• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বেকায়দায় ১১ ইসলামী দল


সোনালী বিশেষ জুলাই ১৯, ২০১৭, ০৫:১৬ পিএম
নারী প্রতিনিধিত্ব নিয়ে বেকায়দায় ১১ ইসলামী দল

ঢাকা : দলীয় নিবন্ধন শর্ত অনুযায়ি, একটি রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার বিধান রয়েছে। অথচ নিবন্ধিত ১১টি ইসলামী দলে নেতৃত্ব পর্যায়ে নারী সদস্য তো দূরের কথা, কোনো সাধারণ সদস্য হিসেবেও নেই নারী। তাই নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া নারী নেতৃত্ব সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি নিয়ে বেশ বেকায়দায় আছে দেশের নিবন্ধিত ইসলামী ও ধর্মভিত্তিক দলগুলো।

সর্বশেষ ২০০৮ সালে ৪০টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত হয়। এর মধ্যে ১১টিই ইসলামি দল। ইসির শর্ত অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে সব পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। শর্ত পূরণে তাদের হাতে সময় আছে মাত্র সাড়ে তিন বছর।

এ অবস্থায় ইসলামী দলগুলোর নেতারা বলছেন, বাস্তবতা বিবেচনায় তাদের আরও সময় দিতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী নেতৃত্বের বিকাশের প্রতি তাদের সমর্থন থাকলেও স্বল্প সময়ে ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব নিশ্চিত করার বিষয়টি ‘চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’ বলে মনে করছেন তারা।

অধিকাংশ দল গত নয় বছরে লক্ষ্যের অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি। এ অবস্থায় গত ১৩ জুন নিবন্ধিত ৪০টি দলের কাছে ‘নারী প্রতিনিধিত্ব অন্তর্ভুক্তির’ সর্বশেষ তথ্য চেয়ে তাগিদ দেয় ইসি। শর্ত পূরণে সবচেয়ে বিপাকে রয়েছে ধর্মভিত্তিক দলগুলো। এদের মধ্যে এমন দলও আছে যাদের কেন্দ্রীয় বা তৃণমূলের কোনো কমিটিতেই কোনো নারী সদস্য নেই।

ইসির দেওয়া চিঠির জবাবে খেলাফত মজলিস জানিয়েছে, তাদের কেন্দ্রীয় বা তৃণমূলের কোনো কমিটিতেই কোনো নারী সদস্য নেই। তবে কমিটিতে নারীদের আনার প্রতিশ্রুতি তারা পূরণ করতে চায়।

এ বিষয়ে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘কমিশনকে জানিয়েছি- আমরা প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এ সংগঠনে যেহেতু নারী প্রতিনিধিত্ব নেই; তাই আগামীতে সব কমিটিতে কীভাবে তাদের রাখা যায় এবং মহিলাদের জন্য আলাদা শাখা করার বিষয়ে পরবর্তী সেশনে আমরা আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।’

ইসলামী রাজনৈতিক সংগঠনগুলোতে নারী প্রতিনিধিত্ব ৩৩ শতাংশে নিয়ে যাওয়া ‘খুবই কঠিন’ বলে মন্তব্য করেন তিনি। আবদুল কাদের বলেন, ‘ধর্মীয় দলগুলোর জন্যে এ সমস্যাটা বেশি। বাস্তবে অনেক দলেরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলা সদস্য কমিটিতে নেই। বাস্তবতা বিবেচনা করে এ সময়সীমা বাড়ানো উচিত বলে আমরা মনে করি।’

বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমএল-এর মহাসচিব অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী বলেন, ‘ইসলামী দলগুলোর মধ্যে আমরাই সব থেকে এগিয়ে রয়েছি নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার ক্ষেত্রে। রাষ্ট্রপতির কাছে সংলাপে আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম ইসিতে একজন নারী সদস্য রাখতে। আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পাঁচজন নারী।’

একই বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেছেন, তার দলও ‘শিগগিরই’ ইসিতে প্রতিবেদন দেবে। তিনি বলেন, ‘কোনো দলেই তো এখনও ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নেই। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিরও নেই। আমাদের দেশ রক্ষণশীল। ইসলামী রাজনীতিতে এটা পূরণ করতে সময় লাগবে।’ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আসন্ন সংলাপে ২০২০ সালের এই লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানোর দাবি তোলা হবে বলে জানান তিনি।

এছাড়া বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ইসলামী দলগুলোর মধ্যে। ইসির চিঠি পাওয়ার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইতিমধ্যে দলের অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিয়ে জানিয়েছে, তাদের সব স্তরের কমিটিতে ১৫ শতাংশ নারী রয়েছেন।

বড় দুই দল বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এখনও ইসিতে প্রতিবেদন জমা দেয়নি। তবে সর্বশেষ কাউন্সিলের আগে বিএনপির কমিটিতে ১১ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং জাতীয় পার্টিতে ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব ছিল।

সোনালীনিউজ/জেডআরসি/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!