• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নাঈম সম্পর্কে ভয়ঙ্কর তথ্য ফাঁস!


বিশেষ প্রতিনিধি মে ১৮, ২০১৭, ০৯:৫৫ পিএম
নাঈম সম্পর্কে ভয়ঙ্কর তথ্য ফাঁস!

ঢাকা: নাঈম আশরাফ ওরফে আবদুল হালিম। সাধারণ ফেরিওয়ালার ঘরে জন্ম নেয়া এইচএম হালিম ঢাকায় এসে নাম বদলে হয়েছে নাঈম আশরাফ। প্রকৃতপক্ষে সে একজন প্রতারক। স্কুলজীবন থেকেই এ কাজে তার হাতেখড়ি। জীবনে অসংখ্য মানুষকে বাবা সাজিয়ে নানা অপকর্ম করেছেন। বিয়ে করেছেন তিনটি। অসংখ্য নারীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন করেছেন।

শুধু নিজেই নারীদের অবাধে মেলামেশা করেছেন, তা নয়। নারীদের পণ্য হিসেবে ব্যবহার করেছেন। শুধু টাকার জন্য সুন্দরী তরুণীদের বিভিন্ন বিত্তশালীদের হাতে তুলে দিয়েছে ভোগের জন্য। এই নাঈম এরকম জঘন্য কাজ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে।

বনানীর ধর্ষণ ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত নাঈমের বিরুদ্ধে এরকম চাঞ্চল্যকর ও তার অন্ধকার জীবনের ভয়ঙ্কর সব তথ্য উঠে আসছে। যা শিউরে উঠার মতো। ডিবির কাছে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথাও স্বীকার করেছেন নাঈম ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাঈম তার বাবার নাম বদল করে বিয়ে করেছেন ৩টি। আগের ২ স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলেও তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার কালসি এলাকায় ভাড়াবাড়িতে চলছিল তার সংসার। প্রতারণা করে বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রীর বাপের বাড়ির লোকদের হাতে খেয়েছেন ধোলাই।

নাঈম আশরাফের কয়েক ঘনিষ্ঠজন জানিয়েছেন, ধর্ষণ ও প্রতারণার মতো এরকম অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে নাঈম আশরাফ। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম ইমেকার্সে কাজ করার সুবাধে সহজেই মডেল, অভিনেত্রী, উপস্থাপিকাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতো। কিন্তু কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। যে কারণে তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়নি।

নাঈম আশরাফের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এমন একজন মডেল জানিয়েছেন, একই কায়দায় মদ পান করিয়ে তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছিল নাঈম আশরাফ। ঘটনাটি ঘটেছিল গত বছরের ১০ মার্চ রাতে। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে সেদিন চলছিল ‘অরিজিৎ সিং সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা’ শিরোনামের কনসার্ট। ওই কনসার্টে ডেকে এনে গাড়িতে করে কাজের কথা বলেই তাকে বনানীর একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। প্রথমে যেতে না চাইলেও নাঈমের প্রতি বিশ্বাস থাকায় সেখানে গিয়েছিলেন।

নাঈম আশরাফের এক বন্ধু জানিয়েছেন, নাঈম আশরাফ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করেন এই সুবাধে তাদের সঙ্গে পরিচয়। তার অতীত সম্পর্কে কোনো ধারণা ছিল না তাদের। তবে এ ঘটনার পর তার সম্পর্কে অনেক তথ্য পেয়েছেন তারা। একইভাবে সাফাতের সাবেক স্ত্রী মডেল পিয়াসা বলেছেন, নাঈম আশরাফ একটা ভণ্ড, প্রতারক। সে অনেক মেয়ের সর্বনাশ করেছে। তদন্ত করলে এরকম আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।

ভালো পোশাক, পরিচ্ছন্ন চেহারার আড়ালে নাঈম আশরাফ একজন ধূর্ত প্রতারক। প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কৌশলে সম্পর্ক গড়ে ফায়দা হাসিল করে সে। নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকে বিভিন্নস্থানে। এমনকি সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে তার পোস্টার, ব্যানার রয়েছে ওই এলাকায়। সুযোগ পেলেই প্রতিষ্ঠিতদের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেসবুকে প্রচারণা চালায় এই প্রতারক।

হালিমের এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ইলেক্ট্রিক্যাল বিষয়ে ডিপ্লোমা পাস করার পর হালিম একুশে টিভিতে যান ইন্টার্নি করতে। এরপর সেখানেই ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনে তার চাকরি হয়। চেক জালিযাতি করার কারণে তার চাকরি চলে যায়। পরে মোহনা টিভিতে একই পদে চাকরি নেয়। সেখানেও একই কারণে সে চাকরিচ্যুত হয়। বর্তমানে সে গান বাংলা টিভির ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগে কর্মরত। ভাড়াটিয়া হিসাবে বসবাস করে ঢাকার কালসি এলাকার সাংবাদিক কলোনির পশ্চিম অংশে অবস্থিত এক্সটেনশন রূপপুরের ৪নং গলিতে ৫ তলা ভবনের তৃতীয় তলার পেছনের অংশের একটি ফ্ল্যাটে।

প্রতিবেশী ও স্থানীয় সীমান্ত বাজারের পানের দোকানি আবু সাঈদ জানান, হালিম জীবনে বহু মানুষকে নিজের বাবা বানিয়ে অকাম-কুকাম করেছে।

হালিমের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তালাবদ্ধ টিনশেড বসতঘর পাওয়া গেলেও তার বাবা-মাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। কথা হয় তার দিনমজুর ছোট চাচা আবুবক্কার সিদ্দিক ও চাচী মাহমুদা খাতুনের সঙ্গে। পত্রিকায় ছাপানো ছবি দেখে তারা নিশ্চিত করেন এটাই হালিম। নাঈম আশরাফ প্রসঙ্গে তারা কিছু জানেন না।

চাচী মাহমুদা খাতুন বলেন, বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে হালিম দীর্ঘ ৫ বছর বাড়িতে আসে না। কিছুদিন হলো সে তার বাবা-মাকে ঢাকায় নিয়ে গেছে। বাড়ির সঙ্গে তাদের কোনো যোগাযোগ নেই। বসতবাড়ি ও আবাদি জমি মিলে ১৭ শতক জায়গা আছে হালিমদের। আগে হালিমের বাবা ফেরি করে থালা-বাটি বিক্রি করতো। কৃষি শ্রমিক হিসাবেও মাঠে কাজ করেছেন।

অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, নাঈমের আসল নাম আব্দুল হালিম। সে আমজাদ হোসেনের পুত্র। সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর উপজেলার গান্দাইল গ্রামের বাসিন্দা আমজাদ একজন কৃষক ও তার মা সালেহা দিনমজুর।

২০০৪ সালে হালিম ঢাকায় আসার আগে তার ছোট ভাই নাঈম আশরাফের নাম ব্যবহার করতে শুরু করে। এসএসসি পাস হালিম ওরফে নাঈম আশরাফ বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে একটি মেয়েকে ভাগিয়ে আনে। বগুড়ার মেয়রের স্বজন হিসেবে মেয়েটির কাছে পরিচয় দেয় সে। এরপর তাকে ওই মেয়েটির স্বজনরা বেদম মারধর করে। তারপর নাইম আশরাফ ঢাকায় পালিয়ে এলেও আরো বড় পরিসরে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম শুরু করে। এলাকায় প্রশ্নপত্র ফাঁস ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকায় এলাকাবাসিরা তাকে একবার মারধর করে। 

এরপর সে বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করতে শুরু করে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আসা যাওয়া ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের উপরতলার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ গড়ে তোলে। টাকা, মদ ও মেয়ে সরবরাহে পটু নাইম আশরাফ এধরনের যোগাযোগ সৃষ্টিতে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।

ধর্ষক নাঈম আশরাফকে কলাবাগান ছাত্রলীগ ইউনিটে সক্রিয় হতে দেখা গেছে। এধরনের রাজনৈতিক পরিচয় সে বিভিন্ন অপকর্ম থেকে নিরাপদে থাকার উপায় হিসেবে ব্যবহার করত। 

ঢাকায় নাঈম আশরাফ রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, রাজনীতিক, মিডিয়া ব্যক্তি, খেলোয়াড়, মডেল, পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বড় ধরনের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এদের কাছে নাইম আশরাফ এক আস্থাবান ব্যক্তি। কোনো কোনো সময় সে নিজেকে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাজিপাড়া ইউনিটের প্রধান বলেও পরিচয় দেয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পুত্রের ঘনিষ্ট বন্ধু এমন পরিচয় সে ব্যবহার করে। 

মিরপুরে ইমেকার্স বাংলাদেশ নামে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক সিসা লাউঞ্জ, রেস্টুরেন্ট’ এর মালিক সে। ভারত থেকে শিল্পী অরিজিৎ সিং ও নেহা খাকারকে দেশে এনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নাঈম আশরাফ। আরেক ধর্ষক সাফাতের সাথে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও পারিবারিকভাবে সে ঘনিষ্ট। এক সঙ্গে পার্টি, বাসায় খাওয়া দাওয়া ও সামাজিক অনুষ্ঠানে আনাগোনায় তারা বেশ ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন ছবিতে এর পরিচয় ও প্রমাণ মেলে।

নাঈম আশরাফ নিজেও তার এই উত্থানের পেছনে সাফাতকে ‘কিং’ হিসেবে পরিচয় দিতে কোনো কার্পণ্য করতেন না। মিরপুরে ডিওএইচএস’ এ নিউজ৭১ডটকম নামে একটি অনলাইন নিউজ মিডিয়া খোলে নাঈম। এ অনলাইনে রিপোর্টারদের সে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মসহ বিভিন্ন ঘাপলা অনুসন্ধানের কাজে ব্যবহার করে অভিযুক্ত বা জড়িত ব্যক্তিদের ব্লাকমেইল করে মোটা অংকের টাকা আদায় করত।

এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম জানান, নাঈম আশরাফ বা হালিম কখনই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত ছিল না। এলাকায় নাঈম আশরাফের ছবি সম্বলিত একাধিক স্বেচ্ছাসেবক লীগের পোস্টার দেখা গেছে।

নিজের ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট ফার্ম ই-মেকার্সের মাধ্যমে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন মেয়েদের পটিয়ে অবৈধ কাজে বাধ্য করত নাঈম। একের পর এক নারীদের পটিয়ে বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে যেতেন। নামিদামি লোকদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেন। ঠিক একইভাবে মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদের সঙ্গে একাধিক মেয়েকে পরিচয় করে দিয়েছেন। 

বনানীর ধর্ষণ মামলা যখন দেশজুড়ে আলোচিত হচ্ছে, এসময় নাঈম আশরাফের সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করে বিভিন্ন মিডিয়া।

ঢাকার মিরপুরে তার ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট ফার্ম ই-মেকার্সের অফিস রয়েছে। ফার্মটির তিনি সিইও। এই ফার্মের মাধ্যমে ভারতীয় শিল্পী এনে বাংলাদেশে কনসার্টের আয়োজন করে থাকেন। অরিজিৎ সিংয়ের কনসার্টে অন্তত ৭৫ লাখ টাকা আয় করেছেন বলে জানিয়েছে তার এক বন্ধু। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বন্ধু বলেন, নাঈম মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে ওঠা-বসা করতো। সেই পরিচয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের নামে অঢেল টাকার মালিক হয়েছে সে। ওই টাকা দিয়ে নারী আর মদ ছাড়া কিছুই বুঝতো না।

ওই বন্ধু বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্রলীগের সঙ্গে ব্যাপক ওঠা-বসা তার। ঢাবির মহসিন হলের ২০২ নম্বর কক্ষে নিয়মিত রাত কাটায় সে। এমনকি সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছে এমন পরিচয় দিতো মেয়েদের। আর এভাবেই মেয়েদের পটাতেন।

নাঈমের এই বন্ধু বলেন, মূলত তার বাড়ি সিরাগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার গান্দাইল ইউনিয়নে। সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের ঘনিষ্ঠ পরিচিত। মাঝে মধ্যেই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে যান। কিছু দিন আগে জাতীয় চার নেতার নামে একটি প্রোগ্রাম করবেন সেজন্য প্রস্তাবনা জমা দিয়েছেন মন্ত্রীর কাছে। আর যে সংগঠন থেকে প্রোগ্রাম করবেন সেটিও ক্যাপ্টেন শহীদ মনসুর আলীর নামে করা সংগঠন।

ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম বলেন, নাইম এলাকায় দুই নম্বর ছেলে হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। সে নাকি সিরাজগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক কমিটির প্রধান হয়েছেন। পরে শুনতে পারি সে নাকি যুবলীগেরও সদস্য।

বনানী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন বলেন, তার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে একাধিক মেয়ের সর্বনাশের কথা জানা গেছে। পুরান ঢাকার এক ধনাঢ্য পরিবারের মেয়েকে ভাগিয়ে নিয়েছিল। এরপর ওই মেয়ে নিজেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে। তার সম্পর্কে একাধিক বিয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে

নাঈম আশরাফ এর আগে একুশে টেলিভিশনে কাজ করেছে বলে জানিয়েছে তারই এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এরপর আইটিতে পারদর্শী হন। আইটিতে পারদর্শী হওয়ার পর সে অন্তত চারটি টেলিভিশনের আইটি ডিপার্টমেন্টে কাজ করেছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে দেশ টিভি, গান বাংলা টিভি অন্যতম।

গত ২৮ মার্চ রাতে বনানী দি রেইন ট্রি হোটেলে দুই বন্ধু রাতভর ধর্ষণ করেন বেসরকারি এক বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে। ধর্ষণের সেই চিত্র মোবাইলে ভিডিও করেন আরো তিন বন্ধু। আবারও কোনো জায়গায় দৈহিকভাবে মিলিত না হলে ধর্ষণের সেই ভিডিও চিত্র নেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখানোয় ঘটনার ৪০ দিন পর বনানী থানায় মামলা করেন ওই দুই ছাত্রী।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি

Wordbridge School
Link copied!