• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘ভেজাল’ ইয়াবা কারখানা!


বিশেষ প্রতিনিধি জুন ৩, ২০১৮, ০৩:১৫ পিএম
দেশীয় প্রযুক্তিতে ‘ভেজাল’ ইয়াবা কারখানা!

ঢাকা: নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা মূলত মিয়ানমার থেকে আমদানি করা হলেও দেশের মধ্যেও এই মাদক তৈরি হয় বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দেশে তৈরি এসব ইয়াবা মিয়ানমার থেকে আসা মাদকের সঙ্গে মিশিয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয় যেগুলোতে ‘ভেজাল’ থাকে বলে জানিয়েছেন তারা। 

স্থানীয় কয়েকজন ইয়াবা উৎপাদনকারীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে দেয়া সাক্ষীতে তারা বলেছেন, ঠাণ্ডার ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত সিডোইফিড্রিন কিংবা এ জাতীয় রাসায়নিকই অ্যাম্ফিটামিন বা ইয়াবার মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিগুলো অতীতের তুলনায় সিডোইফিড্রিন আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি করায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই রাসায়নিকের আমদানি বন্ধ করে বাংলাদেশ সরকার।

স্থানীয় যেসব মাদক ব্যবসায়ীরা ধরা পড়েছেন তারা জবানবন্দিতে বলেছেন, মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আমদানির চাইতে দেশেই তা উৎপাদন করে বিক্রি করা অনেক লাভবান। 

তাই দেশে সিডোইফিড্রিন আমদানি নিষিদ্ধ হওয়ার পর এই রাসায়নিক অনেকটা দুস্প্রাপ্য হয়ে যাওয়ায় তারা নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করেন। যেসব ওষুধে এই রাসায়নিক থাকে সেগুলোতে থেকে সিডোইফিড্রিন আলাদা করে কাজ চালান তারা।

২০০৭ সাল থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৫০টিরও বেশি ইয়াবা কারখানার সন্ধান পেয়েছে। দেশে এমন আরও অনেক ছোট ছোট কারখানা রয়েছে বলেও ধারনা তাদের।

এ বিষয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল বনাজ কুমার মজুমদার বলেন, যেসব কারখানার সন্ধান মিলেছে সেগুলো অনেক ছোট আকারে ছিল এবং একটি ছোট রুমেই সব যন্ত্রপাতি ছিল।

এসব কারখানার বেশিরভাগই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আশেপাশে অবস্থিত বলে জানান তিনি। পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, স্থানীয় উৎপাদনকারীরা মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার সঙ্গে এগুলোকে মিশিয়ে বিক্রি করেন।

তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এসব ইয়াবায় সাধারণত ভেজাল থাকে। গত ২৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের বেপারি পারায় গোয়েন্দারা একটি ইয়াবা কারখানায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে আড়াই লাখ পিস ইয়াবা, ১০০ কেজি রাসায়নিক, দুইটি মেশিন এবং চারটি ছাঁচসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেন।

যেসব উপাদান ওই অভিযানে উদ্ধার করা হয়েছিল সেগুলো থেকে প্রায় ১০ লাখ পিস ইয়াবা তৈরি করা যেত বলে জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন। 

আটককৃতরা পুলিশকে জানায়, যেসব জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর দাম মাত্র কয়েক হাজার টাকা। তবে সেগুলো দিয়ে যদি ইয়াবা তৈরি করা হতো তবে তা কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করা যেত। 

এদিকে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান এ বিষয়ে বলেন, আমরা এরই মধ্যে কিছু দেশীয় ইয়াবা কারখানায় অভিযান চালিয়েছি। এই অভিশাপ সমূলে উৎপাটন করার আগে পর্যন্ত আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/জেএ

Wordbridge School
Link copied!