• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দেখে নিন রাশিয়া বিশ্বকাপে টপ এন্ড ফ্লপ


ক্রীড়া ডেস্ক জুলাই ১৭, ২০১৮, ০৩:৫৩ পিএম
দেখে নিন রাশিয়া বিশ্বকাপে টপ এন্ড ফ্লপ

ফাইল ছবি

ঢাকা: ১৪ জুন থেকে ১৫ জুলাই, এই একটি মাস ফুটবল উৎসবে মেতেছিল গোটা বিশ্ব। রোববার মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে সমাপ্তী ঘটেছে সেই উৎসবের। এদিন ফ্রান্স বনাম ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা নামে বিশ্বকাপের ২১তম আসরের। ফাইনাল ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ গোলে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করে দিদিয়ের দেশ্যমের ফ্রান্স। টুর্নামেন্টের ফাইনালে এক গোল করা ফ্রান্সের সেনসেশন কিলিয়ান এমবাপ্পে লাভ করেছেন টুর্নামেন্টের সেরা উদীয়মান তারকার পুরস্কার। সব কিছু মিলিয়ে এবারের আসরের টপ ও ফ্লপ নিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি’র পর্যালোচনা।

রাশিয়া বিশ্বকাপে টপ যারা:
 

কিলিয়ান এমবাপ্পে: একেবারেই অচেনা এই তারকা মোনাকো থেকে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ে (পিএসজি) যোগ দিয়েই আলোচনায় উঠে আসে। বিশ্ব মঞ্চে এসে ১৯ বছর বয়সি এই টিন এজ প্রমাণ করেছেন কেন তাকে নিয়ে এতো হৈচৈ। বিশ্বকাপের শেষ ষোল থেকে আর্জেন্টিনাকে চোখের জলে বিদায় করার ক্ষেত্রে সব চেয়ে বড় অবদান ছিল এমবাপের। ম্যাচে ফ্রান্স ৪-৩ গোলে হারায় আর্জেন্টিনাকে। যেখানে ১৯ বছর বয়সি এমবাপে দুই গোল করার পাশাপাশি ভূমিকা রেখেছেন পেনাল্টি আদায়ে। ১৯৫৮ আসরে পেলের পর কোন টিন এজারের এটিই একাধিক গোলের রেকর্ড।

লুকা মডরিচ: রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে পাঁচ মৌসুমে অংশ নিয়ে চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লীগের খেতাব জয়ী মড্রিচ বিশ্বকাপ আসরে এসেও প্রমাণ করেছেন তিনিই বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডার। গতকাল ফাইনাল শেষে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার জয়ের আগে তিনি জিতে নিয়েছেন তিনটি ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।

গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে মিড্রচের ক্রোয়েশিয়া নিজেদের আগমনী বার্তা জানিয়ে রাখে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে অসাধারণ দক্ষতায় গোল করা মড্রিচ অবশ্য ডেনমার্কের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ের ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যে কারণে টাইব্রেকারের মাধ্যমে তাদেরকে জয় পেতে হযেছে ডেনিশদের বিপক্ষে। একইভাবে রাশিয়াকে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রথমবারের মত ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ক্রোয়েশিয়া।

এডেন হ্যাজার্ড: সেমি-ফাইনালে বেলজিয়ামের গোল্ডেন জেনারেশন হয়তো সামান্য ব্যবধানে হেরে গেছে ফ্রান্সের কাছে। কিন্তু চার বছর আগে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ এবং দুই বছর আগে অনুষ্ঠিত ২০১৬ ইউরো টুর্নামেন্টের মতই নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন হ্যাজার্ড।

চেলসির এই স্ট্রাইকার বিশ্বকাপে তিনটি গোল করেছেন। তবে তার গোলগুলো ছিল দলকে প্রেরনা ফিরিয়ে দেয়া গোল। শেষ ষোলর লড়াইয়ে জাপানের বিপক্ষে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও তার লড়াকু মনোভাবের কারণে ৩-২ গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বেলজিয়াম। ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেও পিছিয়ে পড়েছিল হ্যাজার্ডের দল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য জয় হয়েছে বেলজিয়ানদের।

এবারের বিশ্বকাপে ফ্লপ যারা:
জার্মানি: ব্রাজিল চ্যাম্পিয়নরা চার বছর আগে স্পেন এবং ২০১০ সালে চ্যাম্পিয়ন ইতালরি মতোই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে। মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হারের কারণে গ্রুপের তলানীতে থেকেই বিশ্বকাপের মিশন শেষ করেছে চ্যাম্পিয়নরা। দলটি তাদের ৮০ বছরের ফুটবল ইতিহাসে কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েনি।

আফ্রিকান দল: ১৯৮২ সালের পর এই প্রথম কোন আফ্রিকান দলের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া অনুষ্ঠিত হল বিশ্বকাপের নকআউট পর্ব। টুর্নামেন্টে অংশ নেয়া আফ্রিকার দল নাইজেরিয়া, সেনেগাল, তিউনিশিয়া, মিশর ও মরোক্কো মিলে জয় পেয়েছে মাত্র তিন ম্যাচে।

অবশ্য এইচ গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেনেগালের দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবার সুযোগ ছিল। কিন্তু ফিফার ফেয়ার প্লে নিয়মের আওতায় পড়ে গ্রুপ ভুক্ত জাপানের পেছনে পড়ে যায় সেনেগাল। অপরদিকে প্রিমিয়ার লীগে সাড়া জাগানো তারকা মোহাম্মদ সালাহও ইনজুরির কারণে আসরে নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি।

ইতি ঘটেছে মেসি-রোনালদোর আধিপত্যের: ৩১ বছর বয়সি লিওনেল মেসি এবং ৩৩ বছর বয়সি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর জন্য এই আসরটিই ছিল শিরোপা জয় করার শেষ সুযোগ। কিন্তু শেষ ষোল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা ও রোনালদোর পর্তুগালকে।

গ্রুপ পর্বে স্পেনের বিপক্ষে সুচনা ম্যাচে হ্যাট্রিক করে রোমঞ্চ ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। কিন্তু ৩-৩ গোলে ড্র হওয়া ওই ম্যাচের পর আর মাত্র একটি গোল করতে পেরেছেন রোনালদো। এমনকি ইরানের বিপক্ষে ম্যাচে ভাগ্য জোরে লাল কার্ড থেকে বেঁছে গেছেন এই রিয়াল মাদ্রিদ সুপার স্টার।

অপরদিকে গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে একটি মাত্র গোল পেয়েছেন মেসি। নাইজেরিয়ার বিপক্ষে মেসির ওই গোলের কারণে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের লজ্জা থেকে রক্ষা পেয়েছে আর্জেন্টিনা। কিন্তু নকআউট পর্বে এসে এমবাপের নৈপুণ্যের কাছে হার মানতে হয় মেসির আর্জেন্টিনাকে। টানা ১০ বছর মেসি ও রোনালদো ব্যালন ডিঅঁর খেতাব ভাগাভাগি করেছে। এখন বোধ হয় সময় এসেছে তাদের ওই একচ্ছত্র আধিপত্যের ইতি ঘটার।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!