• ঢাকা
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

‘নব্য জেএমবির’ ২১ সদস্যের খোঁজে গোয়েন্দারা


বিশেষ প্রতিনিধি অক্টোবর ২৬, ২০১৬, ০৪:৪২ পিএম
‘নব্য জেএমবির’ ২১ সদস্যের খোঁজে গোয়েন্দারা

সাভারের আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে নিহত আবদুর রহমান ওরফে আবু ইব্রাহিম আল হানিফ ওরফে সারোয়ার জাহানের বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ল্যাপটপ ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রে পাওয়া ‘নব্য জেএমবি’র ২১ জঙ্গিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে র‌্যাব। 

সব যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ থাকায় ওই ২১ নব্য জেএমবি’র খোঁজে তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা হচ্ছে। 

গত ২০ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিল থেকে রাজশাহী গণপূর্ত অধিদফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী নাফিস আহমেদ নয়ন ও হাসিবুল হাসানকে প্রায় ২৮ লাখ টাকাসহ গ্রেফতার করে র‌্যাব। তারা নব্য জেএমবির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছ থেকে চমকপ্রদ তথ্য পেয়েছে র‌্যাব। 

সূত্র জানায়, নিহত নব্য জেএমবি’র প্রধান আবদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন নাফিস ও হাসিবুল। তারা মাঠ পর্যায়ে অর্থ সংগ্রহ করে সারোয়ার জাহানের কাছে সেই টাকা পাঠিয়ে দিতেন। আবদুর রহমান হুন্ডি ও মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত ছিলেন-এমন তথ্য পেয়েছেন র‌্যাবের তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) নাফিস ও হাসিবকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে হাজির করে র‌্যাব-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) উনুমং। শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহজাদী তাহমিদা তাদের সাত দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ছিল রিমান্ডের প্রথম দিন। ৮ অক্টোবর আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকার একটি ‘জঙ্গি আস্তানায়’ র‌্যাবের অভিযানের সময় পাঁচতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে নব্য জেএমবির প্রধান অর্থদাতা আবদুুর রহমান। পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

ওই জঙ্গি আস্তানায় তল্লাশি করে ৩০ লাখ টাকা, অস্ত্র, বিস্ফোরক, গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া যায়। সেই সব নথির সূত্র ধরে র‌্যাব নাফিস আহম্মেদ নয়ন ও হাসিবুল হাসানের তথ্য পায় র‌্যাব। এরপর তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হয়। ফলে গ্রেফতার হন জঙ্গি নাফিস ও হাসিব।

এদিকে আবদুর রহমানের স্ত্রী শাহনাজ আক্তার রুমিকে আসামি করে অস্ত্র আইন এবং সন্ত্রাসদমন ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করে র‌্যাব। তাদের তিন শিশু সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে তাহমিদ (৭) ও জাওয়াত (৫) রুমির মায়ের সঙ্গে এবং মেয়ে লাবণ্যকে (১১) আদালতের নির্দেশে গাজীপুরের সেফ হাউসে রাখা হয়েছে। 

মামলায় উল্লেখ করা হয়, রাজশাহীর বালিয়া পুকুর ছোট বটতলায় নাফিসের বাড়ি। তার বাবার নাম বাবা আব্দুল মান্নান। নাফিস তার স্ত্রী ও পাঁচ বছর বয়সী এক কন্যাসন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতেই থাকত।

র‌্যাব সূত্র জানায়, তারা দুজন নব্য জেএমবির তহবিলে অর্থ দিয়েছে। তারা যেসব অর্থ তহবিলে দিয়েছে তা তাদের নিজেদের কিনা। নাকি অন্য কারও কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে, তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তাদের অর্থের উৎস কি? তাও জানতে চাওয়া হবে। 

আবদুুর রহমানের সঙ্গে নাফিসের যোগাযোগের বিষয়টিও প্রাথমিকভাবে পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, নাফিস নব্য জেএমবির অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানে। 

এদিকে একই অভিযোগে রাজশাহী গণপূর্ত অধিদফতরের প্রকৌশলী হাসিবুল হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি গোপালগঞ্জের সদর উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামে। র‌্যাব জানিয়েছে, তারা দুজনেই নব্য জেএমবির অর্থের বিষয়ে আদ্যপান্ত জানে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাব ৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) উনুমং বলেন, সোমবার (২৩ অক্টোবর) তাদের রিমান্ডে আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান বলেন, গ্রেফতার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা এর আগে নথিপত্রে আরও ২১ নব্য জেএমবির তালিকা পেয়েছি। তবে তাদের নাম ঠিকানার উল্লেখ নেই। তবে যেসব নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এমনকি নব্য জেএমবির ২১ জনের সন্ধানে কাজ করছে র‌্যাব। 

তিনি আরও বলেন, আমরা জঙ্গিদের বিষয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। খুব শিগগিরই আরও ভালো তথ্য পাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!