• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নতুন নির্বাচন কমিশনকে যোগ্য ও দক্ষ হতে হবে


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ২৯, ২০১৬, ০৯:৪৯ এএম
নতুন নির্বাচন কমিশনকে যোগ্য ও দক্ষ হতে হবে

দেশে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে সবসময়ই এক ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি হয়। যখন যারা ক্ষমতায় থাকেন, ইসি নিয়ে তাদের মনোভাব থাকে একরকম, আবার ক্ষমতার বাইরে গেলে মনোভাব হয় অন্যরকম। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী, এ ধরনের কমিশন গঠনে একটি আইন করলেই বিষয়টির একটি স্থায়ী সুরাহা হয়ে যেত। 

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে বিএনপির আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এবং প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠেয় জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক রাজনীতির সুবাতাস বইবে এমনটি আশা করা যায়। কারণ দেশের বড় দুই রাজনৈতিক দলই এখন নির্বাচনমুখী। আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হোক, তা তিনি চান না। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৮ ফেব্র“য়ারি। সংবিধান অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করার দায়িত্ব রাষ্ট্রপতির। নির্বাচন কমিশন গঠনে নিজেদের প্রস্তাব নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার জন্য বিএনপি এরই মধ্যে সময় চেয়েছে। ইতিমধ্যে নতুন কমিশন গঠনে ১৩ দফা প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। যদিও বিএনপির এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সরকারি দল আওয়ামী লীগ বলেছে, সংবিধান মেনেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। 

সরকারের আইনমন্ত্রীও জানিয়েছেন আগের মতো সার্চ কমিটি করেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন নিয়োগ দেবেন। অপরদিকে সংবিধানসম্মতভাবে ও স্বচ্ছ পদ্ধতিতে একটি নিরপেক্ষ ও সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্র“প (ইডব্লিউজি)। তারা মনে করে, আইনি প্রক্রিয়ায় ইসি নিয়োগ না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এতে  দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হবে। একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থা এবং সার্বিকভাবে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর অংশীজনদের আস্থা থাকা অন্যতম পূর্বশর্ত। তাই নির্বাচন পরিচালনাকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্য সব দলের মতামত ও আস্থার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের কথা থাকলেও তা আজও হয়নি। 
নির্বাচন কমিশন নিয়োগে কোনো আইন না থাকায় গত ৪৪ বছরে বিভিন্নভাবে তাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এবং কমিশনের ভূমিকা নিয়ে বিতর্কও লেগে আছে। এ অবস্থার অবসান ঘটানো দরকার। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে বিতর্কের এ পর্যায়ে গত সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ’ শীর্ষক আলোচনাসভায় ইডব্লিউজির পক্ষ থেকে আইনি কাঠামোর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়। ইডব্লিউজির পক্ষ থেকে বলা হয়, যথাযথ আইনি কাঠামো ও এর সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যখন যথাযথ যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়, তখন তা শুধু নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নয়, বরং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি হিসেবেও কাজ করে। দুনিয়াজুড়ে অজস্র উদাহরণ রয়েছে, যেখানে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশনারদের সততা ও পেশাদারিত্বে ঘাটতির কারণে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব হয়নি। 

এই প্রেক্ষাপটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেয়া সমীচীন নয়। সে প্রেক্ষাপটে নতুন নির্বাচন কমিশনকে যোগ্য ও দক্ষ হতে হবে। একই সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো ও সাধারণ মানুষের আস্থাভাজন হতে হবে। তাই গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্থায়ী আইনি কাঠামোর অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠনই হবে উত্তম প্রচেষ্টা। 

সোনালীনিউজ/ঢাকা 
 

Wordbridge School
Link copied!