• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নতুন ইসি নিয়ে হতাশ খালেদা


নিজস্ব প্রতিবেদক ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৭, ১০:২৯ এএম
নতুন ইসি নিয়ে হতাশ খালেদা

ঢাকা : নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় সার্চ কমিটির কাজকর্ম নিয়ে হতাশার পাশাপাশি আশান্বিত হলেও নতুন নির্বাচন কমিশনের নাম ঘোষণার পর দৃশ‌্যত হতাশ হয়েছে বিএনপি। আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে আজ ২০ দলের সঙ্গে আলোচনায় বসবে দলটি।

সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেতারা এমনটিই মন্তব্য করেন।

এর আগে বুধবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের এক অনুষ্ঠানে বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠনে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত যে ছয় সদস্যের নাম শোনা যাচ্ছে, তা শুনে বিএনপি হতাশ ও ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পছন্দের লোক দিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করে জাতিকে আবারও হতাশা ও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।

এর পর রাতে ঘোষণা করা হয় নতুন নির্বাচন কমিশন হিসেবে নুরুল হুদার নাম। বিশেষ করে তাকে নিয়েই বেশি আপত্তি বিএনপির। এ সময় নেতারা বলেন, নতুন কমিশনে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। রকিব মার্কা আরেকটি কমিশন গঠন করা হয়েছে মনে করেন তারা।

বৈঠক সূত্র জানায়, নতুন ইসিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা নিয়ে দলের নেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। বেশিরভাগ সদস্যই সরাসরি প্রত্যাখ্যানের কথা বললেও কেউ কেউ এ ব্যাপারে কৌশলের আশ্রয় নিতে বলেন। পুরো কমিশনকে প্রত্যাখ্যান না করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে প্রত্যাখ্যান করার পক্ষে মত দেন তারা। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জোটের সঙ্গে বৈঠক করে তা চূড়ান্ত করা হবে।

সূত্র জানায়, বৈঠকে এক নেতা জানতে চান, কমিশনার পদে নিয়োগ পাওয়া মাহবুব তালুকদারের নাম বিএনপির পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে কি না। যদি না হয় তবে সার্চ কমিটিতে ২০ দলীয় জোটের সুপারিশকৃত নাম প্রকাশ করা উচিত। এতে সবাই জানবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের কোনো নামই সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেননি। সার্চ কমিটির সব আয়োজন যে আইওয়াশ তা স্পষ্ট হবে। এ সময় সিনিয়র এক নেতা বলেন, বিষয়টি নিয়ে জোটের নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এসময় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও কিছুটা সায় দেন।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, নতুন নির্বাচন কমিশনের দলীয় আনুগত্য ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত  হয়। বিশেষ করে নতুন সিইসি  কে এম নুরুল হুদার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে খোঁজ খবর নিতে বলা হয়। এ সময় এক নেতা বলেন, নুরুল হুদা জনতার মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তার নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি নিয়মিত উপস্থিত থাকেন। এ সময় খালেদা জিয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের দলীয় আনুগত্যের তথ্য প্রমাণ বের করার আহ্বান জানান।

বৈঠকে এক নেতা জানান, সরকার আগামী নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ চায় বলে মনে হচ্ছে না। ক্ষমতাসীনদের সেরকম ইচ্ছা থাকলে সার্চ কমিটি যে দশজনের নামের তালিকা দিয়েছে সেখান থেকেও দল নিরপেক্ষ লোক দিয়ে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করতে পারতো। ওই তালিকায় কয়েকজন যোগ্য এবং কম বিতর্কিত লোক ছিলেন।

এক নেতা নতুন নির্বাচন কমিশন ইস্যুতে আন্দোলনের পক্ষে মত দেন। ওই নেতা বলেন, এ ইস্যুতে জনমত তৈরি করতে পারলে সরকার চাপে থাকবে। ভবিষ্যতে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের দাবি আদায়ে তা কাজে লাগতে পারে।

সবার কথা শোনার পর খালেদা জিয়াও নতুন ইসি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। দলীয় লোকদের দিয়ে ইসি গঠন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে সিনিয়র নেতাদের জনমত তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার সঙ্গে মতবিনিময়ের পরামর্শ দেন তিনি।

খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে প্রায় দুই ঘন্টা চলা বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর উপস্থিত ছিলেন।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এমএইউ

Wordbridge School
Link copied!