• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

নারীদের ঠিক কোন সময় আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়


লাইফস্টাইল ডেস্ক জানুয়ারি ৫, ২০১৮, ০৩:৪০ পিএম
নারীদের ঠিক কোন সময় আকাঙ্ক্ষা তীব্র হয়

ফাইল ছবি

ঢাকা: মেয়েদের জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে শারীরিক ও মানসিক নানা পরিবর্তন আসে। সাধারণত এই পরিবর্তন দুটি সময়ে প্রবল হয়ে ওঠে। এক বয়স বয়ঃসন্ধি কাল, দুই ঋতুনিবৃত্তিকাল। আর এই ঋতুনিবৃত্তি কালকে বলা হয় মেনোপজ। সাধারণভাবে প্রোঢ়ত্বের শেষে ৪৮ থেকে ৫২ বছর বয়সের মধ্যে মেনোপজ হয়।

এই বয়সে যদি সম্পূর্ণ এক বছর টানা পিরিয়ড বন্ধ থাকে তাহলেই তাকে বলা হবে মেনোপজ। আর এই পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে মানসিক অবসাদে ভোগে। অনেক সময় ছেলে, মেয়ে ও অন্যান্য অল্পবয়স্ক আত্মীয়স্বজন থেকে মানসিক দূরত্ব তৈরি করে ফেলেন এবং ক্লান্তি ও বিষাদে মন ভারাক্রান্ত করে ফেলেন। অথচ এই সময়কার পরিবর্তন জীবনের আর একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা ভেবে নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই বিগত যৌবনের জন্য আকাঙ্ক্ষা ও উদ্বেগ ভুলে যাওয়া সহজ হয়।

কি কি পরিবর্তন হয়?
পরিপূর্ণভাবে ঋতুনিবৃত্তি বা মেনোপজ হয়ে গেলে মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা থাকে না। এ সময় কিছু কিছু দৈহিক পরিবর্তন হয়, হাতে, পায়ে, ঘাড়ে, নিতম্ব ও থাইতে চর্বি জমার সম্ভাবনা থাকে, ওজনও বেড়ে যেতে পারে। কেউ কেউ আবার বেশি রোগা হয়ে যায়। 

কারও ত্বকের মসৃণতা কমে যায়, বলিরেখা পড়তে পারে। শরীরে কোথাও ব্যাথা অনুভূত হতে পারে। উদ্বেগ, রাগ ও শুচিবাই রোগ দেখা দিতে পারে। এই সকল উপসর্গে মানসিক দুর্বলতা আসে।

রক্ত চলাচলের ক্রিয়ায় পরিবর্তন হয়; তাই মাঝে মাঝে হঠাৎ করে গরম বা ঠান্ডার অনুভূতি হতে পারে। দিনে মধ্যে চার-পাঁচবার শরীর ঘেমে ওঠে, যাদের হাই ব্লাড প্রেসার ও ডায়াবেটিস আছে, তাদের এসব উপসর্গ বেশি হয়। এই সময় শরীরে হরমোন নিঃসরণের ক্রিয়ার বিশেষ পরিবর্তন হয়।

ওভারি শুকিয়ে ছোট হয়ে যায়, ডিম্বাণুও থাকে না, তাই স্বভাবতই ওভারি থেকে নিঃসৃত স্ত্রী হরমোনের পরিমাণ কমতে থাকে। ওভারির নিঃসৃত হরমোন হ্রাস পাওয়ার ফলে পিটুইটারি ও অ্যাডরেনাল গ্রন্থিসমূহের হরমোন বৃদ্ধি পায়, তাই কারো কারো মুখে বা চিবুকে চুলের মতো লোম দেখা দিতে পারে। এই সকল উপসর্গ কিন্তু সকলের হয় না।

এর চিকিৎসাও আছে!
অনেকেরই তেমন কোনো চিকিৎসা দরকার হয় না, তবে ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিতে হবে। শরীরের যত্ন, ত্বকের যত্ন, ব্যায়াম এই তিনটি ব্যাপার বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। সুষম আহার, কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা আর ঠিকঠাক ঘুম দরকার। নিয়মিত হেলথ চেক আপ জরুরি। 

যাদের খুব বেশি উপসর্গ থাকে, যেমন বার বার কান মাথা জ্বালা করছে, গাঁটে গাঁটে খুব ব্যথা বা একেবারে ঘুম হচ্ছে না, অসম্ভব টেনশন, সেই সকল ক্ষেত্রে এইচ-আর-টি বা হরমণ রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির দরকার হতে পারে অল্পদিনের জন্য। এছাড়া এই সময় স্ত্রীরোগ বিশেষঞ্জরা ত্বক, চুল ও শরীর ভাল রাখার জন্য কয়েকটি ওষুধ দিয়ে থাকেন।

আরো কয়েকটি তথ্য
মেনোপজ হঠাৎ একদিন হয় না প্রথমে হয়তো তিন মাস বন্ধের পর আবার একবার হল, তারপর আবার কিছুদিন বন্ধ থেকে একমাসে দু-বার পিরিয়ড হল, আবার বন্ধ এইভাবে ক্রমশ একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় যদি অত্যধিক ব্লিডিং হয় তাহলে বা তা না হলেও গাইনোকোলজিস্ট দেখিয়ে নেবেন। 

কারণ এই বয়সে মেনোপজ ছাড়াও জরায়ুর টিউমার বা অন্য অসুখ হতে পারে।কিছু কিছু নারীর ৪০-এর নীচে মেনোপজ হয়ে থাকে, এটাকে বলা হয় আরলি মেনোপজ।

আজকাল মেয়েদের ১০ বছর বয়সের আগেই পিরিয়ড হয়ে যায়, তার মানে কিন্তু এই নয় যে তাড়াতাড়ি মেনোপজ হয়ে যাবে, আবার এও বলা যায় না যে যাদের প্রথম পিরিয়ড শুরু হয়েছে দেরিতে, তাদের মেনোপজ আরো দেরিতে হবে। ডায়বেটিস থাকলে মেনোপজের দেরি হতে পারে। তবে মেনোপজের এর কারণে স্বাভাবিক শারীরিক মিলন বাধাপ্রাপ্ত হয় না।

অনেক সময় মেনোপজের সময় অনেক নারীদের শারিরীক চাহিদা বেড়ে যায়। আর অনেকের কমেও যায়। এখন আলট্রাসোনোগ্রামের মাধ্যমে মেনোপজের ডায়াগনসিস খুব সহজে করা যায়। এ সময় নারীদের নিয়মিত পার্লার ও জিমে যাবেন তা না হলে আত্মবিশ্বাস যাবে চলে। মনে রাখবেন মনের জোর ও সঠিক চিকিৎসায় মেনোপজের উপসর্গগুলি অতিক্রম করা যায় এবং নিশ্চিন্ত দাম্পত্যজীবন কাটানো যায়।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএ

Wordbridge School
Link copied!