• ঢাকা
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

নিজেরাই বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়তে পারে: শঙ্কা আ.লীগের


নিজস্ব প্রতিবেদক নভেম্বর ১২, ২০১৭, ০৯:২৮ এএম
নিজেরাই বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়তে পারে: শঙ্কা আ.লীগের

ঢাকা : দীর্ঘ ১৯ মাস পর রাজধানী ঢাকায় প্রকাশ্যে কোনো সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। আজ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশ করবে দলটি। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

৭ নভেম্বরের ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে আজ বেলা ২টায় সমাবেশ শুরু হবে। বিএনপি আজকে সমাবেশের আড়ালে মহাসমাবেশ করবে বলে জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা। আর এই সমাবেশকে ঘিরে গতকাল বিকেল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় শুরু হয় সাজ সাজ রব।

বিএনপির পক্ষ থেকে আগেই দাবি করা হয়েছে, তাদের এই সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগের দাবি, সমাবেশে নিজেদের মাঝে বিশৃঙ্খলার আশংকা করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, বিএনপির সমাবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগ চিন্তিত নয়। তবে দলটির অতীত রের্কড ভালো কোন কিছু বলে না। নিজেদের কর্মসূচিতে তারা নিজেরা নিজেরাই বিশৃঙ্খলায় জড়িয়ে পড়ে। কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ হলে ভবিষ্যতেও সরকারের তরফ থেকে সহায়তা পাবে। কিন্তু কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা হলে তা কঠোর হাতে দমন করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কারণ সভা-সমাবেশ পালন করার অনুমতি পুলিশ দেয়, সরকার না।

এদিকে সমাবেশে জামায়াতে ইসলাম ও শরিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে কি না এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান মির্জা আব্বাস। তিনি বলেন, এটি বিএনপির সমাবেশ। এখানে অন্য কিছুর প্রাধান্য নেই। এছাড়া বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেন, তার দল গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বিশ্বাসী। তারই ধারাবাহিকতায় জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসে সমাবেশ করতে চায়। বিএনপির সমাবেশ মানে জনগণের উচ্ছ্বাস। জনগণ স্বতঃস্ফ‚র্ত হয়ে এতে অংশ নেয়। তাই কয়েক লাখের জমায়েত হওয়াটাই স্বাভাবিক।

জানা গেছে, সমাবেশে বড় গণজমায়েতের জন্য কেন্দ্র থেকে ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে খালেদা জিয়া ঢাকা মহানগর বিএনপি, অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। সমাবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকার কেউ বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে সরকার তাদের প্রতি নমনীয় হচ্ছে কিনা- এমন প্রশ্নে কাদের বলেছেন, এটা কোনো নমনীয়তার ব্যাপার না। বিএনপি সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে, অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে কোনো বাধাতো কখনো ছিল না। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, অনুমতি নিয়ে এযাবৎ তাদের এমন একটি জনসভাও হয়নি, যেখানে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।

এ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, এই বিশৃঙ্খলাগুলোকে ভয় পাই বলেই আমরা এই বিষয়টা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। আমরা অনুমতি সব সময় দিতে চাই। তারা একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল, তাদের অবশ্যই সভা সমাবেশ করার অধিকার রয়েছে। শেখ হাসিনা সরকার কতটা গণতান্ত্রিক, এই  অনুমতি দিয়ে আবারো প্রমাণিত হল। তিনি বলেন, বিএনপি নিজেদের অনুষ্ঠানে নিজেরাই মারামারি করে বলে তাদের সমাবেশের অনুমতি দিতে পুলিশও ভয় পায়।

এছাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ একই প্রসঙ্গে বলেন, বিএনপি বিভিন্ন ইস্যুতে মিথ্যাচার করছে, ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনকে বিএনপি যাতে বাধাগ্রস্ত, বিতর্কিত করতে না পারে সে বিষয়ে দল (আওয়ামী লীগ) এবং জনগণ সচেতন আছে।

প্রসঙ্গত, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে মাত্র বছর খানেক বাকি। সময় যত ঘনিয়ে আসছে, নিজেদের গুছিয়ে নিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সবাই তৎপর হয়ে উঠছেন। জেলায় জেলায় গিয়ে কর্মী সংগ্রহ, ত্রাণ বিতরণের নামে রাজনৈতিক শোডাউন, সভা, সমাবেশসহ সংবাদ সম্মেলনে ব্যতিব্যস্ত সবাই। যদিও এক্ষেত্রে বিএনপির চাইতে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে।

বাংলাদেশের মূলত প্রধান রাজনৈতিক এ দল দুটি এই মাসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নিজেদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করবে। বিএনপি আজ রোববার (১২ নভেম্বর) এবং আওয়ামী লীগ (১৮ নভেম্বর) তারিখে সভা করবে। বিএনপির সভা বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উপলক্ষে। এ জন্য তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাছ থেকে অনুমতিও পেয়েছে।

এদিকে, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগ সভা করবে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে।

সোনালীনিউজ/এমটিআই

Wordbridge School
Link copied!