• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দুদকের কাজে ক্ষেপলেন হাইকোর্ট


নিজস্ব প্রতিবেদক অক্টোবর ২৪, ২০১৭, ০৬:১৫ পিএম
দুদকের কাজে ক্ষেপলেন হাইকোর্ট

ঢাকা: কোনো ব্যক্তিকে দুদকের নোটিশ দেওয়ার পর তা বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন হাইকোর্ট। দুদকের কাজ কচ্ছপের গতিতে চলছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত। 

মঙ্গলবার(২৪ অক্টোবর) বিকেলে আপিল বিভাগের অনুসন্ধান বন্ধে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি নিয়ে রুল শুনানিকালে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

আদালত দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০১০ সালের ঘটনা, তখনই সুপ্রিম কোর্টের কাছে তথ্য চাইতে পারতেন। তা না করে ৭ বছর পর কেন তথ্য চাইলেন। দুদকের কাজ কচ্ছপ গতিতে চলছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত।

আদালতে বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের পক্ষে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, দুদকের পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান এবং সুপ্রিম কোর্টের চিঠি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান তরফদার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অ্যামিকাস কিউরি হিসাবে নিয়োগ পাওয়া অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী ও সমিতির প্রাক্তন সম্পাদক অ্যাডভোকেট এএম আমিন উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

পরে রুলের পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ৩১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন আদালত। ওইদিন অ্যামিকাস কিউরি হিসাবে নিয়োগ পাওয়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন তার বক্তব্য উপস্থাপন করবেন।

এর আগে গত ৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের প্রাক্তন বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সুপ্রিম কোর্টের দেয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।

১৯ অক্টোবর রুলের ওপর প্রথম শুনানি হয়। দুদককে গত ২৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের দেয়া চিঠিটি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান তরফদার। এরপর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে ওই চিঠি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুদক চেয়ারম্যান, আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী ও বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে দশ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

প্রাক্তন বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই সম্পদের হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয় দুদক। তার বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারেরও অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে।

বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে চলতি বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেন দুদক। এর জবাবে গত ২৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুনাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দুদকে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বিচারপতি জয়নুল আবেদীন দীর্ঘকাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনেক মামলার রায় প্রদান করেন। অনেক ফৌজদারি মামলায় তার প্রদত্ত রায়ে অনেক আসামির ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে।’

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের দেয়া রায় সবার ওপর বাধ্যকর। এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তার দেয়া রায়সমূহ প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং জনমনে বিভ্রান্তির উদ্রেক ঘটবে। প্রাক্তন বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন হবে না।’

তবে সুপ্রিম কোর্ট ওই চিঠি দিলেও বিচারকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান থেমে থাকেনি। আর দুদকের চাহিদা অনুযায়ী ওই বিচারকের বিষয়ে নথিপত্রও পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

সোনালীনিউজ/আতা

Wordbridge School
Link copied!