• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নাসিক নির্বাচনে ‘রহস্যময়’ জামায়াত


মেহেদী হাসান ডিসেম্বর ১১, ২০১৬, ০৯:১০ পিএম
নাসিক নির্বাচনে ‘রহস্যময়’ জামায়াত

ঢাকা: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন নিয়ে পুরোপুরি নিশ্চুপ রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর আগের স্থানীয় সব নির্বাচনে দলটি সরব থাকলেও এবার কোথাও তাদের তৎপরতা নেই।

২০ দলীয় জোট সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় নগরীতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের দেখা মিলছে না। জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতের এমন নীরবতা নিয়ে নানা ধরনের কানাঘুষা চলছে ২০ দলীয় জোটে।

তবে রাজনীতিতে কিছুটা স্থিতিশীলতা আসার এই সময়ে নতুন করে সরকারের রোষানল থেকে বাঁচতে জামায়াতের নয়া নেতৃত্বের এটা কৌশল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। যদিও ভিন্নমতও আছে শরিকদের মধ্যে। জামায়াতঘেঁষা শরিক দলগুলোর নেতারা বলছেন, প্রকাশ্যে না থাকলেও তারা নীরবে জোটের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছেন।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২২ ডিসেম্বর নাসিক নির্বাচনে মোট ভোটার ৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন। এর মধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৩৯ হাজার ৬৬২ ও নারী দুই লাখ ৩৫ হাজার ২৬৯ জন। এর আগে ২০১১ সালের নির্বাচনে ভোটার ছিল চার লাখ চার হাজার ১৮৯ জন। এবারের তালিকায় নতুন যুক্ত হয়েছে ৭০ হাজার ৭৪২ জন। অর্থাৎ আগের তুলনায় ভোটারের হার বেড়ে প্রায় ১৫ শতাংশ।

দেশের অন্যান্য এলাকার মতো নারায়ণগঞ্জেও জামায়াতের বেশ কিছু ভোটার আছে। সংখ্যাটা ২০ হাজারের মতো হতে পারে বলে ধারণা রাজনৈতিক মহলের। সাধারণত কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জামায়াতের ভোটাররা ভোট দিয়ে থাকেন। সে কারণে মেয়র নির্বাচনে জামায়াত-শিবিরের ভোট একটা বড় বিষয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জ  সিটি নির্বাচনে পুরোপুরি ‘নির্বাচনী আমেজ’ বিরাজ করলেও দলটির কোনো তৎপরতা না থাকায় নানা কথা ছড়াচ্ছে।

অনেকেরই মত, ২০ দলের প্রার্থীর প্রতি সমর্থন থাকলেও ব্যক্তি ইমেজের কারণে জামায়াতের কিছু ভোট সেলিনা হায়াত আইভীর পক্ষে যেতে পারে।

সূত্রমতে, নাসিকের ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদেও কোনো প্রার্থী দেয়নি জামায়াত। প্রচার-প্রচারণা পুরোপুরি শুরু হলেও জামায়াত-শিবিরের কোনো নেতাকর্মীকে প্রকাশ্যে কর্মসূচিতে দেখা যাচ্ছে না। উল্লেখযোগ্য যে, গত সিটি নির্বাচনেও নারায়ণগঞ্জে কোনো পদে জামায়াতের প্রার্থী ছিল না। তবে নেতাকর্মীদের দেখা গেছে বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে।

এদিকে, গত ২৯ নভেম্বর জোটের শরিকদের সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বৈঠকে জামায়াতের পক্ষ থেকে নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে সাধ্যমতো কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু গত ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর নয়াপল্টনে সিটি নির্বাচন নিয়ে ২০ দলীয় জোটের মহাসচিবদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে কোনো প্রতিনিধি পাঠায়নি জামায়াত। এমনকি বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে ২০ দলের পক্ষ থেকে গঠিত টিমে কোনো নাম দেয়নি দলটি। জোটের পক্ষ থেকে তিনটি ‘নির্বাচনী টিম’ করলেও তাতে জামায়াতকে রাখা হয়নি। এ নিয়েও জোটের ভেতরে-বাইরে নানা কথাবার্তা শুরু হয়েছে।

বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে জামায়াতের নেতাকর্মীদের প্রচারণায় অংশ না নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখনো জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের প্রার্থীদের পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় নামেনি। তবে আমরা আশা করছি, দুএক দিনের মধ্যে তারা মাঠে নামবেন। কারণ আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জোটের শরিক একটি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বলেন, নারায়ণগঞ্জ নিয়ে জামায়াতের রহস্যজনক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে। অন্য সময় নির্বাচনে প্রার্থী দিয়ে বিএনপিকে ডিস্টার্ব করার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু এবার প্রার্থীও দেয়নি। আবার কোনো ধরনের কাজও করছে না। হতে পারে জামায়াতের নতুন নেতৃত্ব, নতুন করে সরকারের কোনো ধরনের চাপে পড়তে চাইছে না। 

সোনালীনিউজ/এমএন

Wordbridge School
Link copied!