• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেড় মাস পর বুলবুল-মিনুর বরফ গললো!


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৭, ০৯:০৫ পিএম
দেড় মাস পর বুলবুল-মিনুর বরফ গললো!

রাজশাহী: দেড় মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যালয়ের দুয়ার খোলা হয়েছে। আবারো নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে এ কার্যালয়। তৃণমূল নেতাকর্মীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। দলে আবারো প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস তাদের।

এর আগে গেল ২৮ ডিসেম্বর মহানগর বিএনপির নতুন কমিটির দুই শীর্ষ পদ ঘোষণার পর কার্যালয়ে তালা ঝুলানো হয়। ওদিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুর পক্ষের সমর্থকরা দুয়ারে তালা ঝুলিয়ে দেন। সেসময় মহানগর বিএনপির নতুন কমিটিতে মিনুকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।

সেই কমিটি ঘোষণায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়ার দেড়মাস পর অবশেষে সমঝোতার বরফ গলেছে। মিনুকে সঙ্গে করেই শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তালাবন্ধ থাকা কার্যালয় খুলে দেন মহানগর বিএনপি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল হুদা।

তবে ওই সময় মহানগর বিএনপির নব ঘোষিত কমিটির সভাপতি রাজশাহীর বরখাস্ত হওয়া মেয়র মোহাম্মাদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বা তার কোনো কর্মী সমর্থককে সেখানে দেখা যায়নি।

তালা খুলে দেয়ার পর সমঝোতা প্রশ্নে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আগের ও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন বলেন, একটি গোষ্ঠী দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ভুল বুঝিয়ে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছিল। কিন্তু উদ্ভুত পরিস্থিতির পর চেয়ারপারসনের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তিনি সব ঠিক করে দিবেন বলে সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন।

অ্যাডভোকেট মিলন আরো জানান, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে। ওই কমিটিতে রাজশাহী বিএনপির শীর্ষ নেতা সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান মিনুসহ দলের ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতাদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এই নিয়ে নিজেদের মধ্যে আর ভুল বোঝাবুঝির কোনো অবকাশ নেই। আগামীতে মিনুর নেতৃত্বেই রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সবাই মাঠে থাকবেন বলেও জোর গলায় দাবি করেন এই নেতা।

এদিকে, মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের তালা খুলে দেয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় মিনু দাবি করে বলেন, তাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই, কোন্দল নেই। কমিটি ঘোষণার পর দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির জের ধরে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে চেয়ারপারসনের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনরতদের বুঝিয়ে এক টেবিলে এনেছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর এ মাসের মধ্যেই সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে বলেও দাবি করেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- মিনুপন্থী বলে পরিচিত বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শহীদুন নাহার কাজী হেনা, সাইদুর রহমান পিন্টু, মনিরুজ্জামান শরীফ, ওয়ালিউল হক রানা, বিএনপি নেত্রী মুসলেমা বেলী, রবিউল আলম মিলু প্রমুখ।

গত ২৭ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা ও মহানগরের নতুন কমিটির ঘোষণা আসে কেন্দ্র থেকে। এতে দীর্ঘ সাত বছর পর দুই কমিটির শীর্ষ চারটি পদের তিনটিতেই নতুনদের নেতৃত্বে আনা হয়। ওই দিন দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থানীয় গণমাধ্য কর্মীদের এই তথ্য জানানো হয়। এতে মহানগর বিএনপির সভাপতি পদ থেকে বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনুকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে।

এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বরখাস্তকৃত মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মহানগর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে মহানগর কমিটি থেকে দীর্ঘ দিন পর ছিটকে পড়েন বিএনপির প্রভাবশালী নেতা সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু। আর তাতেই ক্ষোভ আর অভিযান রুদ্ররূপ ধারন করে।

সোনালীনিউজডটকম

Wordbridge School
Link copied!