায় আছেন। বিক্রেতাদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। কেউ এই মুহূর্তেই বিক্রি করে দিচ্ছেন। আবার কেউ আরও কিছুটা সময় দেখতে চাইছেন।

রাজধানীর গোলাপবাগ হাটে গিয়ে দেখা গেছে, একের পর এক গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন মানুষ। বের হওয়ার পথে অবস্থান করে দেখা গেল মাঝারি আকারের গরুই বেশি বিক্রি হচ্ছে। রাজধানীর শনিরআখড়া পশুর হাটে সকাল থেকেই ক্রেতার ভিড় দেখা গেছে। বেপারিদের সঙ্গে দরদাম চলছিল তাদের। জয়পুরহাট থেকে নজরুল ইসলাম ১৫টি গরু নিয়ে এসেছেন শনিরআখড়ার হাটে। এর মধ্যে রোববার রাতে ৩টি বিক্রি হয়েছে। সোমবার সকালে বিক্রি হয়েছে আরো দুটি। বাকিগুলো আজকের মধ্যে বিক্রি হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা অনেক। ১৫টা আনছি। এখন আছে ১০টা। তিনি বলেন, ‘আমি গতবারও ৯টা গরু নিয়ে আসছিলাম। দাম বেশি নিয়া লাভ নেই। পোষাইলে বিক্রি করে দিচ্ছি। এবারের ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে ঢাকায় মোট ২৫টি পশুর হাট চূড়ান্ত করেছে দুই সিটি করপোরেশন।

এদিকে, রাজধানীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট গাবতলীতেও পুরোদমে জমে উঠেছে হাটের বেচাকেনা। হাটের সম্প্রসারিত অংশও বিপুলসংখ্যক গরুতে পূর্ণ। কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র একদিন। গাবতলী পশুর হাটে ছোট ও মাঝারি গরু বেচাকেনা তুঙ্গে। এসব গরুর দাম দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত উঠছে। হাটের প্রবেশপথে বিশাল আচ্ছাদনের নিচে রাখা হয়েছে বড় গরু। উৎসুক মানুষের ভিড় সেখানেও। তবে সবাই বড় গরু দেখছে কিন্তু কেনার তেমন মানুষ নেই! বিশালদেহী সুদর্শন গরু ‘কালা মানিকের’ও ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না ব্যাপারী। গত বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়ার হালশা গ্রাম থেকে গরুটি এসেছে।  কালা মানিকের দাম হাঁকা হচ্ছে ২০ লাখ।

প্রথমদিকে দুই-একজন ক্রেতা ১১ লাখ টাকা দাম দিতে চাইলেও এখন আর দাম উঠছে না কালা মানিকের। ব্যাপারী দুলাল বলেন, বড় গরু কেউ নিচ্ছে না। প্রথম ১১ লাখ দাম বলেছে এখন কেউ দামই বলে না।

গাবতলী পশুর হাটগাবতলী হাট ঘুরে দেখা গেছে, বড় গরুর ডেরাগুলো বিশালাদেহী গরুতে পরিপূর্ণ রয়ে গেছে। এতে করে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বড় গরুর ব্যাপারীদের কপালে। বগুড়ার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম একটি বিশালদেহী গরু হাটে তুলেছেন। আনুমানিক ১৮ মণ মাংস হবে গরুটির। শফিকুল আশা করেছিলেন অন্তত ৬ লাখ টাকা দাম হবে তার গরুর। এখন অবধি দাম উঠেছে মাত্র দুই লাখ টাকা। নাটোরের গুরুদাশপুরের আরেক ব্যাপারী দুটি বড় গরু হাটে তুলেছেন। কিন্তু ক্রেতারা তার আকাঙ্খিত দামের ধারে কাছেও ভিড়ছেন না। গাড়ি ভাড়া, হাট খরচা ও খাওয়া দিয়ে পাঁচদিনে ৩০ হাজার টাকা খরচ করেছেন ওই ব্যাপারী।

মানিকগঞ্জের মজিবুর ব্যাপারী হাটে মোট চারটি গরু তুলেছেন। এর মধ্যে দুটি ছোট ও দুটি বড়। ছোট দুটি গরু লাভে বিক্রি করেছেন। কিন্তু বড় গরুর দাম হাঁকেননি কেউই। মজিবুর বলেন, আমি দুইটা বড় গরুর দাম কইছি ১২ লাখ। কিন্তু এখনও কেউ কিছু বলছে না।

এদিকে, রাজধানীর কোরবানির পশুরহাটগুলোতে ২৪ ঘণ্টার জন্য পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সবমিলে প্রায় ২ হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পশুরহাটে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন, মানি এসকর্ট টিম, ওয়াচ টাওয়ার, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা, ইজারাদারদের স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ এবং ট্রাফিক সিস্টেমে শৃংখলা আনা হয়েছে।

সোনালীনিউজ/এমএইচএম

Wordbridge School
Link copied!