• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ১৬৯ ভিআইপির


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১৬, ২০১৬, ০১:২১ পিএম
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ১৬৯ ভিআইপির

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ১৬৯ ভিআইপি আসামির বিরুদ্ধে। তাদের মধ্যে রয়েছেন ব্যবসায়ী, ব্যাংক, রাজউক-তিতাসসহ বেশ কয়েকটি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সংশ্লিষ্ট দপ্তর চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে তালিকাভুক্ত আসামির নাম ও ঠিকানাসহ বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন শাখা, এসবি ও র‌্যাব কর্মকর্তাদের দপ্তরে দফায় দফায় চিঠি পাঠাচ্ছে। দুদকের একটি ঊর্ধ্বতন সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করে।

সূত্র জানায়, নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে দুদকের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয় থেকে উপপরিচালক মো. ইব্রাহিমের স্বাক্ষরিত পৃথক পৃথক চিঠিতে বেসিক ব্যাংকের ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারি মামলার আরো ১৮ আসামির নামের তালিকা প্রশাসনের ওই সব শাখায় পাঠানো হয়, যার ১৭ জনই ব্যবসায়ী। তাদের মধ্যে মেসার্স ভয়েস এন্টারপ্রাইজের এমডি সৈয়দ হাসিবুল গনি গালিব ও পরিচালক সৈয়দ রাজিয়া বানুর বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর মতিঝিল থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। একই দিনে ৪৫ কোটি ৬০ লাখ ৩৭ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গুলশান থানায় মামলা করা হয় মেসার্স ইউকে বাংলা ট্রেডিং লি. চেয়ারম্যান আহমেদ তাজ উদ্দিন, পরিচালক মো. মুস্তাকুর রহমান ও বেসিক ব্যাংকের জিএম আবদুল মোনায়েম খানের বিরুদ্ধে।

১৬ কোটি ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২২ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলা করা হয় রিলায়েন্স শিপিং লাইনের মালিক আসিফ ইকবাল ও ইউনিক সার্ভে সার্ভিস ব্যুরোর সার্ভেয়ার ও পার্টনার মো. সিরাজুল ইসলামের নামে। একই তারিখে ৭৪ কোটি ১৪ লাখ ৯৯ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় মতিঝিল থানায় ইমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লি. চেয়ারম্যান সৈয়দ মনোয়ারুল ইসলাম, পরিচালক এএসএম মনিরুল ইসলাম, পরিচালক সুজন কুমার বসাক ও পরিচালক অমিতাভ ভৌমিকের নামে মামলা হয়।

৭০ কোটি ৭০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মতিঝিল থানায় মামলা হয় আর কে ফুডস লি. এমডি মো. আব্দুল কুদ্দুস, পরিচালক রানী বেগম, কামরুল হাসান, রাশেদুল হাসান ও সার্ভেয়ার মো. শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ৫২ কোটি ৫১ লাখ ৩২ হাজার ৯৮৫ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২৩ সেপ্টেম্বর দায়ের করা মামলায় আসামি করা হয় মেসার্স টেলিওয়েজ ইন্টারন্যাশনালের এমডি শওকত আজিম ও চেয়ারম্যান রিজিয়া বেগমকে।

এর আগে ইউসিবিএলের সাবেক ৯ কর্মকর্তা, জনতা ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তা, রাজউক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, তিতাসসহ মোট ১৫১ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ওই ১৫১ আসামি হলেন, বেসিক ব্যাংকের চাকরিচ্যুত এমডি কাজী ফখরুল ইসলাম, সাবেক এমডি একেএম সাজেদুর রহমান, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এসএম ওয়ালিউল্লাহ, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি (গুলশানের) জাহিদ হাসান, সাবেক ব্যবস্থাপক মহিবুল হক। (চট্টগ্রামের) ডিএমডি মো. সেলিম, (গুলশানের) সাবেক ডিজিএম শিপার আহমেদ, ডিএমডি ফজলুস সোবহান ও প্রধান শাখার জিএম জয়নাল আবেদীন চৌধুরী। (শান্তিনগরের) সাবেক শাখা প্রধান মোহাম্মদ আলী, ডিএমডি কনক কুমার পুরকায়স্থ, এসএভিপি সরোয়ার হোসেন, সাবেক ডিজিএম মো. মোজাম্মেল হোসেন, এডিএম শেখ মঞ্জুর মোরশেদ, ডিজিএম কোরবান আলী, জিএম গোলাম ফারুক খান, (দিলকুশা) সাবেক ব্যবস্থাপক পলাশ দাশগুপ্ত, জিএম খন্দকার শামীম হাসান।

বেসিক ব্যাংকের ব্যবসায়ী আসামিদের মধ্যে আছেন, মেসার্স বি আলম শিপিং লাইনসের মালিক মো. বশিরুল আলম, আমিরা শিপিং এজেন্সির মালিক গিয়াস উদ্দিন মোল্লা, মেসার্স বীথি এন্টারপ্রাইজের মালিক কামরান শহীদ, মেসার্স নীল সাগর অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লি.ও মেসার্স পারুমা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের মালিক আহসান হাবিব লেনিন, মেসার্স আলী ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাহবুবুল আলম, এসডি সার্ভে ফার্মের ম্যানেজিং পার্টনার ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া, নিউ অটো ডিফাইনের মালিক আসমা খাতুন, মেসার্স সৈয়দ ট্র্রেডার্সের ম্যানেজিং পার্টনার সৈয়দ মাহবুবুল গনি, পরিচালক সুলতান আহমেদ, এসডি সার্ভে ফার্মের চিফ সার্ভেয়ার ও পার্টনার মো. ফারুক, রূপসা সার্ভেয়ার্সের চিফ সার্ভেয়ার ও ম্যানেজিং পার্টনার শাহজাহান আলী, মেসার্স নাহার গার্ডেন প্রাইভেট লি. এমডি সাইফুল ইসলাম, মেসার্স নাহার গার্ডেন প্রা.লি. চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন, সিমেক্সের এমডি রাশেদুল হাসান, সিমেক্সের পরিচালক নুসরাত জাহান (ঝুমু), আইএইচএস ইন্সপেকশন সার্ভিস (বিডি) লি. এমডি খন্দকার গোলাম মোস্তফা, পিএসআর সার্ভে অ্যান্ড ইন্সপেকশন কোম্পানির ম্যানেজিং পার্টনার জসিম উদ্দিন চৌধুরী, দেশ পরিদর্শন কোম্পানির মালিক শফিকুল ইসলাম শিমুল, বিডিএস অ্যাডজাস্টার্সের চিফ এক্সিকিউটিভ ইবনে মোফাজ্জল বকরী, পিলুসিড টেক্সটাইলের নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী এনামুল হক ও মফিজুল ইসলাম।

সুত্র জানায়, দেশজুড়ে দুদকের বিশেষ অভিযান চলছে। এই অভিযানের মাধ্যমে দুদকের করা মামলার আসামিদেরকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নেয়া হচ্ছে। এই অভিযানে অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। তাই তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন সে জন্য তাদের একটা তালিকা করে বিভিন্ন দফতরে পাঠানো হয়েছে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!