• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দুই বছর ৭ মাসে ১৬৯৭ প্রাণীর নমুনা পদ্মাসেতু জাদুঘরে


মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি অক্টোবর ৬, ২০১৮, ০৩:২০ পিএম
দুই বছর ৭ মাসে ১৬৯৭ প্রাণীর নমুনা পদ্মাসেতু জাদুঘরে

ছবি: সোনালীনিউজ

মুন্সিগঞ্জ : পদ্মাসেতু মানেই বিশাল যন্ত্রাংশ আর স্প্যান জোড়া দিয়ে নির্মাণ নয়। এসব বিশাল স্থাপনা নির্মাণে প্রভাব পড়ে পরিবেশে, ক্ষতিগ্রস্ত হয় জীবসত্তার। বিষয়টি মাথায় রেখে প্রকল্পের পরিবেশ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সেতু কর্তৃপক্ষ পদ্মাসেতু জাদুঘর প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। এরপর জাদুঘরের জন্য ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় নমুনা সংগ্রহ।

মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের দোগাছি পদ্মাসেতু সার্ভিস এরিয়ায়-১ সংগ্রহ হচ্ছে প্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদের নমুনা। প্রাণীবিদ ও স্থানীয়দের সহায়তায় সেতু প্রকল্পের জীববৈচিত্র্য ও দেশব্যপী চলছে প্রাণীর মরদেহ সংগ্রহ। জাজিরা প্রান্তে সেতু কর্তৃপক্ষ এসব পদ্মাসেতু জাদুঘরে সজ্জিত করবে।

দুই বছর ৭ মাসে এ জাদুঘরে ১৬৯৭ প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।

পদ্মাসেতু জাদুঘর সূত্রে জানা যায়, স্তন্যপায়ী প্রাণীর নমুনা ৫৮টি ও প্রজাতি ২২১টি সংগ্রহ করা হয়েছে। স্তন্যপায়ী ৫৮, পাখী ১৭৭, সরীসৃপ ১১১, উভচর ৫১ , মাছ ৩০৬ ,  চিংড়ী ও কাকড়া ৬৫  জলজ দুটি, স্থলজ ১৫টি অন্যান্য ৫১। এর মধ্যে গঙ্গা নদীর শুশুক ও চিতাবাঘ উল্লেখযোগ্য।

জাতীয় পাখি ১২টি এবং নন প্যাসারিনের অন্তর্ভুক্ত ২৮টি পাখির বাসা ৩২ । এর মধ্যে উদয়ী বাবুবাটান পাখি উল্লেখযোগ্য।  সরীসৃপ প্রাণীর ৯৩টি নমুনা ও ২৯টি প্রজাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে টিকটিকি সাতটি, সাপ ১৫টি, কচ্ছপ সাতটি। নদীচর কচ্ছপ ও হলুদ সাপ। জলজ ব্যাঙ ১৮টি এবং স্থলজ ব্যাঙ একটি। ঝিঁ ঝিঁ ব্যাঙ উল্লেখযোগ্য।

মাছের নমুনা ৩০৬টি সংগ্রহ হয়েছে। মিঠা পানির মাছ ১৭৭টি ও লোনা পানির মাছ ৩১টি, সামুদ্রিক মাছ ৪৬টি। নানা বর্ণের ছাপযুক্ত বড় বান মাছ, ইলিশ মাছ (২.২ কেজি), মাগুর মাছ মলাস্কা শ্রেণির প্রাণীদের নমুনা ও প্রজাতি সংগ্রহ ১৩৩টি। শামুক ৬০টি, ঝিনুক ৭০টি, শুঁড়ওয়ালা শামুক তিনটি। গঙ্গার ঝিনুক ও পরজীবী ঝিনুক।

কঠিন আবরণযুক্ত জলজ প্রাণীর ৬০টি নমুনা ও ৫৩টি প্রজাতি সংগ্রহ হয়েছে। এরমধ্যে কাকড়া ৬৫টি, চিংড়ি ৬১টি, গলদা চিংড়ি দু’টি, গুগলি শামুক তিনটি, কীট চিংড়ি একটি। ফুলের কাকড়া ও নদীর চিংড়ি উল্লেখযোগ্য।

প্রজাপতি ও পোকার ২২১টি নমুনা ও ২৯৯টি প্রজাতি সংগ্রহ হয়েছে। প্রজাপতি ৯৭টি, পোকা ৩৪টি। গোলাকার পাল্ম রেডআই, তসর রেশম গুটি মথ বিশেষ সংগ্রহ।

কীটপতঙ্গের ২৫৫টি নমুনা ও ১৭৭টি প্রজাতি সংগ্রহ হয়েছে। গুবরেপোকা ৫০টি, ছারপোকা ২৩টি, মৌমাছি ও ভিমরুল ২১টি, মাছি ১৫টি, তেলাপোকা তিনটি, কানকোটারি দু’টি, ফড়িং ৩৫টি, ড্রাগন মাছি ও ছোট আকৃতির ৩৪টি।

অমেরুদণ্ডী প্রাণীর নমুনা ৪০টি ও প্রজাতি ৩৬টি সংগ্রহ হয়েছে। এর মধ্যে খণ্ডাকৃতির কৃমি পাঁচটি, নিডারিয়া দুটি, বৃত্তাকার কীট দু’টি, বিছা ও ক্রিমি একটি।

মাছ শিকারের ১০টি উল্লেখযোগ্য সরঞ্জামাদি ও কারুশিল্প সংগ্রহ হয়েছে। পাখির বাসা ২৩টি ও মৌটুসি পাখির বাসা উল্লেখযোগ্য। পাখির ডিম সংগ্রহ ১২টি ও এশিয়ান শামুকের ডিম বিশেষ সংগ্রহ। বকের থেকে বড় (৬৮ সে. মি.) কালচে চঞ্চু। কঙ্কাল মিলেছে আটটি। মাছধরা বিড়াল, মনোক্লেড কোবরা সাপ।


 

পদ্মা ব্রিজ মিয়োজিয়ামের ফিল্ড অফিসার ও মিয়োজিয়াম এসিস্ট্যান্ট সুমন মন্ডল, জাদুঘরে পদ্মার জেলেদের ব্যবহৃত জাল ও নৌকাও স্থান পেয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জাদুঘরের মাধ্যমে পূর্বের নিদর্শন ও বৈচিত্র্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে পারবে। দেশের যেসব প্রাকৃতিক জীবজন্তু আছে সেগুলো ধারণ করবে জাদুঘরটি।

২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১৬৯৭টি প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ জন অধ্যাপক এ জাদুঘরে কর্মরত রয়েছেন। ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রজেক্ট চলবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!