• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নন্দিত সানিয়া, নিন্দিত সানিয়া


ক্রীড়া ডেস্ক জানুয়ারি ২৯, ২০১৭, ০৯:৪৭ পিএম
নন্দিত সানিয়া, নিন্দিত সানিয়া

ঢাকা: ক্রিকেট-পাগল ভারতে টেনিসকে একটা নতুন পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছেন সানিয়া মির্জা। কিন্তু এই জনপ্রিয়তার দামও দিতে হয়েছে তাকে। কোটি কোটি মানুষের দেশ ভারতে তিনি বিপুল জনপ্রিয়। দেশটির ক্রীড়াজগতের সর্বোচ্চ সম্মান ‘রাজীব গান্ধী খেলরত্ন পুরস্কার’ও পেয়েছেন। অপরদিকে, এই টেনিস সেনসেশনকে নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্কও। বিশেষ করে প্রেম, বিয়ে, জাতীয় পতাকাকে অসম্মান ও তার ছোট পোশাক নিয়ে বিতর্ক তাকে বার বার পেছন থেকে টেনেছে।

সানিয়া মির্জাকে নিয়ে নানান জল্পনা চলে। টেনিস মহলে কান পাতলেই শোনা যায়, বিয়ের আগে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা শাহিদ কপূরের সঙ্গে ডেটিং করতেন। হায়দরবাদি এই কন্যা অবশ্য কথা না রাখার নজির গড়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়েছিল শোহরাব মির্জার।

হঠাৎই সানিয়া শোহরাবের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে দেন। এই খবরে আলোচনার ঝড় উঠেছিল। পরে পাকিস্তানের প্রাক্তন অধিনায়ক শোয়েব মালিককে বিয়ে করে বসেন। কাকপক্ষীর কাছেও খবর ছিল না সানিয়ার সঙ্গে প্রেম চলছে শোয়েবের। কিন্তু যেটা রহস্য, তা হল বিয়ের আগে সানিয়ার প্রেমিক ছিলেন কে?

শোনা যায়, সানিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল শাহিদ কপূরের। সানিয়া ও শাহিদকে বহু জায়গায় একসঙ্গে দেখাও গিয়েছে। দু’জনে হাত ধরাধরি করে হাঁটছেন, এমন দৃশ্যও অনেকে। সেই সময়ে মিডিয়া বহুবার প্রশ্ন করেছিল শাহিদকে। যতবারই  ভারতের টেনিস তারকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে শাহিদকে ততবারই তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়েছেন। প্রশ্নের জবাবে শাহিদকে কেবল বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘সানিয়া আমার খুব ভালো বন্ধু। আমার পছন্দের খেলোয়াড়ও বটে।’

কিন্তু খবরের ভেতরের খবর বলছে অন্য কথা। ‘কামিনে’ ছবিটি করার সময়ে সেটে বহুবার দেখা গিয়েছিল সানিয়াকে। সেই সময়ে দীর্ঘক্ষণ সেটে সময় খরচ করেছিলেন এই হায়দরাবাদি কন্যা। এখন অবশ্য সানিয়া নিজের সংসার নিয়ে ব্যস্ত। শাহিদ কপূরও তাই।

২০০৮ সালে মহম্মদ আশরাফ নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ, মহম্মদ সহরাবের সঙ্গে বাগদানের আগে সানিয়ার সঙ্গে নাকি তাঁর সম্পর্ক ছিল। ওই সময় হায়দরাবাদের বানজারা হিলসের বাড়িতেই থাকতেন সানিয়া। অভিযোগ, মহম্মদ আশরাফ নাকি সোহরাবের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার জন্য সানিয়াকে হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন। সিভিল ইঞ্জিনিয়রিং-এর ওই ছাত্র দাবি করেন, সানিয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই পুলিশ গ্রেপ্তার করে মহম্মদ আশরাফকে।

শোয়েব মালিকের সঙ্গে বিয়ের পর তেলেঙ্গানার ব্র্যান্ড অ্যামবাস্যাডার আর সানিয়াকে রাখা হবে কি না, তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক কে লক্ষ্মণ। যদিও, তেলাঙ্গানা সরকার বিজেপি বিধায়কের ওই দাবি খারিজ করে দেয়।

একই বছর হপম্যান কাপে তিনি নাকি ভারতীয পতাকার প্রতি অশ্রদ্ধা দেখিয়েছেন - সেই নিয়ে একটা ঝড় গেছে। সানিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলা হয়, টেনিস তারকা সানিয়া খেলার পোশাকের প্রচারণা চালাতে গিয়ে ভারতীয় পতাকার তিন রঙে আঁকা একটি গিটারের ওপর পা রেখে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলা করেন স্ট্যালিন নামের এক ভারতীয়।

সর্বশেষ হায়দরাবাদি টেনিস তারকা সম্প্রতি একটি নজরকাড়া লাল রঙের শাড়ি পরা ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। ব্যস, এরপরই দেশজুড়ে শুরু হয়ে যায় সমালোচনার ঝড়৷ চরমপন্থীদের জ্ঞানবিতরণ। ধর্মে অনুমোদিত পোশাক না পরে এ সব ‘খোলামেলা পোশাক’ পরার জন্য তাঁরা সানিয়ার পোস্টে বিরূপ সব মন্তব্য করতে শুরু করেন।

সাজিদ রশিদ নামে মুম্বাইয়ের এক আলেম একটি টিভি অনুষ্ঠানে সানিয়া মির্জাকে লক্ষ্য করে মন্তব্য করেন, যদি কোনো খেলায় নারীদের বোরখা খোলার প্রয়োজন পড়ে, তা হলে সেই খেলার কোনো প্রয়োজন নেই। বোরখা খুলে সানিয়ার খেলা করাটা কাম উত্তেজক ও অনৈসলামিক। তাই ওই ধরনের খেলায় মুসলিম মেয়েদের অংশ নেয়া উচিৎ নয়।

সব কিছু মিলিয়ে তাঁর নামে বিতর্ক শুরু হলেও, সানিয়া কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই একই রকমের জনপ্রিয়। তিনি মাঠে এলে যেমন দর্শকরা উৎসাহী হয়ে পড়েন, তেমনি কোনও অনুষ্ঠানে টেলিভিশনের পর্দায় এলে, সেই একই রকমের ভালো লাগা তৈরি হয় মানুষের মধ্যে।

মেলবোর্নে বিব্রত সানিয়া মির্জা

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআই

Wordbridge School
Link copied!