• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ধার করতে হবে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা


নিজস্ব প্রতিবেদক জুন ৮, ২০১৮, ০৩:১৪ পিএম
ধার করতে হবে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা : নির্বাচনী হিসাবনিকাশ কষে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বড় অঙ্কের বাজেট দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অঙ্কের হিসাবে বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সংস্থাগুলোর নিজস্ব অর্থায়ন হিসাবে আনলে মোট বাজেটের আকার দাঁড়াবে ৪ লাখ ৭২ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা, যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ।  

অন্য বছরের মতো বাজেট অর্থায়নে বড় অঙ্কের টাকা ধার করতে হবে অর্থমন্ত্রীকে। জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত বাজেট থেকে দেখা গেছে, প্রায় চার ভাগের এক ভাগ টাকাই বিভিন্ন উৎস থেকে ধার-দেনা করতে হবে। বিভিন্ন উৎস থেকে ১ লাখ ২৫ হাজার ২২৯ কোটি টাকা ধারের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি দেখানো হয়েছে জিডিপির ৪ দশমিক ৯ শতাংশ।

জিডিপির ৫ শতাংশের কাছাকাছি ঘাটতি দিয়ে নিজের টানা দশম বাজেট ঘোষণা করলেন আবুল মাল আবদুল মুহিত। জিডিপি দিয়ে একটি দেশের অর্থনীতি পরিমাপ করা হয়। দেশের ভেতরে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে যে পরিমাণ পণ্য ও সেবা উৎপাদিত হয় তার মোট বাজার মূল্য হচ্ছে জিডিপি।  

ঘাটতি অর্থায়নে দুটি উৎস ব্যবহার করার কথা বলেছেন বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী। বৈদেশিক উৎস থেকে ধার করবেন ৫৪ হাজার ৬৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ২ দশমিক ১ শতাংশ। আর অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেবেন ৭১ হাজার ২২৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ২ দশমিক ৮ শতাংশ। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেবেন ৪২ হাজার ২৯ কোটি টাকা বা জিডিপির ১ দশমিক ৭ শতাংশ।

অর্থাৎ বড় উৎস ভাবা হচ্ছে ব্যাংক ব্যবস্থা। আর সঞ্চয়পত্র এবং ব্যাংক বহিভর্‚ত অন্য খাত থেকে ধার করবেন ২৯ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১ দশমিক ২ শতাংশ।

মুহিত মনে করছেন, বৈদেশিক সহায়তার যে বিশাল পাইপ লাইন গড়ে তোলা হয়েছে তা ব্যবহার করা গেলে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ধারের নির্ভরতা কমবে। আর সেই চেষ্টা বর্তমান সরকার তার বাকি মেয়াদে করে যাবে। আর ক্রমাগত বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে। চলতি অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। যা সংসদে উপস্থাপিত বাজেটের ৫ শতাংশ। তবে সংশোধিত বাজেটে তা কিছুটা কমিয়ে ১ লাখ ১২ হাজার ৪১ কোটি টাকা পুনর্নির্ধারণ করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের এই অর্থমন্ত্রী।

মূল বাজেটে বৈদেশিক উৎস থেকে ধারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত সেখানে বেশ কাটছাঁট করতে হয়েছে সংশোধিত বাজেটে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বৈদেশিক উৎস থেকে ধার করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৬ হাজার ২৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ মূল বাজেট থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা কমাতে হয়েছে সংশোধিত বাজেটে। তবে আগামী অর্থবছরে সংশোধিত বাজেট থেকে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি ধারের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।  

অপরদিকে, অভ্যন্তরীণ উৎস এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র ও অন্য উৎস থেকে সরকার ধার করার লক্ষ্য পুনর্নির্ধারণ করেছে ৪৬ হাজার ১শ কোটি টাকা। বাকি অর্থ আসবে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণ। চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের ধারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ২৮ হাজার ২০৩ কোটি টাকা। সে হিসেবে প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নতুন অর্থবছরে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা। ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের উচ্চ ঋণ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহে টানাটানি তৈরি করে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।  

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!