• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দ্বৈত নীতিতে বিএনপি


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ৬, ২০১৮, ০৭:০৬ পিএম
দ্বৈত নীতিতে বিএনপি

ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য শিগগিরই নতুন কর্মসূচি দিতে যাচ্ছে বিএনপি। পাশাপাশি নির্বাচনকালীন সরকারের একটি রূপরেখাও দেবে দলটি।

একদিকে দলের চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন। অপরদিকে নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচনের জন্য ভোট সরকারের রূপরেখা উপস্থাপনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেবে বিএনপি। এছাড়া নতুন আন্দোলন কর্মসূচিতে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদেরও যুক্ত করতে চান দলটির নীতিনির্ধারকেরা। এ জন্য দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, নির্বাচন এবং আন্দোলন কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের আলোচনার জন্য একটা প্যানেল ঠিক হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এ প্যানেল ঠিক করা হয়। প্যানেলে যুক্তফ্রন্টের পক্ষে আছেন- মাহমুদুর রহমান মান্না, আসম আব্দুর রব, মেজর (অব.) মান্নান। বিএনপির পক্ষে আছেন- মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

যুক্তফ্রন্ট’র একটি সূত্র জানায়, আগামী দু-একদিনের মধ্যে যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপির প্যানেল আলোচকদের মধ্যে বৈঠক হতে পারে। বৈঠকে আগামী সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জোটবদ্ধ আন্দোলন, কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রের ভাষ্য, আগামী নির্বাচন ছাড়াও নির্বাচন পরবর্তী কাজ নিয়েও আলোচনা হবে। এক্ষেত্রে বৈঠকে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসতে পারে।


এদিকে, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, সারাদেশে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে করণীয়সহ চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে বিশদ আলোচনা করেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে নীতিনির্ধারকদের এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়।

দলীয় সূত্র জানায়, সাত দফা দাবিতে দেশের সব বিভাগীয় শহরে ও গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোয় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। তবে সমাবেশের তারিখ নির্ধারণ করেনি দলটি। এছাড়া সংস্কারপন্থীরা বিএনপিতে ফিরতে চাইলে আপত্তি থাকবে না বলে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির নীতিনির্ধারকরা।

বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে শুরু হয়ে ওই বৈঠক রাত ৮টা পর্যন্ত চলে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেছি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। কমনওয়েলথ মহাসচিবের পাঠানো চিঠি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমনওয়েলথ মহাসচিবের চিঠি পেয়েছি। সে চিঠির আমরা জবাব দেব।

দলীয় সূত্র আরও জানায়, গত রবিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভা থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে সাত দফা দাবি এবং ১২ দফা লক্ষ্য ঘোষণা নিয়ে সারাদেশে সফর করতে চাইছেন নেতারা। এতে জনমত গঠন ছাড়াও নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখার কৌশল নেয়া হয়েছে। ১০ অক্টোবরের পর সমাবেশের মাধ্যমে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সব বিভাগীয় শহর ছাড়াও বড় জেলা শহরগুলোয় এই সমাবেশ হবে। শিগগিরই সমাবেশের তারিখ চূড়ান্ত করা হবে।

বৈঠকে সরকারের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলো নিয়ে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার বিষয়েও নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন নেতারা। এ বিষয়ে শিগগিরই ঐক্য ঘোষণার জন্য ঘোষণাপত্র তৈরির ওপর জোর দেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।

প্রসঙ্গত, গতকাল ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ‘কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এসময় তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে অপসারণ করা হবে।’   

মওদুদ আহমদ জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের কাছে পাঁচটি দাবি করেছে বিএনপি। সেগুলো হচ্ছে- নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। কারণ, তাদের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!