• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দৃষ্টিনন্দন নতুন ভবনে আওয়ামী লীগ


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ২২, ২০১৮, ০৫:১৯ পিএম
দৃষ্টিনন্দন নতুন ভবনে আওয়ামী লীগ

ঢাকা : বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন ও বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সেজেছে নতুন রূপে। পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে তৈরি করা হয়েছে আধুনিক ১০তলা ভবন। যার ফলে বাংলাদেশের একমাত্র আধুনিক রাজনৈতিক দলের বহুতল ভবন হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে এই জেষ্ঠ্য রাজনৈতিক দলের ভবনটি।

শনিবার (২৩ জুন) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের নবনির্মিত ১০তলা ভবনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় উদ্বোধন করা হবে। ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগেরও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনেই গণভবন থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় শুভ উদ্বোধন করবেন।

দলের একাদিক নেতা জানান, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি দেশের বৃহত্তম পার্টি অফিস হবে। পুরনো ভবন ভাঙার প্রায় দুই বছর পর নতুন ভবনে উঠতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

দলীয় সূত্র জানায়, নবনির্মিত ১০ তলা ভবনের ৬ থেকে ৭ তলা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কার্যালয় থাকবে। আরও থাকবে কনফারেন্স হল, সেমিনার অডিটোরিয়াম, ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, ক্যান্টিন, সাংবাদিক লাউঞ্জ ও ডরমিটরি।

ভবনটির সার্বিক বিষয় নিয়ে দলটির একাধিক নেতা জানান, সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের জন্য বড় পরিসরে আলাদা কক্ষ থাকছে। পুরো কার্যালয়টিতে ওয়াইফাই জোন হবে।

দলটির একাধিক প্রবীণ নেতা জানান, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার পর থেকে আওয়ামী লীগের অফিস স্থানান্তরের ঘটনা ঘটেছে আট থেকে নয় বার। পুরান ঢাকার কে এম দাস লেনের রোজ গার্ডেনে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আত্মপ্রকাশ করে আওয়ামী লীগ।

প্রতিষ্ঠার পর পর্যায়ক্রমে সিনিয়র নেতাদের বাসায় বসে দল পরিচালনার নীতি-কর্মসূচি গ্রহণ করা হত। ওই সময়ে কোনো অফিস ছিল না। এরপর ১৯৫৩ সাল থেকে ৯ কানকুন বাড়ি লেনে অস্থায়ী একটি অফিস ব্যবহার করা হত। ১৯৫৬ সালে পুরান ঢাকার ৫৬ সিমসন রোডে দলের অফিস স্থাপন করা হয়।

১৯৬৪ সালের ২৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করার পর তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৯১, নবাবপুর রোডে দলের অফিস নেন। এর কিছুদিন পর অস্থায়ীভাবে সদরঘাটের রূপমহল সিনেমা হলের গলিতে কিছুদিন বসেন নেতারা।

পরে পুরানা পল্টনে দুটি স্থানে দীর্ঘদিন দলের অফিস ছিল। ১৯৮১ সালের দিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঠিকানা হয়।

২০১৬ সালের ১৭ জুলাই এই কার্যালয়টি ভাঙা হয়। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ দলের আরও নানা সংগঠন কার্যালয়টির আশেপাশে বিভিন্ন স্থানে অফিস ভাড়া নিয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

বাইরের দেয়ালজুড়ে একাত্তর, বাহান্নসহ বাংলাদেশের সংগ্রামগাথা আর ভেতরে সবুজের আচ্ছাদন। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের নতুন ১০তলা ভবন দেখলে যে কারোরই চোখ আটকে যাবে।

ভবনের বাইরের দেয়ালে দৃষ্টি দিলেই দেখা যাবে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবি। যেখানে সবার উপরে রয়েছে জাতির জনকের ম্যুরাল। দলের নীতি নির্ধারকরা বলছেন, নির্মাণ পরিকল্পনায় সবথেকে গুরুত্ব পেয়েছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ।

দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাক বা না থাক, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল। দেশকে ডিজিটাল করতে হলে আগে তো আওয়ামী লীগকে ডিজিটাল হতে হবে। তাই আওয়ামী লীগের আধুনিক অফিস লাগবে।'

এরই মধ্যে প্রস্তুত হয়ে গেছে দলীয় সভাপতির কক্ষ। পর্যাপ্ত আলো আর বাতাস প্রবেশের সুবিধা রেখে নির্মাণ করা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের জন্য নির্ধারিত কক্ষগুলো। রয়েছে সুপরিসর সম্মেলন কক্ষ, লাইব্রেরি এবং সেমিনার রুম।

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, পাশে, পেছনে সব পাশ দিয়ে জায়গা ছাড়া হয়েছে।

বলা হয়ে থাকে স্বাধীনতার পর থেকে সবচেয়ে সুবর্ণ সময় পার করছে আওয়ামী লীগ। ৯ বছর ক্ষমতায় থেকে শুধু এই দলের সাংবিধানিক শ্রী বৃদ্ধি ঘটেনি পরিবর্তন এসেছে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বাহ্যিক কাঠামোতেও।

অন্যান্য দলের জন্যও আওয়ামী লীগের নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদাহরণ সৃষ্টি করবে বলছেন দলীয় নেতারা।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!