• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নারী-শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাজপথে শিল্পীরা


সাহিত্য-সংস্কৃতি প্রতিবেদক নভেম্বর ১, ২০১৬, ১০:৩৭ পিএম
নারী-শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে রাজপথে শিল্পীরা

ঢাকা: দিন দিন দেশে নারী-শিশুর ওপর নির্যাতন-সহিংসতা, নিপীড়ন বেড়েই চলেছে। সারাদেশে প্রতিদিনই চলছে এসব নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিন্দা-প্রতিবাদ-বিক্ষোভ সমাবেশ। তবুও থামছে না নির্যাতন। চলমান এসব নির্যাতন-সহিংসতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে এবার রাজপথে নেমেছেন চিত্রশিল্পীরা। 

মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনের সড়কে নারী-শিশুর ওপর ঘৃণ্য নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ‘বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন শিল্পীরা। 

চলমান নারী ও শিশু নির্যাতন এবং দেশের বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে’ প্রকারান্তরে ‘রুচির দুর্ভিক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করে চারুশিল্পীরা প্রতিজ্ঞা নিলেন, ‘দুর্ভিক্ষ রুখে সমাজে পরিবর্তন আনবো, দাঁড়াবো নারী ও শিশুর পাশে।’ 

একই সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনারও তীব্র নিন্দাও জানান শিল্পীরা।

সমাবেশে বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন, চারুকলা অনুষদের অধ্যাপক ড. ফরিদা জামান, শিশির ভট্টাচার্য্য, শিল্পী কনকচাঁপা চাকমা, চারুশিল্পী সংসদের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী, অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী বিপাশা হায়াত-সহ দেশের বিভিন্ন চারু ও কারু শিল্পীরা।

নিসার হোসেন বলেন, নারীর প্রতি চলমান এ সহিংসতাকে কতিপয় অমানুষের সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রাধিকারের বিষয়ে যখন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, তখন এ ধরণের ঘটনা ঘটছে। দেশে আইন আছে, কিন্তু আইনের প্রয়োগ নেই। তনু, মিতু হত্যায় পুলিশ বিচারকাজ নিয়ে রসিকতা করছে। মাসের পর মাস তনুর বাবা-মা বিচার চেয়ে যাচ্ছেন। আর সেই সুযোগে নরপিশাচরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে।

অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, আমাদের বিবেককে চালিত করার অন্যতম মাধ্যম হল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। সেই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ওয়াজে নারীর অধিকার-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কথা বলা হয়। এদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করা উচিত। এছাড়াও ধর্ষণ পরীক্ষা পদ্ধতিরও সমালোচনা করেন তিনি। তার মতে, এতে বিচার চাওয়ার হারও ‘কমে’ যায়।

শিশির ভট্টাচার্য বলেন, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় সামাজিক অবক্ষয় উত্তরোত্তর বাড়ছে। এই যে বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, আমার কাছে এ কেবলই ‘‘টু পাইস” কামানোর ধান্দা। এসব আমরা মানি না, এগুলো বন্ধ করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সেসব মামলার কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে হবে।

মনিরুজ্জামান বলেন, সমাজে এখন রুচির দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে। এই দুর্ভিক্ষ রোধ করে শিল্পীরাই মানুষকে রুচিশীল করে তুলবে।

বিপাশা হায়াত বলেন, আমি একজন মা হিসেবে বলছি, শিশুকে নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে আমাদের প্রথম কাজ। যে শিশুরা দেশের ভবিষ্যৎ, সেই শিশুদের ভবিষ্যৎ তো অঙ্কুরেই বিনষ্ট করে দেয়া হচ্ছে। তাদের চিন্তা-চেতনা বা ক্রিয়েটিভিটির জায়গা থাকছে কোথায়? আমি মনে করি, এসব নির্যাতনকারীদের এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিত, যেন তা দেখে আর কেউ এমন অপরাধ করতে না পারে।

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!