• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্ক টাইমসে বাংলাদেশের খুন-গুমের সমালোচনা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক জুলাই ৩০, ২০১৭, ০২:৩৩ পিএম
নিউইয়র্ক টাইমসে বাংলাদেশের খুন-গুমের সমালোচনা

ঢাকা: বাংলাদেশে বিরোধী নেতাকর্মীদের অব্যাহত গুম-খুন নিয়ে সম্পাদকীয় প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। এতে গুম-খুনের বিষয়টি অস্বীকার করায় সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে।

ঢাকা ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৮ জুলাই) প্রকাশিত ওই সম্পাদকীয়তে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত আট বছরে বাংলাদেশে ৩২০ জনের বেশি মানুষ নিখোঁজ বা অবৈধভাবে আটকের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে গত বছর ৯০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। নিখোঁজদের মধ্যে ২১ জনকে হত্যা করা হয়।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাড়তে থাকা গুমের ঘটনা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু বাস্তবে গুমের সংখ্যা আরও বেড়েছে বলে সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়।

শেখ হাসিনা সরকার এ ধরনের অভিযোগের জবাবে অভিযোগকারীদের নিন্দা জানায়। যখন সন্ত্রাসবাদ রুখতে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর আস্থা থাকাটা খুব জরুরি তখন এই ধরনের নিন্দা আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশি আইনের প্রতি পরিহাস ছাড়া আর কিছুই না।

সাদা পোশাকের গোয়েন্দা বা র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যদের পরিচয়ে বাড়ি থেকে বা রাস্তা থেকে এসব ব্যক্তিদের তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এদের মধ্যে অধিকাংশই বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া রয়েছেন সন্দেহভাজন আসামি বা ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, গত এক বছরে নিখোঁজ হওয়াদের তালিকায় রয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী মীর আহমেদ বিন কাসেম। তাকে গত আগস্ট মাসে তার নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় তার স্ত্রী, বোন এবং দুই ছোট মেয়ে ঘটনাটি দেখেছেন। তবে কারা তাকে তুলে নিয়ে গেছেন তা তারা শনাক্ত করতে পারেননি। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন কাসেম।

সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, চলতি মাসে যখন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিখোঁজের বিষয়ে একটি সুশৃঙ্খল নথিভুক্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে, তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, এই সংগঠনটি আমাদের বিরুদ্ধে একটি নেতিবাচক অভিযান শুরু করেছে।

তিনি ওই সময় প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনি কাকে নিখোঁজ বলছেন।

গুমের শিকার হওয়া পরিবারগুলো বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিখোঁজদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তার কোনো সদুত্তর পায় না এমনকি আদালত থেকেও তাদের পক্ষে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না।

গুমের শিকার এসব মানুষের উদ্বিগ্ন প্রিয়জনদের অপমান করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অনেক ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা পাওনাদারের দাবি না মেটাতে পেরে আত্মগোপনে চলে যান। আবার অনেকেই পরকীয়া সম্পর্ক করে নিখোঁজ হয়ে যায়।

সম্পাদকীয়তে বলা হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন তাচ্ছিল্যের সঙ্গে উড়িয়ে দেন। একই সঙ্গে তিনি এই মিথ্যা দাবি করেন যে জাতিসংঘ একই রকম উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।

সম্পাদকীয়তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি চ্যালেঞ্জ করে বলা হয়, যদি আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জাতিসংঘের প্রতি শ্রদ্ধা রাখেন তাহলে তার সরকারের উচিৎ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জাইদ রাদ আল হোসাইনকে দিয়ে বিষয়টি স্বাধীনভাবে তদন্তের আমন্ত্রণ জানানো।

সোনালীনিউজ/ঢাকা/এইচএআর

Wordbridge School
Link copied!