• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দারিদ্র্য দূরীকরণে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ১০, ২০১৬, ১২:৫৫ পিএম
দারিদ্র্য দূরীকরণে সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন

একটি জাতির এগিয়ে যাওয়ার দৌড়ে দারিদ্র্য একটি বড় বাধা। সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে যে পরিহাস করেছিলেন, তা ভোলার নয়। দারিদ্র্যের কষাঘাতে শুধু ব্যক্তিই নয়, পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রের অবস্থাও সঙ্গিন হয়ে পড়ে। পৃথিবীতে দরিদ্র দেশের সংখ্যা কম নয়। ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়। এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বে প্রতিরাতে প্রায় ৮০ কোটি লোক ক্ষুধার্ত অবস্থায় ঘুমাতে যায়। এবং ১৯০ কোটি লোক পুষ্টিহীনতায় ভোগে। যদিও পুষ্টি ইতিমধ্যেই একটি সর্বজনীন ইস্যু হিসেবে বিবেচিত, যা নিশ্চিত করার দায়িত্ব খোদ রাষ্ট্রের। অপুষ্টির ভয়াবহতা ঠেকাতে রাষ্ট্রগুলো জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ না নিলে আগামী ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বের অর্ধেক মানুষ অপুষ্টির শিকার হতে পারে বলে জানানো হয়েছে রোমে অনুষ্ঠিত পুষ্টিবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষুধা ও স্থূলতা দুটিই অপুষ্টির লক্ষণ। এবং দুটিই ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ এ সমস্যায় ভুগছে। এবং এতে উৎপাদনশীলতা হ্রাস ও চিকিৎসা বাবদ বিশ্ব অর্থনীতির ব্যয় ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার। বিষয়টি নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া কিংবা অপুষ্টির শিকার হওয়া কিংবা স্থূলতায় ভোগা এটি কোনো শুভ লক্ষণ নয়। এ ব্যাপারে বিশ্বের ধনী দেশগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, নিতে হবে সম্মিলিত উদ্যোগ। বাংলাদেশেও অসংখ্য মানুষ ক্ষুধা ও অপুষ্টির শিকার। তা ছাড়া দেশের কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে চার কোটি লোক বেকার সমস্যায় আক্রান্ত। এ হিসাবে শিক্ষিত বেকারের পাশাপাশি অশিক্ষিত বেকারও কম নয়। এ ছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে কর্মসংস্থানের হারও কমেছে। বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে হতদরিদ্রদের বেঁচে থাকা মানে সৌভাগ্যের চাবি নিজের হাতে পাওয়া। কারণ স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের খামখেয়ালিপনা, কর্তব্যে অবহেলা, দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি ও উদাসীনতা গ্রামীণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে ধীরে ধীরে করে তুলেছে হতদরিদ্র ও নিঃস্ব। এ নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে অনেক আগ থেকেই। এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে গ্রামীণ নানা অব্যবস্থাপনা। ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শোষণ ও নিঃস্বকরণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।  

বাংলাদেশে দিনে দিনে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে তো কর্মসংস্থান নেই-ই, এমনকি যারা ভিটেমাটি বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন তারাও আজ পথে বসার উপক্রম। অনেকেই ভিখারি হয়ে দেশে ফিরে আসছেন। যার কারণে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের যেভাবে উৎকর্ষ ঘটার কথা, ঠিক সেভাবে ঘটেনি। আশানুরূপ আর্থসামাজিক-রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনও সূচিত হয়নি। সুতরাং বাংলাদেশ থেকেও ক্ষুধা অপুষ্টি দূর করতে হবে। মনে রাখতে হবেÑ ক্ষুধা ও অপুষ্টি এসব কেবল বৈশ্বিক সমস্যা নয়, আমাদেরও সমস্যা। তাই এই সমস্যা নিরসনে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

Wordbridge School
Link copied!