• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
নজরদারিতে ১৯ টিম

দুদক আতঙ্কে সরকারি কর্মকর্তারা


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৭, ০১:৩৭ পিএম
দুদক আতঙ্কে সরকারি কর্মকর্তারা

ঢাকা: উনিশটি বিশেষ প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ওপর কঠোর নজরদারি শুরু করেছে দুদক। ফলে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের চিহ্নিত ঘুষখোর ও দুর্নীতিবাজদের মধ্যে আতঙ্ক শুরু হয়েছে।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ১১ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেন, ঘুষখোর আর দুর্নীতিবাজদের জন্য এক আতঙ্কের বছর হবে ২০১৭ সাল। এরপরই ২৩ জানুয়ারি দুদকের ৮ পরিচালকের নেতৃত্বে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কার্যক্রম নজরদারির জন্য ১৯টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করা হয়।

এর মধ্যে ৫ পরিচালকেই ৩টি করে প্রাতিষ্ঠানিক টিমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এছাড়া এক পরিচালকে ২টি টিম এবং অপর ২ পরিচালকের নেতৃত্বে রয়েছে ১টি করে প্রাতিষ্ঠানিক টিম। এছাড়াও প্রত্যেক টিমে রয়েছে একজন পরিচালক একজন উপ-পরিচালক ও একজন সহকারি পরিচালক।

টিমের দায়িত্ব বণ্টনে দেখা যায়, পরিচালক একেএম জায়েদ হোসেন খানের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, তিতাস গ্যাস, রেলপথ বিভাগ ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (পোর্ট অর্থরিটি)। পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো, সিভিল এভিয়েশন অর্থরিটি অব বাংলাদেশ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও পরিবেশ অধিদফতর। পরিচালক মীর মো.জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, কাস্টমস, ভ্যাট অ্যান্ড এক্সাইজ,আয়কর বিভাগ, স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষ (দেশের সব স্থল বন্দর)। পরিচালক মো. বেল্লাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানিগুলো হচ্ছে, ওয়াসা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর,ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর। পরিচালক শফিউল আলমের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর, গণপূর্ত অধিদফতর, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ। পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), সাব-রেজিস্ট্রার কমপ্লেক্স ঢাকা (দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রি অফিস), ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ (এল এ) ও রাজস্ব শাখা (এসএ)। পরিচালক মনজুর আহম্মদের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানিগুলো হচ্ছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। পরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন সরকারি প্রতিষ্ঠানি হচ্ছে, মহা হিসাব নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (এজি)।

এছাড়াও দুদকের আট পরিচালকের নেতৃত্বে আরো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, লোপাট, জালিয়াতি এবং দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান ও তদন্ত চলমান রয়েছে। এর মধ্যে দুদক পরিচালক মীর মো.জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে রাজধানীতে সরকারি ও বেসরকারি স্বনামধন্য ১৫টি স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিরুদ্ধে ভর্তি বাণিজ্যসহ নানা হয়রানির অভিযোগের অনুসন্ধান এবং তদন্ত চলমান রয়েছে।

দুদকের এ বিশেষ টিমের কাজ হচ্ছে সরকারি দপ্তরে জনবল নিয়োগে অনিয়ম, ক্রয়-বিক্রয়, সংস্কার, নির্মাণের টেন্ডারে অনিয়মসহ লোপাটের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহের পাশাপাশি আইনি পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রতিবেদন দাখিল করা।

এদিকে দুদকের এ ১৯টি টিমের সদস্য ইতোমধ্যে নির্ধারিত দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার সাক্ষাৎ করেছেন। অনেকে আবার ওইসব দপ্তরের কার্যক্রমের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাফতরিক রেকর্ডপত্রও চাচ্ছেন।

সরকারি দপ্তরে দুদকের বিশেষ টিমের পদচারণায় রীতিমতো আতঙ্ক শুরু হয়েছে। দুদক টিমের সদস্যদের উপস্থিতিকে অনেকেই অভিযান মনে করছেন।

তবে দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা ও উপ পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, দুদক টিমের সদস্যদের সরকারি দফতরে খোঁজ খবর নেয়ার জন্য যাওয়াকে অভিযান বলা যাবে না। এটা অভিযান না, এতে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।

তিনি বলেন, দুদক টিমের দায়িত্ব হচ্ছে সরকারি দপ্তরগুলোতে দুর্নীতির উৎস ও কারণসমূহ চিহ্নিত করা। দুর্নীতি বন্ধে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে, সে বিষয়ে সুপারিশমালা প্রণয়ন করা এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অনুসন্ধানের সুপারিশ করা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!