• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘দ্বিতীয় জন্মদাতা’র শেষশয্যায় পাশে দাঁড়াবেন ম্যারাডোনা


ক্রীড়া ডেস্ক নভেম্বর ২৮, ২০১৬, ১১:৪৫ এএম
‘দ্বিতীয় জন্মদাতা’র শেষশয্যায় পাশে দাঁড়াবেন ম্যারাডোনা

কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে স্বীকৃত দিয়েগো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টাইন এই ফুটবল ঈশ্বর ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে তার ‘দ্বিতীয় বাবা’ মনে করতেন।

সেটি ছিল তাঁর জন্য দ্বিতীয় জন্ম। ফিদেল কাস্ত্রোকেও নিজের দ্বিতীয় জন্মদাতা বলেই মানেন। ডিয়েগো ম্যারাডোনা কিউবায় না গিয়ে পারেন? কাস্ত্রোর শেষশয্যায় পাশে দাঁড়াবেন। বিদায় জানাতে। বলতে ‘কমরেড দেখা হবে আবার!’ ম্যারাডোনা বলেছেন, ‘আমার বন্ধুকে বিদায় বলতে আমি কিউবায় যাব।

মাদকাসক্ত জীবন থেকে ফিরে আসার ক্ষেত্রে ফিদেল ক্যাস্ট্রো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন বলে জানান ম্যারাডোনা। নিজের মা-বাবার মৃত্যুর পর এটা তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের ঘটনা বলে জানান তিনি। ম্যারাডোনা বলেন, ‘ফিদেল ক্যাস্ট্রোর মৃত্যুর কথা যখন শুনি তখন অনেক কেঁদেছি। কারণ তিনি ছিলেন আমার দ্বিতীয় বাবা। আমি কিউবায় চার বছরের মতো ছিলাম। ওই সময় ফিদেল আমাকে রাত দুটায় ফোন করে বিশ্ব রাজনীতি ও খেলাধুলার বিভিন্ন প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করতেন। এবং আমি খুব আগ্রহ নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতাম।’

টিওয়াইসি স্পোর্টসের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে দিয়েগো ম্যারাডোনা স্মরণ করেন, ‘আর্জেন্টিনার হাসপাতালগুলো আমার জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল, ওদের ওখানে আমার মৃত্যু হোক, এই ঝুঁকি ওরা নিতেই চায়নি। সেই সময় কিউবার দরজা খুলে দিয়েছিলেন আমার জন্য।’ ম্যারাডোনাকে বাঁচানোর আশা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। ম্যারাডোনা নিজেও জীবনের আলো পথে যে হাঁটতে চাননি। মাদকের নেশায় জড়িয়ে নিজেকে খুনই করে ফেলেছিলেন প্রায়। ম্যারাডোনার জীবনের আশার দূত হয়ে এসেছিলেন ফিদেল কাস্ত্রো।

ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনা থেকে কিউবায় গিয়েছিলেন ২০০০ সালে। তখন তিনি অতি মাত্রায় মাদকাসক্ত এবং প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলেন। কীভাবে ফিদেল ক্যাস্ট্রো তাকে মাদক থেকে ফিরিয়ে আনেন সে কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ যে ফিদেল মাদকের ক্ষতিকর দিক নিয়ে, আমার ওপর এর প্রভাব নিয়ে কথা বলেছিলেন। মাদকের কারণে আমি কী কী খারাপ কাজ করে যাচ্ছিলাম সেগুলোর কথা তুলেছিলাম। আমি তার কথা শুনেছিলাম। ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমি পুনর্বাসিত হয়েছি। আমি আমার সবচেয়ে খারাপ সময়গুলো পার হয়ে এসেছি।’

সাবেক এই ফুটবল তারকা ফিদেল ক্যাস্ট্রোর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কিউবা যাচ্ছেন। কিউবার বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল ক্যাস্ট্রো ও কিউবার জনগণের পাশে এই শোকের মুহূর্তে থাকতে চান তিনি। কারণ তিনি মনে করেন, ‘কিউবার জনগণ আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে।’

কাস্ত্রো মুগ্ধ ছিলেন ম্যারাডোনার ফুটবলের, আর ম্যারাডোনা মোহাবিষ্ট হয়ে ছিলেন কাস্ত্রোর রাজনৈতিক দর্শনে। ২০০৫ সালে ম্যারাডোনার অনুষ্ঠানে এসে কাস্ত্রো জর্জ বুশ আর পুঁজিবাদী সমাজকে কষে গালও দিয়ে গিয়েছিলেন। চে’র পাশাপাশি কাস্ত্রোরও উল্কিও আঁকা আছে ম্যারাডোনার শরীরে। কাস্ত্রোকে আমৃত্যু মনেও ধারণ করবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।

সেই কাস্ত্রোর সমাধিপাশে দাঁড়াতে চান ম্যারাডোনা। এই সত্য উচ্চারণে- জীবনের ওপারে আবারও দেখা হবে। আবারও দুজন মিলে ধরাবেন হাভানা চুরুট। কে জানে, সেই আড্ডায় চে গুয়েভারাও থাকবেন হয়তো! সূত্র: টেলিসূর

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!