• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক ডিসেম্বর ২, ২০১৬, ০৫:২০ পিএম
ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে

আমন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় দেশে এবার আমনের আশাতীত ফলন হয়েছে। কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদফতরের হিসাবে, চলতি মৌসুমে দেশে ৫৫ লাখ ৫১৩ হেক্টর জমির ধান থেকে এক কোটি ৩৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। সরকারও প্রতি কেজি চাল ৩৩ টাকা দরে কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এবার কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন। নতুন গুটিস্বর্ণা ধান এবার প্রতি মণ ৭৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছরের এই সময়ে বিক্রি হয়েছে ৫০০-৫৭০ টাকা মণ দরে। বিগত দুই দশক ধরে ধান উৎপাদন লাভজনক না হওয়ায় চাষিরা ধান চাষ কমিয়ে দিচ্ছিলেন। তাই ধানের দাম বাড়ার খবর চাষিদের জন্য সুখবর বটে। তবে সিন্ডিকেটের কারসাজির কারণে পটুয়াখালীর ধানের বাজারগুলোতে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে আগাম জাতের অগ্রণী ও শাইল ধান মণপ্রতি কমেছে ১০০-১৫০ টাকা। স্থানীয় আড়তদারদের সিন্ডিকেট খেয়ালখুশিমতো চাপিয়ে দিচ্ছে এই দাম। তাই ব্যবসায়ী, মধ্যস্বত্বভোগী ও চালকল মালিকদের যোগসাজশে ধানের দাম আরো কমার আশঙ্কা করছেন প্রান্তিক চাষিরা। কর্র্তৃপক্ষকে এ সমস্যা নিরসনে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালকল মালিকদের মাধ্যমে ধানের মূল্য নির্ধারণ হওয়ার কথা জানিয়েছেন এক ব্যবসায়ী নেতা। মিলমালিকরা কৃষকের ধানের দাম নির্ধারণ করলে স্বভাবতই তারা অধিক মুনাফার জন্য কম দামে ধান কিনতে চাইবেন। অন্যদিকে কৃষকরা তাদের নিত্যদিনের চাহিদা মেটানোর জন্য কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। চাষিরা ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়াতে ক্রমাগত লোকসানে পড়ছেন। কিন্তু ধান থেকে প্রাপ্ত চাল আমাদের প্রধান খাদ্য। ফলে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য ধান চাষকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। আড়তদারদের সিন্ডিকেট ভেঙে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সরকার অথবা বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ফড়িয়াদের ধান ক্রয়ের দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় কৃষকের এই দাবির যৌক্তিকতা রয়েছে। ফলে কৃষকরা সরাসরি উপকৃত হবেন। কিন্তু সরকার চাল কিনছে মিলমালিকদের কাছ থেকে, যারা ধানের দাম নির্ধারণ করছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। দেশে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বলতে সাধারণত ধান-চাল উৎপাদনের স্বয়ংসম্পূর্ণতা বোঝায়। সরকারের তরফ থেকেও স্বয়ংসম্পূর্ণতার বিষয়টিকে এভাবেই ধরা হয়। কিন্তু ক্রমাগত লোকসান হলে কৃষকরা ধান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। এ কারণে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যচাহিদা মেটাতে সরকারকেও হিমশিম খেতে হবে।

আমরা আশা করি, ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সোনালীনিউজ/ঢাকা

 

Wordbridge School
Link copied!