• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দেশে আগাম নির্বাচনী হাওয়া


সোনালী বিশেষ ডিসেম্বর ১, ২০১৭, ১২:৩৩ পিএম
দেশে আগাম নির্বাচনী হাওয়া

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদের নির্বাচনের এখনো অনেক দিন বাকী। এর মধ্যেই দেশব্যাপী আগাম নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। দিন যত যাচ্ছে নির্বাচনী হাওয়া ততই জোরদার হচ্ছে।

দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি অনেক আগে থেকেই আগাম নির্বাচন দাবি করে আসছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ শীর্ষ নেতারা যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে বলে ঘোষণা দিয়ে আসলেও সরকারের একটি মহলও মনে করছে আগাম নির্বাচন হলে ভালো হয়। সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব কথা জানা গেছে।

এদিকে কয়েকটি মহলে আগাম নির্বাচনের আলোচনার প্রেক্ষাপটে গত বুধবার সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেন, নির্ধারিত সময়ের আগে নির্বাচনের বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের নয়, সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। আগাম নির্বাচনের জন্য ইসি প্রস্তুত কি না- এই প্রশ্নে সিইসি বলেন, ‘আগাম নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ভোট করার জন্য আমাদের হাতে ৯০ দিন সময় থাকে। সরকার আগাম নির্বাচনের কথা বললে আমরাও তা পারব।’ আগামী বছরের শেষ দিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতা রয়েছে। ওই সময় ধরে রোডম্যাপও ঘোষণা করেছে বর্তমান ইসি।

বিএনপি নেতাদের অনেকে আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছেন। সরকারের শরিক জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও বিভিন্ন সময়ে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি রাখতে তার দলের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান।

এদিকে, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব সেরে নিচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বছর খানেক আগে থেকেই নির্বাচনের প্রস্তুতি ও আগাম প্রচার চালিয়ে আসছে। প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশের যেখানেই যে উপলক্ষে ভাষণ বা বক্তৃতা দিয়েছেন সেখানেই অনিবার্যভাবে নির্বাচনের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন। জনগণের ভোট চাওয়ার পাশাপাশি কেন আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ফের ক্ষমতায় আনতে হবে, তার ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য নেতাও প্রধানমন্ত্রীকে অনুসরণ করে ভোট চাইছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনমুখী করার চেষ্টা করছেন। ওবায়দুল কাদের তো একটা থিওরীই উপহার দিয়েছেন। বলেছেন, উন্নয়নের স্বার্থে একটি দলের পরপর চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা উচিৎ।

এছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য দলকে প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে। বাকি আছে এক বছর কয়েক মাস, আমরা দল গোছাতে শুরু করেছি।’

অপরদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বিএনপি সবসময়ই একটি নির্বাচন-মুখি দল, তবে মূল কথা হচ্ছে সেই নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে কিনা।’ যদিও বিএনপি এরইমধ্যে ‘ভিশন-২০৩০’ উপস্থাপন করেছে। জাতীয় জীবনের এমন কোনো দিক-বিভাগ নেই যা ভিশন ২০৩০-এ নেই। পর্যবেক্ষক মহল একে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক রূপরেখা বা কর্মপরিকল্পনা হিসাবে অভিহিত করেছেন।

অনেকের মতে, এটি নির্বাচনী ইশতেহার না হলেও বিএনপি এ ভিশন তৈরি ও উপস্থাপনের সময় নির্বাচনের বিষয়টিও যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখেছে। এর ভিত্তিতে নির্বাচনী ইশতেহার খুব সহজেই তৈরি করা যাবে।

ভিশন-২০৩০ উপস্থাপনের মাধ্যমে বিএনপি যে আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তাও জানান দিয়েছে। কারণ, ভিশন বাস্তবায়ন করতে হলে ক্ষমতায় যাওয়ার বিকল্প নেই। আর ক্ষমতায় যেতে হলে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি নির্বাচনপন্থী দল বটে। আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতিও তার আছে এবং এ নিয়ে দলটি কাজ করে যাচ্ছে। আগামী নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার সুযোগ কোনো দলের থাকবে না।  

জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে পূর্ণ শক্তি নিয়ে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দলের নীতি-নির্ধারক মহল দলকে সুসংগঠিত করার দিকে অধিক মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে দলের মধ্যকার কোন্দল নিরসন ও তৃণমূলে উপযুক্ত নেতৃত্বের বলয় সৃষ্টির জন্য ৫১টি টিম গঠিত হয়েছে, যারা মাঠ পর্যায়ে সভা-সম্মেলন করে দলকে সংহত করতে তৎপর রয়েছে।

এছাড়া সরকারের শরীক ও জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাপা (এরশাদ) ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছে আরো আগে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

 

Wordbridge School
Link copied!